সম্মেলনের দিন বিশৃঙ্খলা; কে হচ্ছে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি/ সম্পাদক?
- আমতলী, বরগুনা প্রতিনিধিঃ
-
২০২২-১১-০৫ ০৮:১০:১৯
- Print
গত ৩০অক্টোবর বরগুনার আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে । এখনো ঘোষনা আসেনি সভাপতি /সম্পাদকের নাম। সম্মেলনের দিন কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনেই উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারনে ইতিমধ্যে কয়েকজন চিহ্নিত হয়েছে মর্মে খবর পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে যারা এই বিশৃঙ্খলার সাথে জরিত তাদের বড় কোন দায়িত্বে রাখা হবে না। স্থানীয় আওয়ামীলীগের একাধিক সূত্র বলছে সম্মেলনকে বিতর্কিত করতে এবং বর্তমান আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমানকে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে অপদস্থ করতে পূর্ব থেকেই এই হামলার পরিকল্পনা করা হয়। সূত্র বলছে পরিকল্পনার সাথে যুক্ত ছিলেন আমতলী উপজেলা পরিষদের বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকার এবং সম্মেলনের দিন হামলাকারীরা অধিকাংশই পটুয়াখালী জেলার ছাত্রদলের নেতাকর্মী। উপজেলা আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা বলেন সম্মেলনের দিন সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান মাইকে অনেক বার সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ করলেও তারা নিভৃত হয় নি।
চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বাদল খানের উসকানিমূলক বক্তব্যের সূত্রধরে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে পরে। এমনকি সাংবাদিকদেরও লাঞ্চিত করা হয়। পরবর্তীতে বরগুনা ১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনেই সংঘর্ষে জড়ান আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। সংঘর্ষে দুই গ্রুপের প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। কেন্দ্রীয় নেতারাও তাদের নিভৃত করতে না পেরে সমাবেশ স্থল ত্যাগ করেন। কিছুক্ষণ বিরতির পর বিকেলে আবারও ২য় সেশনে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন ইউনিয়নের সভাপতি / সম্পাদকদের নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ কাদের মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান, ইউনিয়নের বিভিন্ন চেয়ারম্যানগন সহ কয়েক হাজার কাউন্সিলর, ডেলিগেটর ও নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। তারা সর্বসম্মত কন্ঠে হাত উঠিয়ে এডভোকেট এম এ কাদের মিয়াকে সভাপতি ও মেয়র মতিয়ার রহমানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের দাবী জানান। সভা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সকল নেতাকর্মী সভায় উপস্থিত ছিলেন। সেই সভাতেই বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান বলেন, আমি দীর্ঘ ৯ বছর দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছি। প্রতিটি ওয়ার্ডের কর্মী থেকে শুরু করে আওয়ামীলীগের সকল পর্যায়ের নেতাদের ভালোবাসা পেয়ে আসছি। আমি দক্ষতার সাথে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এই হামলা করা হয়েছে।
আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, দলমত নির্বিশেষ সকলের প্রিয় মানুষ মেয়র মতিয়ার রহমান। তার কর্মদক্ষতা ও রাজনৈতিক দর্শনে মুগ্ধ হয়ে গত নয় বছরে হাজার হাজার নেতাকর্মী দলকে শক্তিশালী করতে কাজ করছেন। তিনি আরো বলেন, মেয়র মতিয়ার রহমানের বিকল্প উপজেলা আওয়ামী লীগে কেউ নেই। দলের হাল ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে তাকেই আবারো উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পদ দেয়ার দাবী জানাই।
এদিকে সম্মেলনে বিশৃঙ্খলার কারনে এখনো ঘোষনা করা হয়নি উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি। তাই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। সূত্র বলছে, কমিটিতে পদ- পদবী পেতে লবিংএ ব্যস্থ নেতারা। মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় না হলেই লবিং করতে সক্রিয় একটি পক্ষ। পদ পেতে ইতিমধ্যে আমতলীর অধিকাংশ নেতা ঢাকায় অবস্থান করছে। ছোটাছুটি করছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারেদ্বারে। অথচ এদের অনেককেই আওয়ামীলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে পটুয়াখালীতে থাকতে দেখা গেছে। এমনকি আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনার জন্মদিনেও অনুপস্থিত ছিলেন এই নেতারা। কমিটির সময় তারা নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে গিয়েই তৈরি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা।
উপজেলা আওয়ামীলীগের একাধিক সিনিয়র নেতারা মনে করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ কাদের মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান দক্ষতার সাথে দীর্ঘ দিন দল পরিচালনা করছে। তাদের বিরুদ্ধে কোন অস্বচ্ছতার অভিযোগ নেই। এই দুজনার হাতেই উপজেলা আওয়ামীলীগ নিরাপদ। তবে কে হচ্ছে আওয়ামীলীগের সভাপতি / সাধারণ সম্পাদক তার জন্য অপেক্ষায় পুরো উপজেলা বাসী।