সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
সুনামগঞ্জ শহরের ৫০ ভাগ বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে । জেলা শহরের নবীনগর, ষোলঘর, কাজির পয়েন্ট, উকিল পাড়া, বড়পাড়া, তেঘরিয়া, সাহেব বাড়ি ঘাট, বিহারি পয়েন্ট, সুলতান পুরসহ অন্যান্য এলাকার বিভিন্ন স্থানে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। সুনামগঞ্জ শহরের পশ্চিমবাজার, মধ্যবাজার, পূর্ববাজার ইতোমধ্যে পানি প্রবেশ করে দোকান পাট বন্ধ রয়েছে।
সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর সড়ক, তাহিরপুর-আনোয়ারপুর সড়ক, তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক, সুনামগঞ্জ-আমবাড়ি সড়ক, সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার সড়কের কোনও কোনও জায়গায় পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে, মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
ধর্মপাশার চামারদানি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ধর্মপাশার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসীর হাসান পলাশ জানান, চামারদানি ইউনিয়নের বন্যা আক্রান্ত ৮টি পরিবারকে একটি মাদরাসায় আশ্রয় দিয়ে তাদের চাল, ডালসহ খাবার দেয়া হয়েছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা ও থানা এলাকায় ও পানি উঠছে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমীর বিশ্বাস। তিনি বলেন, তার বাসার নীচ তলায়ও পানি উঠেছে।
তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের সোহালা গ্রামের দক্ষিণের বেড়িবাঁধ ভেঙে বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সুরমা নদী, ও অভ্যন্তরীণ নদী যাদুকাটা, নদী, চলতি নদী, খাসিয়ামারা নদী, চেলানদী, মাহারাম, রক্তি, বৌলাই ও সোমেশ্বরী নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাবিবুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২১৩ মিলিমিটার, যা শনিবারে ছিল ১৯০ মিলিমিটার। সুরমা নদীর পানি সকাল ৯টায় বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে প্রবল বৃষ্টি পাত হচ্ছে আর সেই বৃষ্টি আমাদের নদ নদীতে এসে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পৌর মেয়র নাদের বখত বলেন, সারাদিন পৌর এলাকায় ঘুরে দেখেছি শহরের অর্ধেক বাড়ি ঘরে ও দোকানে পানি উঠেছে। সরকারি ভাবে এখন ও কোন আশ্রয় কেন্দ্র খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে প্রশাসক নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেয়ার জন্য।
জেলা প্রশাসক জানান, প্রতিটি উপজেলায় আশ্রয় কেন্দ্র ও কন্ট্রলরুম খোলা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে ৪১০ মেট্রিক টন জিআর চাল ও ২৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উপজেলাগুলোয় ৪ হাজার ৭৫২টি পরিবারের মধ্যে শিশু খাদ্য সামগ্রী বিতরণ এর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।