দিনাজপুরে নিজ সন্তানকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা মামলায় মায়ের যাবত জীবন কারাদণ্ড
- সুলতান মাহমুদ, দিনাজপুর
-
২০২২-১২-০১ ১০:৩২:৪৭
- Print
দিনাজপুর পার্বতীপুরে নিজের সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে মা সাদিয়া আক্তার আশাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আরোও দশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১(এক) মাসের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দিনাজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. যাবিদ হোসেন এ আদেশ দেন। এসময় অভিযুক্ত ওই মা আদালতের কাঠগোড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
দিনাজপুর পাবলিক প্রসিকিউশন পিপি অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম রবি এর আয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন। দীর্ঘ দিন সাক্ষী প্রমান ও আসামের স্বীকারোক্তিতেই এ মামলারায় ঘোষণা করা হয়েছে রাষ্ট্র পক্ষ এ রায় সন্তুষ্ট প্রকাশ করছি।
দন্ডপ্রাপ্ত ওই নারীর নাম সাদিয়া আক্তার আশা(২৯)। তিনি পার্বতীপুর উপজেলার হরিরামপুর গ্রামের এরশাদ আলীর স্ত্রী।
মামলার এজাহারসূত্রে জানা যায়, এরশাদ আলী ও সাদিয়া আক্তার দম্পতির একমাত্র কন্যা সন্তান মাইমুনা আক্তার(৬)। এরশাদ আলী আনছার ব্যাটালিয়নে কর্মরত আছেন। একমাত্র সন্তান মাইমুনা আক্তারকে(৬) নিয়ে স্ত্রী সাদিয়া আক্তার দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলায় হরিরামপুর ভাটিপাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘসময় পারিবারিক কলহ ছিল। ২০১৭ সালের ৬ জুলাই তারিখে আয়েশা আক্তার তার শ্বাশুড়ীসহ রাতের খাওয়া শেষ করে সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের কোন এক সময় সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন এবং ব্লেড দিয়ে নিজের হাত ও পায়ের রগ কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। রাত সাড়ে তিনটার সময় সাদিয়া আক্তারের শ্বাশুড়ী সেহরী খাওয়ার জন্য ঘুম হতে উঠেন। এসময় তিনি সাদিয়া আক্তারের আলো জ্বালানো দেখতে পান। পরে তাঁকে ডাকতে শুরু করেন। কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে পরিবারের অন্যান্যরা দরজা ভেঙ্গে সাদিয়াকে মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় এবং মেয়ে মাইমুনাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় পরের দিন নিহত মাইমুনার চাচা ইব্রাহীম আলী বাদি হয়ে পার্বতীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরে সাদিয়াকে পার্বতীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সুস্থ হবার পরে পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেন সাদিয়া আক্তার। দীর্ঘসময় ধরে চলা মামলাটি সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালত বৃহস্পতিবার এরায় ঘোষনা করেছেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান বলেন এই মামলা রায় সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্র পক্ষ। তাই আমার মক্কেল ন্যায় বিচার পাইনি আমরা উচ্চ আদালতে অবশ্যই আপিল করব। সেখানে গেলে অবশ্যই আমরা ন্যায় বিচার পাবো।