উন্নত চিকিৎসার জন্য নিঃশর্তভাবে বিদেশে যেতে চান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার দল ও পরিবারের সদস্যরা বলছেন, সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে এখন তার লন্ডন যাওয়া জরুরি হলেও বিদেশ যেতে পারবেন না এমন শর্তেই মুক্তি পেয়েছেন তিনি। তবে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সরকারের কাছে আবেদন বা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান তারা।
সাড়ে তিনমাস ধরে ভাড়া বাড়ি ফিরোজাতেই আছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। করোনা পরিস্থিতির কারণে একবারের জন্যও বের হননি তিনি। তাই দেশের বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে চিকিৎসাও নিতে পারেননি সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেয়ার দাবি জোড়ালো হলেও নানা শর্তের কারণে সেটিও সম্ভব হচ্ছেনা বিএনপি প্রধানের পক্ষে।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল বলেন, আমরা চাই উনার চিকিৎসার জন্য যাই কিছু করার দরকার তা যেন তিনি করতে পারেন। এছাড়া বিদেশে গিয়ে উনি কথা বলবে না বা বাকরুদ্ধ করে রাখবে এগুলোর কারণ হচ্ছে সরকার ভয় পাচ্ছে।
শরিয়তপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদ আহমেদ আসলাম বলেন, অনেক আসামীই কিন্তু বিনাশর্তে বিদেশ ভ্রমণ করছে, সরকারের অনেক লোকও বিনা শর্তে বিদেশ ভ্রমণ করছে। তাহলে উনার ক্ষেত্রে কেন শর্ত দেয়া হবে।
বিএনপির সহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন বকুল বলেন, কারো জন্য বিমানের ফ্লাইট রেডি থাকে আর কারো জন্য শর্ত আরোপ করে ঘরে বসিয়ে রাখা হবে এটা কোন ধরণের গণতন্ত্র।
চিকিৎসার সুযোগ যে কারো মৌলিক অধিকার। তাই কে কোথায় চিকিৎসা নেবে, কার কাছে যাবে, কোথায় যাবে তার কোন শর্ত থাকা কোনভাবেই উচিত নয় বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, একজন রাজনৈতিক নেতা এর উপর এভাবে শর্ত আরোপ করাটা অযৌক্তিক। করোনা পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হওয়ার পরে আমি মনে করি সারা পৃথিবীতে একটি পরিবর্তন আসবে।
সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিবও দলীয় প্রধানের বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী বলছেন, মানবিক কারণে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে সাময়িক মুক্তি দেয়া হয়েছে। তাই তার উচিত হবে মুক্তির শর্ত ভঙ্গ হয় এমন কোন কাজ থেকে বিরত থাকা। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, সরকার যে আদেশটি দিয়েছেন্ সেটি আইন অনুযায়ীই দিয়েছেন। আর উনারতো বাইরে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। উনি কারাবন্দি আসামি, বেকুসুর খালাসও না। বিদেশে যেতে হলে উনাকে উচ্চতর আদালতে দরখাস্ত দিতে হবে, আদালত যদি সব মামলার কথা চিন্তা করে অনুমতি দেয় তাহলেই তিনি যেতে পারবেন।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের এক সদস্য জানান, নানা শর্তের বেড়াজালে চাইলেও লন্ডন যেতে পারছেন না সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তবে, সময় হলে বিদেশ যাওয়ার আনুমতিসহ অন্যান্য বিষয় সুরাহার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হবে বলে জানান তিনি।