নারীদের জনন অঙ্গের ফিস্টুলা প্রতিরোধে রাজশাহীতে মতবিনিময়
- রাজশাহী প্রতিনিধি:
-
২০২১-১১-১০ ১১:১০:২২
- Print
রাজশাহীতে নারীদের জনন অঙ্গের ফিস্টুলা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগ ও সাংবাদিকদের মধ্যে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকেল ৩টায় রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের সম্মেলন কক্ষে এই সভা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রায় ২০ হাজার নারী ফিস্টুলা রোগে ভুগছেন। প্রতিবছর প্রায় দুই হাজার নতুন রোগী যোগ হচ্ছে। বাল্যবিবাহ ও জরায়ুতে অপারেশন এবং অদক্ষ ধাত্রীর মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব করানোর কারণে এ রোগ হয়ে থাকে। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এ রোগে আক্রান্তদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তাদের নিকটস্থ হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। শতকরা ৯২ ভাগ রোগী পুরোপুরি সুস্থ্য হন। এ বছর রাজশাহী বিভাগে মোট ৩৯ রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। যার মধ্যে ২৭ জনকে রেফার্ড করা হয়েছে। মোট ২৮ জনকে সার্জারি করা হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ বছর মোট ১২ জন নারীকে সেবা দেওয়া হয়েছে ও ৫ জনকে সম্পন্ন সুস্থ করে ৫ জনকে পুনবার্সন করা হয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, প্রসবজনিত ফিস্টুলা হচ্ছে নারীদের প্রসবকালীন একটি অন্যতম গুরুতর জটিলতা ও বেদনাদায়ক পরিস্থিতি। বাধাগ্রস্ত প্রসবের ক্ষেত্রে সময় মতো পর্যাপ্ত চিকিৎসা না পেলে প্রসবের রাস্তায় ক্ষত সৃষ্টি হয়। ফলে কোনো সব পথের সঙ্গে মূত্রপথ বা মলাশয়ের একটি অস্বাভাবিক সংযোগ তৈরি হয়। ফলে নারীদের অনবরত মূত্রমল ঝরতে থাকে, যা দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করে। তাছাড়া বিষয়টি নিয়ে নারীরা বিষণ্ণতায় ভোগেন। ফলে তারা সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। নারীদের জননেন্দ্রিয়ের ফিস্টুলার আরও কিছু কারণ আছে। অস্ত্রোপচরের আঘাত, যৌন সহিংসতা, সড়ক দুর্ঘটনা, জন্মগত ত্রুটি, ক্যান্সার এবং সংক্রমণসহ ইচ্ছা বা অনিচ্ছাকৃত শারীরিক আঘাত। সঠিক সময় চিকিৎসা না করালে ফিস্টুলার কারণে যেসব দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রস্রাব ও পায়খানা ধরে রাখতে না পারা, বারবার মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ, স্নায়ুবিক ক্ষতি (ফুট ড্রপ ও হাটার সমস্যা), ক্রমাগত প্রস্রাব ক্ষরণের ফলে চামড়ায় ক্ষত ইত্যাদি। এছাড়া কিডনিতে পাথর, ঘুম ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাবের ফলে নিদ্রাহীনতা অবসন্নতা দেখা দিতে পারে বলেও জানান চিকিৎসকরা।
সভায় বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার জাতিসংঘের জনসংখ্যা বিষয়ক প্রতিনিধি ডা. অনিমেষ বিশ্বাস ও জেলা সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার।