ঢাকা শনিবার, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪
বিএনপির ১৬৭৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার ৭
  • নাজমুল হোসেন, সিরাজগঞ্জ
  • ২০২২-১২-০১ ১০:৩৭:০৭
সিরাজগঞ্জের ১১ থানায় আ’লীগের পৃথক পৃথক মামলায় বিএনপির ১৬৭৪ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এরমধ্যে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৪ জন নেতা-কর্মীর নাম। এসকল মামলায় ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন বিএনপি’র ৭ জন নেতা-কর্মী। বিশেষ করে এসকল মামলায় পুলিশের গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছেন বিএনপির অজ্ঞাত আসামীরা। সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের ভাষ্যমতে জানাযায়, এসব মামলা দায়ের করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা। রায়গঞ্জ থানার ওসি আসিফ মোহাম্মাদ সিদ্দিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাতে ধানগড়ায় রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা জুয়েল আকন্দ বাদী হয়ে রাতেই ২০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৫০ জন অজ্ঞাতনামা বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। তাড়াশ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাতে উপজেলার তালম ইউনিয়নের চার মাথা আকবর আলী বাজারে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোজ্জামেল হক মজনু বাদী হয়ে রাতেই ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ ১২০ জন অজ্ঞাতনামা বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। রাতেই অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। সলঙ্গা থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাতে সলঙ্গার আঙ্গারু বাজারে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে রাতেই মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিএনপির ১৮জন নেতার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭০ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। উল্লাপাড়া থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাতে উপজেলার পূর্ণিমাগাতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা ও মোটরসাইকেল ভাংচুর এবং হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রউফ বাদী হয়ে রাতেই মামলা করেন। মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ ৮০ জন অজ্ঞাতনামা বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এনায়েতপুর থানার ওসি আনিছুর রহমান জানান,মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে কেজির মোড়ে তাদের উপর হামলা ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় রাতেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আফাজ উদ্দিন ব্যাপারী বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৪০ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। বেলকুচি থানার ওসি তাজমিরুল রহমান জানান, রোববার রাতে সাংগঠনিক কার্যক্রম শেষে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার আদাচাকি এলাকায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উপরে হামলা হয়। এ ঘটনায় সোমবার পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ আহম্মেদ উৎস বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০০ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। চৌহালী থানার ওসি হারুন অর রশিদ জানান,২৫ নভেম্বর রাতে উপজেলার দত্তকান্দি বাজারে বিএনপি নেতা-কর্মীরা সভা করছিল। সেখানে সরকার বিরোধী বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মারপিট, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুক বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১২০ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপির ১জন কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কাজিপুর থানার ওসি শ্যামল কুমার দত্ত জানান,সোমবার রাতে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা- কর্মীদের উপরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আব্দুর রশিদ বিলু বাদী হয়ে মঙ্গলবার থানায় মামলা করেন। মামলায় ১০ জনের নাম উল্লেখসহ ২০০ জন অজ্ঞাতনামা বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপির একজন কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শাহজাদপুর থানার (ওসি)নজরুল ইসলাম মৃধা জানান,২২ নভেম্বর রাতে শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাংচুর এবং হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় ২৩ জনের নাম উল্লেখসহ ২০০ জন অজ্ঞাতনামা বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জ থানার ওসি (অপারেশন)সুমন কুমার দাস জানান,২২ নভেম্বর রাতে সদরের কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পাইকপাড়া আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে হামলা,ভাংচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। উল্লেখিত ওয়ার্ডের সভাপতি জাকির হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫০ জন অজ্ঞাতনামা বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়াও কামারখন্দ থানার ওসি নুরনবী প্রধান জানান,১৮ নভেম্বর দুপুরে বিএনপি নেতারা সমাবেশ শেষে ফেরার পথে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কামারখন্দ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম রেজা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। মামলায় ২৬ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫০ জন অজ্ঞাতনামা বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুইজন বিএনপি নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, আগামী ৩ ডিসেম্বর বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য আওয়ামী লীগ গায়েবী মামলা করে পুলিশ দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে। তবে মামলা দেখে আর বিএনপি ভয় পায়না। এবার সকল ভয়ভীতি উপেক্ষা করে রাজপথেই ফয়সালা করবে। এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে গ্রেপ্তারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।
 গণহত্যা-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কাউকে বিএনপিতে নেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল
২৯ ডিসেম্বর লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
রাজনৈতিক দলগুলো ৫৩ বছরেও সংস্কার করতে পারেনি: রিজওয়ানা