১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকায় সমাবেশকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কয়েকদিন ধরেই আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়কসহ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অব্যাহত রেখেছে। এদিকে, সমাবেশে যোগদান করতে কৌশল অবলম্বন করছেন বিএনপি। বিএনপি নেতাকর্মীদের একটাই কথা যতই বাধা আসুক না কেন সমাবেশ সফল করতে তারা সমাবেশে যোগদান করবে।
তবে, গত (২৭ নভেম্বর) রাতে বিএনপি ও ছাত্রদলের মশাল মিছিল থেকে মোটরসাইকেলে আগুন, ককটেল বিস্ফোরণ ও আহত করার অভিযোগ এনে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট মাহফুজুর রহমান হুমায়ুনসহ ৩৮ জনকে নামীয় এবং ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ছাত্রলীগ কর্মী রাশিদুল প্রধান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে আইনশৃংখলা বাহিনীর সারাশি অভিযানে গত এক সপ্তাহে প্রায় ২৫ জন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারের পর থেকেই বাড়িঘর ছেড়ে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তারা বিভিন্ন স্থানে গোপনে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা করছেন। সেই সভায় সকলকে সর্বোচ্চ নেতাকর্মী নিয়ে সমাবেশে যোগদানের প্রস্তুতিও নিয়েছেন বলে দাবি বিএনপি নেতাকর্মীদের।
অপর দিকে, আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় রয়েছেন কঠোর অবস্থানের। বিশেষ করে উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা, গোলাকান্দাইল, আধুরিয়া, বরপা, বিশ^রোড, এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়কের মায়ারবাড়ি, জিন্দা, রূপগঞ্জ, পুর্বাচল ৩০০ ফুট সড়ক, মুড়াপাড়া, দাউদপুরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্পট গুলোতে প্রতিদিন বিএনপির নৈরাজ্যে ঠেকাতে বিক্ষোভ মিছিল ও সভা করে যাচ্ছেন। কিছু কিছু স্পটে ক্যাম্পও করেছেন।
বৃহস্পতিবার (০৮ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, স্থানীয় সংসদ সদস্য, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতিক) এর নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিএনপির নৈরাজ্যে ঠেকাতে বিক্ষোভ মিছিল করতে দেখা গেছে। এছাড়াও আওয়ামীলীগ নেতা আনসর আলী, যুবলীগ নেতা কামরুল হাসান তুহিন, ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হাসান সবুজসহ বিভিন্ন নেতার নেতৃত্বে বিভিন্ন স্পটে মিছিল করতে দেখা গেছে। নৈরাজ্যে ও অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিহত করতে নেতাকর্মীদের সব সময় প্রস্তুত থাকার নির্দেশও দেয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।
এ ব্যপারে রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুল হাসান তুহিন বলেন, বিএনপি জামাতের নৈরাজ্যে ও অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিহত করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। কেউ যদি নৈরাজ্যে ও অগ্নিসন্ত্রাস করতে আসে তাহলে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবেনা। জানমাল রক্ষায় আমরা সব সময় প্রস্তুত রয়েছি।
এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট মাহফুজুর রহমান হুমায়ুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, গায়েবী মামলা দিয়ে বিএনপিকে দমাতে পারবেনা। এক ছাত্রলীগ কর্মীর দেয়া মিথ্যা মামলায় প্রায় ২৫জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের জন্য তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। এ জন্যই আমরা নতুন কৌশল অবলম্বন করেছি। ইতি মধ্যে আমাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় ঢুকে গেছে। আমরা এখন বিএনপির পক্ষ থেকে কেন্দ্রের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছি। নির্দেশনা এলেই সমাবেশ সফল করতে হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে যোগদান করবো।
এ ব্যপারে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সাহেদ বলেন, কেউ যদি সাধারন মানুষের জানমালের ক্ষতি করতে চায় তা আমরা হতে দেবোনা। নিয়মিত মামলায় আমাদের গ্রেপ্তার অভিযান চলছে।