রূপগঞ্জে সংঘর্ষ-গুলিতে আতঙ্ক, অফিস ও বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর
- সাইফুল ইসলাম, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
-
২০২২-১০-০২ ০৯:৫১:৫৯
- Print
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এসময় এক পক্ষ আরেক পক্ষের বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর চালিয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। গত শনিবার (০১ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মীরকুটিরছেও এলাকায় ঘটে এসব ঘটনা।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর থানার সয়সতী এলাকার মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে ইসমাইল, করিমগঞ্জ উপজেলার কান্দারকামাটিয়া এলাকার জালাল মিয়ার ছেলে রাকিব ও শরিয়তপুর জেলার জাজিরা থানার সেনেরচর এলাকার শাহআলমের ছেলে সোহাগ মিয়া। তারা সকলে রূপগঞ্জের কর্ণগোপ ও নাগেরবাগ এলাকায় বসবাস করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এলাকার আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার পান্না সোহেলসহ তার লোকজনের সঙ্গে মাছিমপুর এলাকার ইউপি সদস্য তাওলাদ হোসেনসহ তার লোকজনের বিরোধ রয়েছে।
শনিবার রাতে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা যোগে গোলাকান্দাইল নাগেরবাগ এলাকায় ফিরছিলেন কয়েকজন যুবক। এসময় একটি ফিলিং ষ্টেশন থেকে তেল নিয়ে মটরসাইকেল এবং প্রাইভেটকার যোগে নিজ এলাকা মাছিমপুরে ফিরছিলেন ইউপি সদস্য তাওলাদ গ্রুপের শাকিল ও সোলাইমান নামের দুই যুবক। কর্ণগোপ এলাকায় পৌছাবামাত্র ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার সঙ্গে মটরসাইকেলটির ধাক্কা লাগে। এতে উভয় পক্ষের লোকজন আহত হয়। এ নিয়ে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় থাকা যুবকদের সঙ্গে মটরসাইকেল আরোহী শাকিলের তর্কবিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটার এক পর্যায়ে শাকিলকে ছুড়িকাঘাত করে ওই যুবকরা। এছাড়া শাকিলদের সঙ্গে থাকা প্রাইভেটকারও ভাংচুর করা হয়।
এদিকে, ইউপি সদস্য তাওলাদ গ্রুপের লোকজন খবর পান তাদের গ্রুপের শাকিলকে ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার পান্না সোহেলের লোকজন কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে। এমন খবরে উত্তেজিত হয়ে তাওলাদের লোকজন ভাইস চেয়ারম্যানের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুর চালালে উভয় পক্ষের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ ও বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এসময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করা হয়। মাছিমপুর, মীরকুটিরছেও, পাড়াইন, নার্সিংগলসহ আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পাড়াইন এলাকার মিজানের ছেলে রবিনকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। উভয় পক্ষের গুরুতর আহত শাকিল ও রবিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ৩জনকে গ্রেফতার করেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার পান্না সোহেল বলেন, ঘটনার সুত্রপাত অন্য এলাকার লোকজনের সঙ্গে। সেখানে আমার কোন লোক ছিলোনা। পুর্বপরিকল্পিত ভাবে আমার অফিসসহ আমার লোকজনের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে এবং কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। গুলি করে আতঙ্কের সৃষ্টি করে।
এদিকে, ইউপি সদস্য তাওলাদ অভিযোগ করে বলেন, যেই প্রাইভেটকারটি ভাংচুর করা হয়েছে সেই প্রাইভেটকারে আমার থাকার কথা ছিলো। পরিকল্পিত ভাবে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালায় ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার পান্না সোহেলের লোকজন। গাড়িতে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যাই। আমি স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এলাকার শান্তি চাই।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, আহত শাকিলের মা রেহানা বেগম বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা সে অভিযোগটি মামলা নিয়েছি। এখন পর্যন্ত আরেক পক্ষ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে সে ব্যপারেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। গ্রেফতারকৃত ৩জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।