ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
একজন জননেত্রীর বিশ্বনেত্রী হয়ে ওঠা
  • মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া
  • ২০২২-০৯-২৯ ১৫:০০:২৭
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম পরিচয় তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ সন্তান। জন্মের পর থেকে তিনি বাবার সংগ্রামী জীবন, বাংলার জনগণের মুক্তির জন্য কারাবরণ, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একজন রাজনীতিকের কঠিন জীবন বেছে নেয়ার প্রত্যয় দেখেছেন। একটা সময়ে বঙ্গবন্ধুর সেই আন্দোলন-সংগ্রামে শেখ হাসিনাও শামিল হয়েছিলেন। ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৮ সালে আগরতলা মামলা এবং ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলনে শেখ হাসিনার ভূমিকা আমাদের সে কথাই মনে করিয়ে দেয়। ১৯৬৮ সালে পরমাণুবিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়াকে সঙ্গে শেখ হাসিনার বিয়ে হয়। এরপর তিনি রাজনীতি থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা না করলে শেখ হাসিনা হয়তো কখনোই আর রাজনীতিতে আসতেন না। ১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই শেখ হাসিনা তার দুই সন্তান ও বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে স্বামীর কর্মস্থল জার্মানিতে বেড়াতে যান। ওয়াজেদ মিয়া ওই সময়ে কার্লসরুয়ে ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চে নিয়োজিত ছিলেন। ১৫ আগস্ট ভোরে তিনি ব্রাসেলসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কবি সানাউল হকের বাসায় ছিলেন। পরের দিন দেশের ক্ষমতা বদলের পর রাষ্ট্রদূতের অবস্থান সম্পূর্ণ বদলে যায়। সানাউল হক টেলিফোনে জার্মানিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীকে বললেন, ‘এসব ঝামেলা আপনি আমার ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন, তাড়াতাড়ি ওদের নিয়ে যান।’ এরপর হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর সহযোগিতায় শেখ হাসিনা ও রেহানা ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়ে ২৫ আগস্ট জার্মানি থেকে নয়াদিল্লি যান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার থাকার জন্য একটি ফ্ল্যাট বরাদ্দ করেন। একই সময়ে ওয়াজেদ মিয়াকে ভারতীয় পরমাণু কেন্দ্রে একটি চাকরি দেয়া হয়। পরিচয় গোপন করে অতিকষ্টে শেখ হাসিনা দিল্লিতে সাধারণ জীবনযাপন করতেন। রান্নাবান্না, ঘরের কাজ, সন্তান লালন-পালন, বাজার করা ইত্যাদি করে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করেন। অবশ্য কয়েক বছর পর শেখ রেহানা লন্ডনে এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান। সত্তরের দশকের শেষের দিকে দুই বোন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবিতে লন্ডনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জনমত গড়তে শুরু করেন। ১৯৭৯ সালের পর থেকেই আওয়ামী লীগের নেতারা দিল্লিতে শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। তখন সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান সদ্য উর্দি খুলে দেশের রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই আওয়ামী লীগের সময় খারাপ যাচ্ছিল। দলে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভক্তিও ছিল। এ অবস্থায় দলে ঐক্য ফিরিয়ে আনতে একজন গ্রহণযোগ্য নেতার প্রয়োজন ছিল। এই তাগিদ থেকেই ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি করা হয়। দলের হাল ধরতে ওই বছরের ১৭ মে শেখ হাসিনা দেশে ফেরেন। সেদিন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে লাখ লাখ জনতা সমবেত হয় তাকে সাদরে গ্রহণ করেন। মঞ্চে উঠে শেখ হাসিনা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি সর্বহারা, আমার কেউ নাই। আপনাদের মাঝে আমি আমার হারানো পিতা-মাতা, আমার ভাই, আত্মীয়স্বজন সবাইকে খুঁজে পেতে চাই। আপনাদের কথা দিলাম এই দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমি জীবন উৎসর্গ করব। আমি আওয়ামী লীগের নেতা হতে আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই।’ ১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামে কতিপয় সেনা কর্মকর্তার হাতে নিহত হন। এর কিছুদিন পর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা দখল করেন। