ঢাকা শনিবার, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪
ভোলায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিবাদ সভা, ঢাকায় মহাননগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি কাদের খানকে ভোলায় অবাঞ্চিত
  • মোঃ জহিরুল হক, ভোলা
  • ২০২২-০৯-০৬ ১০:৩৫:০৫
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শামসুদ্দিন আহমেদের ভূমিকা নিয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি কাদের খানের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভোলা সদর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভোলা সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভবন মিলনায়তনে কাদের খানের বক্তব্যকে মিথ্যাচার বলে অভিহিত করেন। তার এই মিথ্যাচার বক্তব্যর বিরুদ্ধে বিচারও দাবি করেন ও একই সাথে কাদের খানে বক্তব্য প্রত্যাহার করার দাবি জানান। এদিকে কাদের খানের এই মিথ্যাচার বক্তব্যর প্রতিবাদে তাকে ভোলায় অবাঞ্চিত ঘোষনা করেন মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচীর অংশ হিসাবে রাজধানীতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে কাদের খান তার বক্তব্যে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেন। তিনি ওই দিন জানান, চাচা শামসুদ্দিন আহমেদ ১৫ আগস্ট রাতে হোটেলে ছিলেন। তার সঙ্গে দেখা করে তিনি তোফায়েল আহমেদ কী করছেন দেখতে যান। রিকশাচালক সেজে তিনি তোফায়েল আহমেদের ঢাকার বাড়িতে যান।গেটে গিয়ে শুনতে পান রক্ষী বাহিনী তোফায়েল আহমেদকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে গেছে। ১৫ আগস্টের আগের দিন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন বলেও দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রায়াত শামসুদ্দিন আহমেদের ছেলে এবং ভোলা সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র-সভাপতি ফেরদাউস আহমেদ বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার রাতে শামসুদ্দিন আহমেদ ছিলেন বঙ্গবন্ধুর তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদের ঢাকার বাড়িতে। বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে হামলা ও হত্যার খবর পেয়ে ভেঙে পড়েন তোফায়েল আহমেদ। প্রতিরোধ গড়ার জন্য বিভিন্ন স্থানে ফোন করছিলেন তিনি। এমনকি তারজীবন সংকটাপন্ন ছিল সেদিন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পরের দিন ক্যাপ্টেন মাজেদ তোফায়েল আহমেদকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাসায় যান। তখন ভোলার মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠন শামছুদ্দিন আহমেদ সামনে এসে দাঁড়লে ক্যাপ্টেন মাজেদ তার প্রতি সম্মান রেখে আর সামনে এগোয়নি। পরে তোফায়েল আহমেদের পিএস মিন্টুকে ধরে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।২১ দিন নজরবন্দী থাকার পর ঘাতক সেনা সদস্যরা তোফায়েল আহমেদকে গ্রেফতার করে চোখ বেঁধে নিয়া যায়। তারপর সামছুদ্দিন মিয়া ভোলায় চলে আসেন। ভোলা সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার অহিদুর রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কাদের খান ভোলা কলেজের ছাত্র ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্মকান্ডে তিনি জড়িতও ছিলেন না। ৭৬ বা ৭৭ সালের দিকে তিনি ঢাকায় যান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের আগের দিন তিনি কী করে আট থেকে ১০ হাজার ছাত্রের মধ্যে ব্যাজ ও লিফলেট বিতরণ করেন? অথচ গত ৩০ আগস্ট ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি টাইল্স ব্যবসায়ী কাদের খান নিলজ্জের মত মিথ্যাচার বক্তব্য দেন। তিনি বলেছেন, ‘১৫ই আগষ্ট সামছুদ্দিন মিয়া ঢাকার একটি হোটেলে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার সংবাদ পাওয়ার পর কাদের খান হোটেলে গিয়ে সামছুদ্দিন মিয়ার সাথে দেখা করেন। তখন সামছুদ্দিন মিয়া কাদের খানকে একটি লুঙ্গি ও একটি গামছা কিনে দেন। পরে সামছুদ্দিন মিয়া কাদের খানকে রিকশা চালকের বেশে জননেতা আলহাজ¦ তোফায়েল আহমেদের বাড়ীতে পাঠান।” তাহারই এই বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, কাদের খান কোন কালেই ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন না। ঢাকার ছাত্র রাজনীতিতে তার কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিল না। ছাত্রদের মধ্যে ব্যাচ বিতরণের কাহিনী সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ১৯৭৪-১৯৭৫ সালে তিনি ভি.পি পদে ও ব্যবসায়ী মোঃ ইউসুফ জি.এস পদে ভোলা কলেজের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। নির্বাচিত হতে না পেরে কিছুদিন আত্মগোপন করেন। ১৯৭৫ সালে আব্দুল কাদের (কাদের খান) ভোলা কলেজ থেকে বি.এ পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করলেও পরীক্ষায় অংশ নেয় নি। তার রোল নম্বর ছিল- ৩৩৭৫। তিনি বি.এ পাশ করেন নি। তিনি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন না। শোকাবহ আগস্ট অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে কাদের খান অসত্য ও মিথ্যাচার বক্তব্য প্রদান করেন। তার মিথ্যাচার বক্তব্য রাখার খবর শুনে ভোলার সুশীল সমাজ সহ মুক্তিযোদ্ধারা হতবাক হয়। এছাড়াও ভোলা জেলার সর্বস্তরের মানুষ তাহার মিথ্যাচার বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দলের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি পেতে কাদের খান এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজের অবস্থান জাহির করেন বলেও আমরা মনে করি। আমরা মুক্তিযোদ্ধাগণ কাদের খানের এই ধরনের মিথ্যাচার বক্তব্যে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং একই সঙ্গে তার বক্তব্য প্রত্যহারের দাবী জানাচ্ছি। একই সঙ্গে কাদের খানকে মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতির পদ থেকে বাদ দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবী জানানা। একই সাথে তাকে ভোলায় অবাঞ্চিত ঘোষনা করেন।
 গণহত্যা-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কাউকে বিএনপিতে নেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল
২৯ ডিসেম্বর লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
রাজনৈতিক দলগুলো ৫৩ বছরেও সংস্কার করতে পারেনি: রিজওয়ানা