চার বছর আগে চীনের প্রেসিডেন্টের সফরে ২৪ বিলিয়ন ডলারের ঋণের সমঝোতা স্মারক সই হয় বাংলাদেশের সঙ্গে। যার মধ্যে ৬টি প্রকল্পে ঋণ দেয়া শুরু হলেও বাকিগুলো এখনও দেখেনি আলোর মুখ। এমন বাস্তবতায় ২৬টি প্রকল্পে ১৮ বিলিয়ন ডলার চেয়েছে সরকার যার মধ্যে ৯টিই নতুন প্রকল্প। সহজ শর্তে সরকারি ঋণ বা জিসিএল আর প্রেফারেন্সিয়াল বার্য়াস ক্রেডিট বা পিসিবি আওতায় চাওয়া হয়েছে এসব অর্থ।
বাংলাদেশ ও চীনের বিনিয়োগ সহযোগিতা ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠক হয়েছে গত ডিসেম্বরে। যেখানে ২৬টি প্রকল্পের ১৭টিতেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঋণ চাওয়া হয়েছিল।
সেগুলো হলো- পিজিসিবির গ্রিড নেটওয়ার্ক (৯৭ কোটি ডলার), ঢাকা আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে )১১৫ কোটি ৫২ লাখ ডলার), ডিজিটাল কানেক্টিভিটি (৮৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার), পাটকল আধুনিকায়ন ও পুনর্বাসন (২৮ কোটি ডলার), চীনের অর্থনৈতিক অঞ্চল (২২ কোটি ১২ লাখ ডলার),
জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডাবল লাইন (১০৮ কোটি ৫৬ লাখ ডলার), রাজশাহী ওয়াসা পানি শোধনাগার (২৭ কোটি ৬৩ ডলার), বিটিভি স্টেশন স্থাপন (১২কোটি ৫১ লাখ ডলার), আখাউড়া-সিলেট ডুয়েলগেজ রেলপথ (১২৭ কোটি ২৯ লাখ ডলার), মোংলা বন্দর সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন (৩৫ কোটি ৩৫ লাখ ডলার), ৫০ লাখ ইলেকট্রিক মিটার সংগ্রহ (৪৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার),
জয়েদবপুল-ময়মনসিংহ-জামালপুর ডাবল লাইন (৫৮ কোটি ১৩ লাখ ডলার), সীতাকুণ্ড কক্সবাজার মেরিনড্রাইভ এক্সপ্রেসওয়ে (২৮৫ কোটি ডলার), গাজীপুর ধীরাশ্রম আইডিসি (২০ কোটি ডলার), ওভারলোড ট্রান্সফরমার (২৩ কোটি ডলার), গ্রামাঞ্চলে আইসিটি আধুনিকায়ন (৫০ কোটি ডলার), পৌরসভা সুরায়েজ ব্যবস্থা উন্নয়ন (১৫ কোটি ডলার)।
নতুন প্রকল্প মধ্যে রয়েছে-
শেখ হাসিনা হাইটেক পার্ক ১৫ কোটি ৫৪ লাখ ডলার
- দারেশকান্দি সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন ১২ কোটি ২ লাখ ডলার
- ডিপিডিসি বিদ্যুৎ বিতরন ব্যবস্থা শক্তিশালি ও সম্প্রসারন ৮০ কোটি ৫৪ লাখ ডলার
- তিস্তা নদী সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ৮৫ কোটি ৩১ ডলার
- ২৫ কোটি ডলারে ৬টি জাহাজ কেনা হবে
- বরিশাল পটুয়াখালি কুয়াকাটা সড়ক চার লেন ৫৩ কোটি ৫৯ লাখ ডলার
- বরিশাল ভোলা সেতু নির্মাণ ১২২ কোটি ৫৯ লাখ ডলার
- পায়রা বন্দর অবকাঠামো নির্মাণ ১৬৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার
- হাইটেক সেতু নির্মান ৮০ কোটি ডলার।
চারটি প্রকল্প বাদ দেয়ারও অনুরোধ করা হয় চিঠিতে। এগুলোর মধ্যে ঢাকা-সিলেট চার লেন নির্মাণ ও বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পটি রয়েছে।
চীনের ঋণে ২ শতাংশ সুদহার ছাড়াও, দশমিক ২০ শতাংশ কমিটমেন্ট চার্জ ও দশমিক ২০ শতাংশ ম্যানেজমেন্ট চার্জ গুণতে হবে বাংলাদেশকে। পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ যা পরিশোধ করতে হবে ২০ বছরে। আগের প্রকল্পের অর্থ ছাড় না হতেই, নতুন ঋণ চাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদদের মতে, জাইকা কিংবা এডিবির মতো বিকল্প থাকতে, একক দেশ থেকে এ পরিমাণ ঋণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা দরকার।