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার পাশাপাশি এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও অন্যান্য দলের সম্মিলিত আন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে এরশাদের পতন ঘটে। এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সব ধরনের জরিপে আওয়ামী লীগ এগিয়ে থাকলেও নির্বাচনে জয়লাভ করে বিএনপি। শেখ হাসিনা বিএনপির শাসনামল (১৯৯১-৯৬) এবং তারও আগে এরশাদের শাসনামলে সারা দেশের গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ঘুরে বেড়িয়ে মানুষের সুখ-দুঃখ এবং অভাব-অভিযোগের কথা শুনেছেন। এ সময় তিনি ‘শেখের বেটি’ হিসেবে দুঃখী মানুষের মন জয় করতে সক্ষম হন। অবশেষ ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে সরকার গঠন করে। শেখ হাসিনার সরকারের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে গঙ্গা নদীর পানির হিস্যা পাওয়ার ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি সই হয়। পার্বত্য শান্তিবাহিনীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও সমঝোতা করে পার্বত্য শান্তিচুক্তি সই হয়। ফলে পার্বত্য জেলাগুলোতে শান্তিবাহিনীর সঙ্গে দীর্ঘকালের যুদ্ধ ও বিরোধের নিষ্পত্তি হয়। একই সময়ে জাতীয় সংসদে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল আইন পাস হলে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচারের পথ সুগম হয়। শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রথম মেয়াদেই ১৯৯৮ সালে যমুনা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করে তা উদ্বোধন করা হয়। ২০০১ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে বিএনপি পুনরায় সরকার গঠন করলে বেগম খালেদা জিয়া পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হন এবং শেখ হাসিনা হন বিরোধী দলের নেতা। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলা হলে আওয়ামী লীগের বহু নেতা-কর্মী হতাহত হন। মারা যান আইভি রহমানসহ আরও অনেকে। এরপর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়লাভ করে। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। সেই মেয়াদে সরকারের সচিব হিসেবে আমার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কাছ থেকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ হয়। দ্বিতীয়বার সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পর তাকে আগের চেয়ে আরও পরিপক্ব ও দক্ষ বলে আমার মনে হয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পটিকে প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং সরকারের মেয়াদকাল, অর্থাৎ ২০১৩-এর ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত করার নির্দেশ দেন। কিন্তু কথিত দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিশ্বব্যাংকের নেতৃত্বে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো পদ্মা সেতু নির্মাণে টাকা দেবে না বলে জানায়। এরপর শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন এবং তা করে বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিয়েছেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল ‘রূপকল্প-২০২১’, অর্থাৎ ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করা। নির্ধারিত সময়ের আগেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পৌঁছে যায়। আগামী ২০২৬ সালে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিবেচিত হবে। টানা তিন মেয়াদে সরকারের ধারাবাহিকতা থাকায় দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি গত ১২ বছর গড়ে ৬ শতাংশের ওপর এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ১৫ শতাংশে পৌঁছে। ২০২২ সালে মোট জিডিপির আকার ৪৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে যায়। ২০০৫ সালে দেশের দারিদ্র্যের হার যেখানে ৪০ শতাংশ, সেখানে ২০১৯ সালে দারিদ্র্যের হার কমে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছে। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে। ২০২২ অর্থবছরে দেশের রপ্তানি আয় রেকর্ড ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পৌঁছে। অবশ্য বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির কারণে আমদানি ব্যয় হয় ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালের প্রথমার্ধ থেকে করোনা মহামারির প্রকোপ শুরু হলে সারা বিশ্বে স্থবিরতা নেমে আসে। এ কঠিন সময়েও শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল ছিল। যেখানে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ছিল, সেখানে করোনার প্রথম বছর বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ এবং দ্বিতীয় বছর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ দশমিক ২ শতাংশ। করোনা মোকাবিলায় এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। বর্তমানে দেশে ১০-১২টি মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। পদ্মা সেতু গত ২৫ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। এ সেতু নির্মাণের ফলে দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা যায়। মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল ও ঢাকা বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীর