শখের গাড়ি ২৫০ টাকার বিদ্যুৎ এ চলবে ৩০০ কিলোমিটার। টয়োটার আদলে জিপ বানিয়ে চমকে দিলেন কাউছার! টয়োটার আদলে তৈরি কাউছারের শখের জিপ। নরসিংদীর পলাশে মাত্র আড়াই লাখ টাকা খরচ করে, এক মাসের মধ্যে ৫ সিটের একটি জিপ গাড়ি তৈরি করে চমক লাগিয়ে দিয়েছেন কাউছার আহম্মেদ (২৮) নামে এক যুবক। টয়োটার সাজের আদলে তৈরি গাড়িটির নাম দিয়েছে শখের জিপ। জিপ গাড়িটি বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করতে চান কাউছার। এ জন্য সরকারের অনুমতি ও সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
ছোট বেলা থেকেই আলাদা চিন্তা-ভাবনা ছিল কাউছারের। স্বপ্ন ছিল নিজ পায়ে দাঁড়াবেন, অনেক বড় হবেন। অর্থের অভাবে এসএসসি পাশ করার পর আর লেখাপড়া করেননি। নিজ বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় হলেও মাত্র ১৭ বছর বয়সে পলাশ উপজেলায় এসে প্রাণ আরএফএল গ্রুপে চাকরি শুরু করেন তিনি। এরপর ঘোড়াশাল পৌর এলাকার বাঙ্গালপাড়া গ্রামে বিয়ে করে পলাশেই বসবাস করছেন তিনি। ছোটবেলা থেকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর যেই স্বপ্ন বুকে লালন করছেন। সেই স্বপ্নই নিজে কিছু করার সাহস যুগিয়ে দিয়েছে কাউছারকে। এরপর ইউটিউবে গাড়ি তৈরির বিভিন্ন ভিডিও দেখতে শুরু করেন কাউছার। কিছুদিন পর একটি অটোরিকশা কিনে সেটির বডি বিক্রি করে দেন। পরে অটোর মেশিন, চারটি চাকা, ব্যাটারি, প্রাভেটকারের স্ট্রিয়ারিংসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে মডিফাই করে ৫ সিটের একটি অত্যাধুনিক জিপ গাড়ি তৈরি করতে সক্ষম হন।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঘোড়াশাল পৌর মেয়র আল-মুজাহিদ হোসেন তুষারকে দিয়ে গাড়িটির রোড যাত্রা উদ্বোধন করেন। কাউছার আহম্মেদ বলেন, গাড়িটি চার্জ দিয়ে চালাতে হবে। এর ব্যাটারিও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। ২৫০ টাকার বিদ্যুৎ খরচে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার চলবে। এছাড়া ঘন্টায় ৪০ কিলোমিটার গতিতে চলার উপযোগী জিপ গাড়িটি তৈরি করতে সময় লেগেছে এক মাস। আর খরচ হয়েছে মাত্র দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা। কাউছার আরও বলেন, দেশের জন্য কিছু করতে চাই। কিন্তু টাকা-পয়না না থাকায় পারিনা। সরকারের অনুমতি ও সহযোগিতা পেলে আমার শখের জিপ গাড়িটি আমি বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করতে চাই। এতে মধ্যম আয়ের মানুষ অল্প টাকায় গাড়িটি কিনতে পারবেন। পাশাপাশি বেকার যুবকরা তাদের বেকারত্ব দূর করতে পারবে। ঘোড়াশাল পৌর মেয়র আল-মুজাহিদ হোসেন তুষার বলেন, কাউছার অত্যন্ত মেধাবী। তিনি নিজের প্রচেষ্টায় ও মেধা দিয়ে একটি অত্যাধুনিক জিপ গাড়ি তৈরি করে সবার নজর কেড়েছে। গাড়িটি দেখতেও চমৎকার। কাউছারের গাড়ি তৈরির বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলেও জানান মেয়র।