ঢাকা শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
প্রতিবন্ধী সেজে সরকারী চাকরী
  • হাজী জাহিদ, নরসিংদী
  • ২০২৩-০১-১৪ ০৪:০৮:১৬
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় চর আড়ালিয়া ইউনিয়নে প্রতিবন্ধী না হয়েও করেছেন প্রতিবন্ধী কার্ড এবং অংশ গ্রহন করেছেন পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের আওতায় পরিবার কল্যাণ সহকারি পদে একটি সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায়। সম্প্রতি রায়পুরা উপজেলার চর আড়ালিয়া ইউনিয়নে পরিবার কল্যাণ সহকারি পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার এমন অভিযোগ উঠে মর্জিনা আক্তার নামে এক নারীর বিরুদ্ধে। মর্জিনা আক্তার চর আড়ালিয়া ইউনিয়নের বাঘাইকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হুমায়ুন কবির এর স্ত্রী। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, মর্জিনা আক্তারের সরকারি চাকরি করার বয়স শেষ হয়ে গেছে বিধায় নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য টাকার বিনিময়ে এক চিকিৎসকের কাছ থেকে শ্রবন প্রতিবন্ধীর ভূয়া রিপোর্ট তৈরি করে এবং ইউনিয়ন সমাজসেবা কর্মচারী মর্জিনা আক্তারের আত্মীয় হয় যার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী কার্ড করেন। কিন্তু সত্যিকার অর্থে সে কোনো প্রতিবন্ধী নয়, একজন সুস্থ্য সবল মানুষ। উক্ত প্রতিবন্ধী কার্ডকে কাজে লাগিয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া ইউনিয়ন পর্যায়ে পরিবার কল্যাণ সহকারি পদে নিয়োগ পরীক্ষায় মর্জিনা আক্তার অংশ গ্রহন করে এবং উর্ত্তীন হয়। উক্ত প্রতিবন্ধীর বিষয়ে দৈনিক বিজয় বাংলাদেশ পত্রিকার নরসিংদী প্রতিনিধি আকাশ রহমান জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ গত ২০/১১/২০২২ইং দায়ের করেছেন এবং তাকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয় ৩ কার্যদিবসের মাধ্যমে সরজমিনে গিয়ে উক্ত সমস্যার সমাধান দেওয়া হবে কিন্তু আজকে ২ মাস হয়ে গেছে। এখনোও কোন সমাধান দেওয়া হয়নি। উক্ত অভিযোগের সমাধান না করেই মর্জিনা আক্তারকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। এছাড়াও লিখিত অভিযোগে আকাশ রহমান বলেন, মর্জিনা আক্তার সুস্থ আছেন। উনি কানে শুনতে পান এবং উনার ভিডিও ফুটেজ আছে। মর্জিনা আক্তার সঠিক প্রতিবন্ধী কিনা সে বিষয়ে পুনরায় ডাক্তারের মাধ্যমে যাচাই করার দাবি জানানো হয়। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আকাশ রহমান নিজে বিষয়টি জানতে রায়পুরা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে এ বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে তাকে কোন তথ্য দেওয়া হবে না বলে সেখান থেকে জানানো হয়। মর্জিনা আক্তার নামে কোন প্রতিবন্ধী আছে কিনা এই বিষয়টিও সমাজসেবা কর্মকর্তা বলতে চাই না। এ বিষয়ে মর্জিনা আক্তারের স্বামীর বাঘাইকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হুমায়ুন কবির’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,ডাক্তারি পরীক্ষা নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই’র পর আমার স্ত্রী প্রতিবন্ধী কার্ড প্রাপ্ত হয়। এখানে কোন মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া হয়নি। চ্যালেঞ্জের মুখে তা পূনরায় যাচাই বাছাই হলেও আমি ১০০ ভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারি তার প্রতিবন্ধী বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণিত হবে না। চর আড়ালিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হায়দার আলী বলেন, আমার জানামতে হুমায়ুন মাস্টারের স্ত্রী কানে শুনতে পায় তবে তিনি প্রতিবন্ধী কিনা তা আমি জানিনা।” রায়পুরা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা খলিলুর রহমান খলিল বলেন, “কেউ প্রতিবন্ধী কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সার্টিফিকেট দেয় ডাক্তার। আমরা ওই সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে প্রতিবন্ধী কার্ড দিয়ে থাকি এর বাইরে নয়।” এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই বাচাই করার জন্য রায়পুরা তুলাতুলি হাসপাতালে পাঠানো হয়। এই বিষয়ে রায়পুরা হাসপাতালের কর্মকর্তা ডাঃ নুরুল খান মোঃ জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা যাচাই বাচাই করে যতটুকু বুঝতে পারলাম, মর্জিনা আক্তার প্রতিবন্ধী সেঁজে আছেন। আমাদের মনে হচ্ছে উনি প্রতিবন্ধী নয়, তাই আমরা এটা ভালো ভাবে পরীক্ষা করার জন্য সিভিল সার্জন অফিসে পাঠিয়ে দিব। নরসিংদী জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক অরবিন্দ দত্ত বলেন যেহেতু ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এবং সিভিল সার্জন এর উপস্থিতিতে মর্জিনাকে প্রতিবন্ধী বাছাই করা হয়েছে সেক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ করার কোন সুযোগ নেই। নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডাঃ নুরুল ইসলাম জানান, আমার জানামতে মর্জিনা আক্তার একজন শ্রবণপ্রতিবন্ধী। তবে এমন কোন কিছুতেই যদি প্রমাণিত হয় যে সে শ্রবণ প্রতিবন্ধী নয়, প্রতিবন্ধী সাজার নাটক করে ডাক্তারের মাধ্যমে ভূয়া রিপোর্ট তৈরি করিয়ে প্রতিবন্ধী কার্ড নিয়ে থাকে তাহলে তার ও ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দৈনিক বিজয় বাংলাদেশ এর নরসিংদী প্রতিনিধি আকাশ রহমান বলেন, তার দায়ের করা অভিযোগটি সত্য, তাই দ্রুত সঠিক সমাধান করে, মর্জিনা আক্তারের নিয়োগ স্থগিত করা হয়।
শ্রমিকদের ধর্মঘটে অচল আশুগঞ্জ নদী বন্দর
ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে  একজনের মৃত্যু
ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ভারতকে সকল সুবিধা দিত হাসিনা:  আলতাফ হোসেন চৌধুরী