সিরাজগঞ্জে ৬০৯২ হেক্টর ফসল পানির নিচে
- নাজমুল হোসেন, সিরাজগঞ্জ
-
২০২২-০৬-২২ ০৭:৫৩:৫১
- Print
টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ও খাল-বিলের পানি বাড়ছে। ফলে জেলার বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে।
বুধবার (২২ জুন) সকাল ১০টায় সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড গেজ রিডার হাসানুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কাজীপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার ওপরে এবং শহরের হার্ডপয়েন্ট এলাকায় যমুনার পানি ১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধিতে জেলার করতোয়া, ইছামতি, ফুলঝোড়, বড়াল, হুড়াসগড় ও চলনবিলের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ সকল অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।
ইতিমধ্যেই জেলার সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২০টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এ সকল এলাকার বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বন্যা কবলিতরা।
পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ৫টি উপজেলার এ সকল এলাকার ৬ হাজার ৯২ হেক্টর জমির আউশ ধান, পাট, তিল, কাউন, বাদামসহ উঠতি ফসল নষ্ট হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষকেরা।
এদিকে, কাজ না থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার শ্রমজীবীরা। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন অনেকেই। বন্যা কবলিত এলাকায় এখনো শুরু হয়নি সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ত্রাণ বিতরণ।
জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান জানান, বন্যার্তদের জন্য ৯১১ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২০ লাখ টাকা এবং ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এগুলো বিতরণের জন্য স্ব-স্ব এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী বিতরণ করা হবে বলে তিনি জানান।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, যমুনা পানি ২৪ ঘণ্টা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। এরপর পানি কমবে। এখনো বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।
এদিকে, যমুনায় পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার চৌহালী, কাজীপুর, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরের চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর জানান, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি ফলে জেলার ৫টি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ৬ হাজার ৯২ হেক্টর জমির আউশ ধান, পাট, তিল, কাউন, বাদামসহ উঠতি ফসল নষ্ট হয়ে। এতে কৃষকেরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।