শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ৭১ এবং ৭৫ এর ঘাতকেরা দেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায়। ওই দুস্কৃতকারী চক্র সব সময় একটা সময় বেছে নেয়। এই সময়টি তারা কেন বেছে নিয়েছে। কারণ, এখন ২০২১ সাল। ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ আমাদের জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচিত সরকার যখন প্রথম দু-আড়াই বছর পার করে দেয় তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় পরবর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতি। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখেই দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। দেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায়। সরকারের সম্মানকে ক্ষুন্ন করতে চায়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সম্প্রপ্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এসব কথা বলেন।
তিনি বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির কোন ভিত্তি নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন মৃত। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। তারা এখন জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায়। কাজেই আমাদের সচেতন হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি বলেন, ওই দলটি দাবি করছে দেশে গণতন্ত্র নেই। দেশে যদি গণতন্ত্র না থাকে তাহলে তারা গণমাধ্যমে কথা বলার এতো সময় পায় কি করে? সরকারি দলের নেতৃবৃন্দকে টেলিভশনে যতটা দেখা যায় তাদেরকেও তেমন বা তার চেয়ে বেশি দেখা যায়। যদি গণতন্ত্রই না থাকে তাহলে তারা এতো কথা বলার সুযোগ পায় কিভাবে। তারা মিটিং, সভা-সমাবেশসহ সবই করছে।
মন্ত্রী বলেন, বাইতুল মোকাররম মসজিদ আক্রান্ত হয়েছিল, পবিত্র কোরআনকে পোড়ানো হয়েছিল, পতাকায় আগুন দেয়া হয়েছিল- এগুলো ভুলে যাবেন না। এরা সবাই এক ও অবিচ্ছিন্ন। এদের শত্রু মানবতা, এদের শত্রু আমাদের স্বাধীনতা। তাই এদেরকে আমাদের রুখে দাড়াতেই হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সংবিধানে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষকে সমান অধিকার দেয় হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে স্বপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মুল চেতানাকে ভুলন্ঠিত করা হলো। এর মাধ্যমে আবার সেই পাকিস্তানি আদলে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান। যারা স্বাধীনতা বিরোধী ছিল, যুদ্ধাপরাধী ছিল তারা আবার সমাজে, রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আবার তারা প্রতিষ্ঠিত হলো। ৭১, ৭৫, ২০০৪ সালের এবং ২০১৪ সালের ঘাতকরা তারা কি এক এবং অভিন্ন নয়? এই নাশকতা, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, স্বাধীনতাবিরোধীরা এক ও অভিন্ন। সকল অপরাধীই তার একটা নমুনা রেখে যায়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই সেই একই রকম চিহ্ন আমরা দেখি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষা, স্বাস্থসহ সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে তখন তারা একাত্তর, পচাত্তরের ঘাতকরা সুখে নেই। তারা আমাদের এই মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করতে চায়। তারা আমাদের এই জয়যাত্র ও অগ্রযাত্রাকে নস্যাৎ করে দিতে চায়। সেজন্য এই চক্র এখনো অত্যন্ত তৎপর।
তিনি বলেন, দুর্গোৎসব শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নয়, এ উৎসব সার্বজনীন। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরা সবাই সেই উৎসবের ভাগীদার। এটি বাঙালির আবহমান কাল ধরে চলে আসছে। তিনি বলেন, দুস্কৃতকারীদের প্রতিহত করতে আমাদের অনেক কিছুই করার আছে।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সভাপতিত্বে এ সম্প্রীতি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সহসভাপতি ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটোয়ারী, পৌরমেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী ও পুজা উদযাপন পরিষদসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।