করোনার ভুয়া সনদের অভিযোগে রিজেন্ট ও জেকেজির পর এবার ঢাকার গুলশানের সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়েছে র্যাব। এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া সনদ দেওয়াসহ নানা অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার পর র্যাব হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়। তবে, রোগী থাকার কারণে রাতে হাসপাতালটি সিলগালা করেনি।
রোববার (১৯ জুলাই) বিকেলে সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাব। হাসপাতালটির সহকারী পরিচালক ডা. আবুল হাসনাতকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
রাতে অভিযান শেষে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক আশিক বিল্লাহ বলেন, হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমাদের অভিযান রাত ১১টার দিকে শেষ হয়েছে। এখন মামলার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত গোছানো হচ্ছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তা সিলগালা করবেন। হাসপাতালটিতে যে সব রোগী আছেন, তারা অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। তারা চলে যাওয়ার পর সিলগালা করে দেওয়া হবে।
কখন সিলগালা করা হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোগী সরিয়ে নেওয়ার পর সিলগালা করে দেওয়া হবে।
অভিযানের সময় র্যাব হাসপাতালটির সহকারী পরিচালক আবুল হাসনাতের পাশাপাশি স্টোর কিপার শাহরিজ কবিরকে ধরে র্যাব-১ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। হাসপাতালটির বিরুদ্ধে ৯ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে জানান র্যাবের পরিচালক।
র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাস পরীক্ষায় সরকার কর্তৃক র্যাপিড টেস্টের অনুমোদন না থাকলেও তারা সেটা করেছে। পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া প্রতিবেদন দিয়েছে, করোনাভাইরাস নেগেটিভ রোগীকে পজিটিভ দেখিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ভিন্ন ল্যাব থেকে কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষা করিয়ে নিজেদের প্যাডে প্রতিবেদন দিয়েছে।
হাসপাতালটির লাইসেন্স এক বছর আগে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তা নবায়ন করা হয়নি। এছাড়া হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষে ১০ বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ সার্জিক্যাল সামগ্রী-ওষুধ পাওয়ার কথাও জানিয়েছে র্যাব।
সাহাবুদ্দিন এক সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ-সভাপতি ছিলেন। তবে ২০১৯ সালে তিনি পদত্যাগ করে বিএনপি ছাড়েন।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আবুল হাসনাত আটকের সময় সাংবাদিকদের বলেন, যারা প্লাজমা দিচ্ছেন, শুধু তাদের নিয়ে কাজ করেছিলেন তারা। আর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের র্যাপিড টেস্ট কিট তারা নিজেরাই এনে পরীক্ষামূলক ব্যবহার করছিলেন।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, তারা অন্য ল্যাব থেকে নমুনা পরীক্ষা করিয়ে এনে রেজাল্ট তাদের নিজেদের প্যাডে ছাপাতেন, যা আইন বহির্ভূত। এছাড়াও রয়েছে আরও অনেক অভিযোগ। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হচ্ছে।