রাঙ্গামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের ৩৮ ঘন্টা হরতালের ডাক
- পলাশ চাকমা, রাঙ্গামাটি
-
২০২২-০৯-০৫ ১০:২০:৩৪
- Print
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন বাতিলের দাবিতে এবং আগামী ৭ সেপ্টেম্বর সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে ভূমি কমিশনের অস্থায়ী কার্যালয়ে ভূমি কমিশনের বৈঠক বাতিলের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে ৩৮ ঘন্টা হরতাল পালনের ডাক দিয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ নামে একটি আঞ্চলিক সংগঠন। এ হরতাল পালিত হবে,আগামীকাল ৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল ৬টা হতে বুধবার দুপুর ২টা পর্যন্ত।
সোমবার (০৫ সেপ্টেম্বর) সকালে রাঙ্গামাটি শহরের বনরূপাস্থ একটি রেস্তোরাঁয় পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বৈঠক বাতিল এবং ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান মোঃ কাজী মজিবর রহমান।
তিনি জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। পার্বত্য অঞ্চলে যে ভূমি কমিশনের আইন করা হয়েছে,তা বাস্তবায়িত হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকাংশ মানুষ ভূমি হারা হয়ে যাবে। সুতারাং, পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের ভূমি এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সারাদেশের ন্যায় বাংলাদেশের সাংবিধানিক অনুযায়ী এই আইন বাতিল করা হোক।
তিনি আরো জানান, আজ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি জরিপ হয়নি। তাদের দাবি হচ্ছে, ভূমি কমিশন আইন বাতিল করতে হবে,পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি জরিপ করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন খাতে কত লক্ষ হেক্টর ভূমি জরিপের পর তখন সিন্ধান্ত হবে বাকি ভূমি কিভাবে ব্যবস্থাপনা হবে। বাংলাদেশের ৬১টি জেলায় যেভাবে ভূমি ব্যবস্থাপনা হচ্ছে, সেভাবেই পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি ব্যবস্থাপনা করতে হবে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আলমগীর কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুজ্জামান ডালিম, রাঙ্গামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সোলায়মান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দীক, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ হাবীব আজম, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আসমা মল্লিক, সাংগঠনিক সম্পাদক লাভলী আক্তার প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন বাতিরের দাবিতে ৭ দফা দাবি সমূহ : পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনে জনসংখ্যা অনুপাতে সকল জাতিগোষ্ঠী থেকে সমান সংখ্যক সদস্য নিশ্চিত করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি এর কার্যক্রম শুরুর পূর্বে,ভূমির বর্তমান অবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভূমি জরিপ সম্পন্ন করতে হবে। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের ভূমির উপর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ভূমি কমিশন সংশোধনী আইন ২০১৬ এর ধারা সমূহ বাতিল করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি ব্যবস্থাপনা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রবর্তন করতে হবে এবং সমতলের ন্যায় জেলা প্রশাসকগণকে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির অধিকার দিতে হবে। কমিশন কর্তৃক ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির কারণে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হলে তাকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারী খাস জমিতে পূর্নবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে তথাকথিত রীতি,প্রথা ও পদ্ধতির পরিবর্তে দেশে বিদ্যমান ভূমি আইন অনুসারে ভূমি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে এবং বাংলাদেশ সরকারের আদেশ অনুযায়ী জেলা প্রশাসক কর্তৃক বন্দোবস্তীকৃত অথবা কবুলিয়ত প্রাপ্ত মালিকানা থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা যাবে না।