পরিবেশ বিপর্যয়ে চরম ঝুঁকিতে হাড়িদোয়া নদী
- হাজী জাহিদ, নরসিংদী
-
২০২২-১০-১৩ ০৯:৪২:০০
- Print
নরসিংদীর অনেকই জানান নরসিংদী পৌরসভার মেয়র এর অব্যবস্থাপনার কারনে এমন হচ্ছে। নরসিংদির হাড়িদোয়া নদীতে এক সময় বিভিন্ন প্রজাতির মিঠা পানির মাছের বসবাস ছিল। নদীর পানি ব্যবহার হতো কৃষি কাজে। বর্তমানে কলকারখানার বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে পানি। প্রতিনিয়তই বাড়ছে দূষণ। স্বচ্ছ পানি এখন আলকাতরার মতো কালো রং ধারণ করেছে। কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য, বাজারের পরিত্যক্ত আবর্জনা প্রতিনিয়ত মিশছে এক সময়ের খরস্রোতা হাড়িদোয়া নদীতে।
যার কারণে চরম বিপর্যয়ের মধ্যে হাড়িদোয়া। এর সঙ্গে মানুষজন নির্বিচারে ময়লা ফেলাতে দূষিত হচ্ছে নদী পাড়ের চারপাশের পরিবেশ। হাড়িদোয়া নদীর পুরাতন থানার ঘাট থেকে হাজিপুর ব্রিজ, নরসিংদী বড় বাজার, বীরপুর, আর্শিনগর অংশের চারপাশ থেকে নদীতে ফেলা হচ্ছে ময়লা। বিশাল জায়গাজুড়ে ছোট-বড় টিলার মতো স্তূপে পরিণত হয়েছে আবর্জনা। ২০১৮ সালে নরসিংদীর ছয়টি নদী আড়িয়াল খাঁ, হাড়িদোয়া, পাহাড়িয়া, মেঘনা, ব্রহ্মপুত্র ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র খনন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। কিন্তু এরপরও কমেনি দূষণ।
স্থানীয় বাসিন্দা মিজান ও রুবেল মিয়া বলেন, ছোট বেলায় মাছ স্বীকার থেকে শুরু করে এই নদীতে গোসল করা ছিল নিত্যদিনের কাজ। বর্তমানে এই নদীটির সব কিছুই শেষ। আশেপাশের বিভিন্ন কলকারখানার বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য প্রতিদিনই নদীতে পরছে। পাশেই নরসিংদী বড়ো বাজার, এখানে প্রায় ১২শ থেকে ১৫শ’র মতো দোকান রয়েছে। এসব দোকানের আবর্জনাও ফেলা হচ্ছে নদীতে। তাছাড়া নদী পাড়ের মানুষরা তো নিজেদের ঘরের আবর্জনা ফেলছেনই।
তারা আরও বলেন, হাড়িদোয়া নদীর পানি থেকে এখন দুর্গন্ধ বের হয়। নদীর পাড় দিয়ে হেঁটে যাওয়া যায় না।
আবুবকর মিয়া নামে এক জেলে বলেন, হাড়িদোয়া নদীতে এক সময় মিঠা পানির মাছের জন্য পুরো নরসিংদী জেলা জুড়ে বিখ্যাত ছিল। খেতে খুব সুস্বাদু ছিল। রুই, কাতলা, মৃগেল, পুঁটি, ইলিশ, চিতল,চিংড়ি সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এই নদীতে পাওয়া যেত। সবাই দল বেঁধে এসে মাছ ধরতাম। এক সময় নদীর পাড়ে বসে মানুষ আড্ডা দিতো। কিন্তু সেই দিন এখন আর নেই।
তিনি আরও বলেন, ময়লা আর আবর্জনা নদীটাকে শেষ করে দিয়েছে। এখন নদীর দুই পাশে বড় বড় টিলার মতো আবর্জনা স্তূপ জমে রয়েছে।
নরসিংদী বড় বাজার বণিক সমিতির সভাপতি বাবুল সরকার বলেন, নদীতে বাজারের নোংরা ময়লা ফেলা হচ্ছে, এটা ঠিক। কিন্তু আমরা ময়লা ফেলব কোথায়! আমাদেরকে নির্ধারিত জায়গা দেন, যেখানে আমরা ময়লা ফেলতে পারবো।
এ ব্যাপারে নরসিংদী পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন বাচ্চু বলেন, প্রতিদিন ময়লার গাড়ি বাজারে যায়। তারপরও তারা কেন নদীতে ময়লা ফেলেন সেটা আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো। নদীর আশেপাশের কলকারখানাগুলোও নদী দূষণ করছে কিনা সেটাও মনিটরিং করা হবে। পরিবেশবীদ সচেতন নাগরিকরা বলেন এব্যপারে নরসিংদির মেয়রের বর্জব্যাপস্হাপনায় খামখেয়ালি আছে তাই তিনি পৌরসভার সঠিক ব্যবস্থা নেয়া হলে ঠিক হয়ে যাবে।