অদূরে কুতুবখালী পর্যন্ত নির্মীয়মাণ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে শিগগিরই চালু হবে। কৃষি ও শিল্পোৎপাদনে এগিয়ে থাকার কারণে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পৃথিবীর অনেক দেশে মন্দাভাব দেখা দিলেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তুলনামূলক ভালো। মূল্যস্ফীতি, টাকার অবমূল্যায়ন, জ্বালানিসংকট ইত্যাদি সত্ত্বেও শেখ হাসিনার সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপ ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে দেশ সঠিক পথেই রয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ‘রূপকল্প-২০৪১’ ঘোষণা করে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হওয়ার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। ২১০০ সাল পর্যন্ত ‘ব-দ্বীপ’ পরিকল্পনা বা ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত বৈশ্বিক নীতি- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়- এ মূলমন্ত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অনুসরণ করেন। সে জন্য বাংলাদেশ কোনো জোটে অন্তর্ভুক্ত নয়। বরং সব দুর্বল ও শক্তিশালী দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক বিদ্যমান। শেখ হাসিনার বৈশ্বিক নীতি এবং জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে জলবায়ু পরিবর্তন, মাইগ্রেশন, সংকট মোকাবিলায় সম্পদ বণ্টন, নারীর ক্ষমতায়ন, যুদ্ধ বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, জ্বালানি নিরাপত্তা প্রভৃতি বিষয়ে প্রস্তাব প্রণয়ন ও বিশ্বসভায় উত্থাপন বিশ্বনেতৃত্বের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত বাস্তুচ্যুত ১২ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং শেখ হাসিনা ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। জাতিসংঘে প্রদত্ত ভাষণে তিনি রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণভাবে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বিশ্বনেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান। বরাবরের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়েছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে উন্নত দেশসমূহ যেখানে পক্ষ-বিপক্ষভুক্ত, সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন। তা ছাড়া যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্বের দেশসমূহের অর্থনৈতিক ক্ষতির বিষয়ও তুলে ধরেন। এ পরিস্থিতিতে খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহের ব্যবস্থা সচল রাখা, জ্বালানি নিরাপত্তা ও ব্যবসা-বাণিজ্য পুনরুজ্জীবিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ কর্তৃক বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা সরকারপ্রধান হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। দেশ শাসনে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, দেশপ্রেম ও জনকল্যাণে অবদানের জন্য তিনি যেমন জননেত্রী হিসেবে পরিচিত, তেমনি সারা বিশ্বের সমস্যা ও মঙ্গলের জন্য কথা বলেন বিধায় তিনি এখন বিশ্বনেত্রী। বঙ্গবন্ধু যেমন ছিলেন একজন দূরদর্শী, দেশপ্রেমিক, গণমানুষের নেতা, তারই আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে শেখ হাসিনাও গণমুখী নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করে চলেছেন। দেশের সমস্যা ও সম্ভাবনা তার নখদর্পণে। সামাজিক সুরক্ষার মাধ্যমে দেশের বয়স্ক, দুস্থ, স্বামী পরিত্যক্তা নারী, চা-শ্রমিক, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী, অনগ্রসর জনগোষ্ঠী প্রভৃতি শ্রেণির লোকদের ভাতা দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছেন। ভূমিহীন ও আশ্রয়হীনদের বাড়ি নির্মাণ করে দিচ্ছেন। যার ফলে সংকটকালেও দরিদ্র মানুষ উপকৃত হয়েছেন। আশা করা যাচ্ছে, বৈশ্বিক মন্দার হাতছানিতে দেশে যে সাময়িক অর্থনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, শেখ হাসিনার গণমুখী নেতৃত্ব ও সময়োচিত পদক্ষেপে তা কাটিয়ে উঠে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আবার ধাবিত হবে বাংলাদেশ। আজ ২৮ সেপ্টেম্বর। শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগদান উপলক্ষে নিউইয়র্কে তার জন্মদিন উদ্‌যাপিত হচ্ছে। তার প্রাণপ্রিয় দেশবাসীর পক্ষ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও অসীম শ্রদ্ধা। লেখক: সাবেক সিনিয়র সচিব, বর্তমানে জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্টদূত
 ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড
নীলফামারী জেলা দোকান মালিক সমিতির নতুন কমিটি গঠন
খুলনায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ডানা, জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা