সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া বলেছেন,‘ব্যক্তি, পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতাই পারে নারীদের প্রসবজনিত রোগ ফিস্টুলা নিয়ন্ত্রণ করতে। চিকিৎসা নিলে ফিস্টুলা রোগী সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে যায়। তার শরীর থেকে কোনো ধরনের দুর্গন্ধ বের হয় না। আবার সন্তান ধারণ করতে পারে।’
আজ বৃহস্পতিবার (২৯-ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের সম্মেলন কক্ষে ইউএনএফপিএ ও সিআইপিআরবি উদ্যোগে প্রসবজনিত ফিস্টুলা সনাক্তকরণ ও প্রতিরোধে সচেতনামূলক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শীঘ্রই সিলেট ওসমানী হাসপাতালের ফিস্টুলা সেন্টারটি আরও শক্তিশালী করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন,‘ ফিস্টুলা রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। ফিস্টুলা রোগীদের সচেতন করে চিকিৎসার আওতায় আনা দরকার। প্রসবকালে অসচেতনতাই এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণ।’
ফিস্টুলা হওয়ার কারণ ও প্রতিরোধে করণীয় বিভিন্ন দিক তুলে মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, ফিস্টুলা প্রতিরোধে বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ, কিশোরী বয়সে ঘন ঘন সন্তান জন্মদান থেকে বিরত থাকা, নিয়মিত প্রসবপূর্ব ও প্রসব পরবর্তী সেবা গ্রহণ করা। জরুরি প্রসূতি সেবা নিশ্চিত করা, মিডওয়াইফের মাধ্যমে বাড়িতে নিরাপদ প্রসব নিশ্চিত করা, বিলম্বিত ও বাঁধাগ্রস্থ প্রসব রোধ করা, সন্তান প্রসবের সময় নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র অথবা হাসপাতালে গিয়ে সেবা গ্রহণ করা। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর অধিকার নিশ্চিত করা এবং প্রসবজনিত ফিস্টুলা প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধ করার ব্যাপারে আলোচনা হয়।
স্বাস্থ্য সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মোহাম্মদ নূরে আলম শামীম’র সভাপতিত্বে সভায় রিসোর্স পারসন হিসেবে ছিলেন- বিভাগীয় পরিচালক (পরিবার পরিকল্পনা) ও যুগ্ম সচিব মো. কুতুব উদ্দিন, ইউএনএফপিএ’র টেকনিকেল অফিসার ডা. অনিমেষ বিশ্বাস। মেডিকেল অফিসার ডা. ভাস্কর ভট্টাচার্য্য’র পরিচালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রহিম, সিলেট মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহিনা আক্তার, সিলেটের উপপরিচালক (পরিবার পরিকল্পনা) ডা. লুৎফুন্নাহার জেসমিন, সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত, সুনামগঞ্জে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. সুকদেব সাহা, ইউএনএফপিএ’র ফিল্ড অফিসার ডা. নূর-ই আলম সিদ্দিকী, কুলাউড়ার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আক্তার, হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. একেএম কামরুজ্জামান, ছাতক উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চৌধুরী রাজীব মোস্তফা, করিমপুর চা বাগানের মেডিকেল অফিসার ডা. মইনুল ইসলাম, সিআইপিআরবি’র আরসিএইচ বিভাগের টিম লিডার ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মো. আলতাফুর রহমান, জেলা সমন্বয়কারী শারমিনা পারভিন, রিনা আক্তার প্রমুখ। রোগীদের পুনর্বাসন সহায়তার অংশ হিসেবে প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠানে একটি সেলাই মেশিন মিনারা বেগম নামে একজন ইনকিউরেবল ফিস্টুলা রোগীকে দেওয়া হয়েছে। সিলেট বিভাগের সিভিল সার্জন ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের জেলা পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ, গণমাধ্যমকর্মী, ডানকান চা বাগান কোম্পানীর প্রতিনিধিসহ উপকারভোগীরা।