লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা উত্তর বাংলা কলেজের পরিচালনা পর্ষদ গঠন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মহামান্য হাইকোর্টের মতামত উপেক্ষা করে একই ব্যক্তিদের বারবার সভাপতি ও সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করা হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর বরাবর অভিযোগ করেছেন ওই কলেজের জাকারিয়া হাবীব নামে একজন প্রভাষক।
প্রাপ্ত অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়েছে, ওই কলেজে খালেকুজ্জামান হেলাল নামে এক ব্যক্তি ২৫ বছর ধরে, জাহাঙ্গীর হোসেন নামে এক ব্যক্তি ১৫ বছর ধরে এবং তানজিনা হক ও আবু সুলতান মোঃ সালাউদ্দিন নামে দুই ব্যক্তি পরপর দুই মেয়াদে কমিটি’র সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে একই পদে দায়িত্বে থাকায় নিজেদের আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন সময় শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে অশ্লীল ভাষা ও আপত্তিকর আচরণ করেন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর পরিচালনা পর্ষদ’র মেয়াদ শেষ হলে কোভিড-১৯’র কারণে ৩ মাসের জন্য মেয়াদ বাড়িয়ে দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ওই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এবারও পর্ষদ পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম মতি ও পুর্বের কমিটি’র সদস্যরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের উপর প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন ছাড়াই কমিটি গঠন করে অনুমোদনের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করেন। ওই কমিটিতে সহকারী অধ্যাপকদের বাদ দিয়ে শিক্ষকদের সাথে আলোচনা না করে তাদের মতামত ছাড়াই ৩ জন জুনিয়র প্রভাষককে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে তাদের নাম প্রেরণ করেন। অথচ গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারী মহামান্য হাইকোর্টের এক মতামতে বলা হয়েছে, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদ’র সভাপতি ও সদস্যরা পরপর দুই বারের বেশি হতে পারবে না।
প্রাপ্ত অভিযোগে দাবী করা হয়, ওই কলেজের পরিচালনা পর্ষদের কমিটি গঠনে মহামান্য হাইকোর্টের মতামত মানা হয়নি। এমতাবস্থায় ওই কলেজের সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরে আনতে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠনের দাবী করেছেন প্রাপ্ত অভিযোগে।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী শিক্ষক জাকারিয়া হাবীব বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট যেখানে মতামত দিয়েছেন এক ব্যক্তি পরপর দুইবারের বেশি কমিটিতে থাকতে পারবে না। সেখানে কেউ ২৫ বছর ধরে, কেউ ১৫ বছর ধরে সদস্য আর সভাপতি পরপর তিনবার সভাপতি হচ্ছে।
কলেজ পরিচালনা পর্ষদ’র সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, তিন বার নয়, তিনি পরপর দুই বার সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। তবে ভোট নয়, সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কলেজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনছুরুল ইসলাম এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর মশিউর রহমান বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করতে দুনীর্তি দমন সেলে প্রেরণ করা হয়েছে। সেই সেল থেকে তদন্ত প্রতিবেদন আসলে প্রতিবেদনের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।