ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
কৃত্রিম পা সংযোজনেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে দুর্গাপুর উপজেলা উন্নয়ন ফোরাম
  • মোবারক হোসেন শিশির, দুর্গাপুর, রাজশাহী
  • ২০২২-০৯-২৩ ১৩:৫৩:০৭
'আমরা মানবতার কল্যানে' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে "কৃত্রিম পায়ে নতুন জীবন"পেয়ে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে দুর্গাপুর উপজেলা উন্নয়ন ফোরাম। দুর্ঘটনা বা যেকোন ভাবে অঙ্গহীন রোগীদের বিনামূল্যে কৃত্রিম পা সংযোজন এর ব্যবস্থা করে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছে দুর্গাপুর উপজেলা উন্নয়ন ফোরাম। ইতোমধ্যে দুর্গাপুর উপজেলা উন্নয়ন ফোরামের সহযোগিতায় রাজশাহী জেলার বিভিন্ন উপজেলার বেশ কিছু লোকজনকে কৃত্রিম পা সংযোজন করা হয়েছে। পা হারানো ব্যক্তিরা কৃত্রিম পা সংযোজন করে যেন নতুন জীবন পেয়েছেন বলে তারা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে দুর্গাপুর উপজেলা উন্নয়ন ফোরামের প্রেসিডেন্ট আলতাফ হোসেন বলেন, কৃত্রিম অঙ্গ সংযোজন খুব স্পর্শকাতর একটি বিষয়। সারা জীবন আমরা নিজের পা দিয়ে হেঁটে অভ্যস্ত হঠাৎ করে অন্য পা বসিয়ে দেওয়া হলো ব্যাপারটা এত সহজ নয়। শরীরে নানা বিষয় ও অ্যানাটমি চেক করেই কৃত্রিম অঙ্গ তৈরী করে রোগীর দেহে সংযোজন করতে হয়। এছাড়া কৃত্রিম অঙ্গ সংযোজনের পর নিয়মিত একটি ট্রেনিং করতে হয়। ট্রেনিং না করলে ভিন্ন একটা পার্ট আমাদের দেহ গ্রহন করবে না। যদি না করে তবে নানা ধরনের সমস্যা ও জটিলতা তৈরি হবে। দুর্গাপুর উপজেলা উন্নয়ন ফোরাম এর প্রকল্প পরিচালক মোঃ মাহবুব আলম বলেন, অঙ্গহীন মানুষগুলো দীর্ঘদিন ক্রাচ, লাঠি কিংবা বাঁশের সাহায্যে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতো। তবে কৃত্রিম পা পাওয়ার পর তাদের দেখলে মনে হয় তারা যেন সত্যিকারের পা পেয়েছে। মানুষগুলো ভালোভাবে হেঁটে চলাফেরা করতে পারছে এটা অনেক আনন্দের ব্যাপার। পা না থাকায় অনেকে অসহায় ভাবে বাড়িতে বসে থাকতো। এখন পা পেয়ে শুধু সেই মানুষগুলোর জীবন বদলে গেছে তা নয় তাদের পরিবারের চেহারা বদলে গেছে। এ বিষয়ে কথা হয় কৃত্রিম পা সংযোজন কারি ব্যাক্তি দুর্গাপুর উপজেলা উন্নয়ন ফোরাম এর পক্ষ থেকে কৃত্রিম পা পেয়েছেন এমন একজন রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার জাহানাবাদ সুলতানগঞ্জ গ্রামের মাও, দানেশ এর পুত্র আব্দুল্লাহ(৪৫) এর সাথে। তিনি তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন দুর্গাপুর উপজেলা উন্নয়ন ফোরামের মাধ্যমে আমি কৃত্রিমভাবে এ যেন এক নতুন জীবন পেয়েছি বলে মনে হয়। আগে পঙ্গু জীবন নিয়ে বাড়িতে বসে অবহেলার পাত্র ছিলাম। দুর্গাপুর উপজেলা উন্নয়ন ফোরামের মাধ্যমে এখন কৃত্রিম পা পেয়ে নিজেকে স্বাধীন বলে মনে হয়। কৃত্রিম পা সংযোজন এর পর আমি নিজে অটো রিক্সা চালিয়ে করি পরিবার পরিজনদের জন্য জীবিকা নির্বাহ করে চলেছি। কৃত্রিম পা সংযোজনকারী রাজশাহী নগরীর বিনোদপুর ইসলামিয়া কলেজের (বি,এ) শিক্ষার্থী ও বিনোদপুর এলাকার রফিকুল ইসলাম দুলাল এর পুত্র জনি ইসলাম তিনি বলেন, আমি খুব স্বাচ্ছন্দ্যভাবে কৃত্রিম পা ব্যবহার করছি । কোন অসুবিধা হচ্ছে না। পা পেয়ে নতুন জীবন পেলাম বলে মনে হচ্ছে। আমি এখন হেঁটে কলেজে অধ্যায়ন করি। এছাড়াও দুর্গাপুর উন্নয়ন ফোরামের সহায়তায় বিএসসি অনার্স এমএসসি পাশ যুবক চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া এলাকার মৃত জমসেদ আলীর পুত্র মাইনুল ইসলাম (৩০)। কৃত্রিম পা লাগানোর প্রসঙ্গে ‘দুর্গাপুর উন্নয়ন ফোরাম’র উপদেষ্টা মোবারক হোসেন শিশির বলেন, আমরা প্রায়ই আমাদের চারপাশে পক্ষাঘাতগ্রস্থ অসহায় মানুষ দেখে থাকি। আমরা দুর্গাপুর উন্নয়ন ফোরামের মাধ্যমে সকলের সহযোগিতায় চারজনের কৃত্রিম পা সংযোজন করে দিয়েছি। আমাদের সকলের যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী এসকল মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসা উচিৎ। পক্ষাঘাতগ্রস্থ অসহায় ও গরীব মানুষের প্রাত্যাহিক জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য আসার পাশাপাশি যেনো গতি এবং এর মাধ্যমে তাদের জীবন-যাপন আরো সহজ ও সুন্দর হয় সে লক্ষ্যেই ”দুর্গাপুর উন্নয়ন ফোরাম” এমন উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগকে বাস্তবায়ন করতে যারা আমাদেরকে অর্থসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি আমরা গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
বন্যা পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যা করা উচিত
টাঙ্গাইলে বুরো হাসপাতালের শুভ সূচনা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিনামূল্যে ৩০০ জন দুস্থ রোগীর চক্ষু ছানি অপারেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন