ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
রাস্তার পাশে বিক্রি হচ্ছে শীতের পিঠা; স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ
  • মাহতাবুর রহমান, আমতলী, বরগুনা
  • ২০২২-১১-০৮ ১০:০৪:৫৩

বরগুনার আমতলী উপজেলায় শীত মৌসুমের শুরুতেই পিঠা ব্যবসায়ীদের পিঠা বিক্রির ধুম পরেছে। উপজেলার বিভিন্ন লোকালয়ে চলছে পিঠা বিক্রির ধুম। এ ব্যবসায় অনেকেই ভাল আয় করছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানায়। এ ব্যবসায় তেমন বেশি পুঁজি লাগেনা। জ্বালানী হিসেবে শুকনো কাঠ  বা খড়ি, পিঠা তৈরীর উপাদান হিসেবে প্রয়োজন গুঁড়, নারিকেল ও চালের গুঁড়া দিয়ে শুরু করা হয় এ ব্যবসা।

আমতলী পৌরসভার বিভিন্ন মোড়ে শীত মৌসুমে জমজমাট ভাপা, চটা ও চিতই পিঠার ব্যবসা। ক্রেতাদের সংখ্যা চোখে পরার মত। এ ব্যবসা চলে বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। পিঠা বিক্রি জমে উঠে সন্ধ্যার পর থেকে। সন্ধ্যার পরে দোকানে ক্রেতাদের ভিড় থাকে অনেক বেশি। চিতই ও চটা পিঠার সাথে খেতে দেয়া হয় ধনিয়া পাতা, মরিচ, সরষে, শুঁটকি ভর্তা। এসব পিঠার এক একটির দাম নেয়া হয় ৫ থেকে ১০টাকা। পিঠা তৈরীর বেশির ভাগ দোকানের ব্যবসায়ী মহিলা। পাশাপাশি পুরুষরাও তৈরি করে এ পিঠা। পিঠা বিক্রেতা নুরজাহান বেগম জানান, প্রত্যেক বছর মোরা পিডা বানাইয়া বেচি। শীত যত বাড়ে মোগো পিডা ও বেচাকেনা বেশি হয়। বিয়াল (বিকাল) হইতে মোরা রাইত (রাত) ১০ টা তামাইত (পর্যন্ত) ১৫০০ টাহার (টাকা) মোতো পিডা (পিঠা) বেচি।

পিঠা খেতে আসা মেহেদী হাসান জানান, শীতের সময় ভাপা ও চিতই পিঠা খাওয়ার মজাই অন্যরকম। গরম গরম ভাপা পিঠা দেখলে লোভ সামলানো দায়, তাইতো খেতেই হবে অন্তত একটি ভাপা পিঠা। কর্মব্যস্ততার কারণে বাসায় পিঠা তৈরি করে খাওয়া অধিকাংশ সময়ই সম্ভব হয় না। ফলে রাস্তার পাশের দোকান থেকে কিনে খেতে হয়। তবে পিঠা যারা তৈরি করেন তারা যেন ধুলা বালি থেকে রক্ষা করে স্বাস্থ সম্মতভাবে পিঠা তৈরি করেন।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুনায়েম সাদ বলেন, ইকোলাই নামে একটা ব্যাকটেরিয়া আছে, ইকোলাই ব্যাকটেরিয়াটি খোলা খাবার এ থাকে। মানুষ খোলা খাবার খেলে এই ইকোলাই ব্যাকটেরিয়াটি মানুষের পেটে চলে যাবে এবং এ থেকে ডায়রিয়া হতে পারে। এ কারনে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব হতে পারে। শুধু পিঠা নয়, যে খাবারগুলো রাস্তার পাশে খোলা অবস্থায় বিক্রি করা হয় সেগুলো না খাওয়াই ভালো। সকল ধরনের খোলা খাবারেই ইকোলাই ভাইরাসটি থাকে এবং তা থেকে বিভিন্ন ধরনের অসুখ ছড়িয়ে পরতে পারে। এ বিষয়গুলো আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, আমতলী পৌরসভা ও উপজেলা স্যানেটারি অফিসাররা নিয়মিত দেখভাল করেন।

উপজেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর কবির বলেন আমরা মাঝে মাঝে পরিদর্শন করি। হাইডোস দিলে শীতের পিঠা বেশি ফোলে যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তাই আমরা এগুলো নিষেধ করি। বিশুদ্ধ খাবার পানি যদি টয়লেটের কাছাকাছি থাকে তবে তা অনিরাপদ হয়ে যায়, তাই স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাবার বিক্রি করার পরামর্শ দেই। রাস্তার পাশে যে প্লেটে খাবার দেয়া হয় তাতে ধুলো বালি পড়ে, অনেকে একজনের খাবার প্লেট না ধুয়ে অন্যজনকে দেন এটা সবচেয়ে খারাপ দিক ও অনিরাপদ এবং এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ে। যাতে মানুষ রাস্তার পাশের খোলা খাবার না খায় এ ব্যাপারে মানুষকে উৎসাহিত করি। রাস্তার পাশে যারা খোলা খাবার বিক্রি করে এরা মূলত নিম্ন আয়ের গরিব মানুষ তাই আমরা বিভিন্ন সময়ে জোরালো পদক্ষেপ নিতে গিয়েও কঠিন পদক্ষেপ নিতে পারি না তবে সামনের দিকে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা থাকায় আমরা এই বিষয়টাকে জোরালো ভাবে দেখবো।

বন্যা পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যা করা উচিত
টাঙ্গাইলে বুরো হাসপাতালের শুভ সূচনা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিনামূল্যে ৩০০ জন দুস্থ রোগীর চক্ষু ছানি অপারেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন