সৎ ইচ্ছা , কঠোর পরিশ্রম আর সময়ের মুল্য দিয়েই দেশীয় পদ্ধতিতে হাঁস পালন করে দিনাজপুরের খানসামা ভাগ্য বদল করেছেন আঃ হামিদ ও লতিফা বেগম দম্পতি। দৃঢ় মনোবল, কঠোর পরিশ্রম আর সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারলে অল্প পুঁজিতেই খুব সহজে স্বাবলম্বী হওয়া যায় তার জ¦লন্ত উদাহরণ এই দম্পতি। দুঃখের দিন শেষ হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে সুখ শান্তিতেই আছে হামিদ ও লতিফা বেগম দম্পতি।
জানা যায়, প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর লতিফা বেগমকে বিয়ে করেন আঃ হামিদ। দ্বিতীয় স্ত্রী লতিফা বেগমের অনুপ্রেরণায় ১১ বছর পূর্বে আত্রাই নদীর কোল ঘেঁষে মাত্র ২৫টি হাঁস দিয়ে হাঁসের খামার শুরু করেন খানসামা উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আঃ লতিফ। তার এই উদ্যোগে সার্বক্ষণিক পাশে রয়েছেন স্ত্রী লতিফা। মাত্র এগারো বছরের ব্যবধানে স্বামী-স্ত্রীর বিরামহীন শ্রমে হাঁসের খামারটি আজ সফলতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রতি বছরের মতই চলতি বছরে গত ৬-৭ মাস আগে বিশ হাজার টাকা দিয়ে এক হাজার হাঁসের বাচ্চা পালন শুরু করেন। কিছু হাঁসের বাচ্চা বিক্রি করে দিয়েছে । এখন তাদের খামারে হাঁসের সংখ্যা প্রায় ৩শ টি । গত ৩-৪ মাস থেকে তাদের খামারের মধ্যে দৈনিক ডিম উৎপাদন হচ্ছে একশটি। সেটি থেকেই প্রতি মাসে এক লক্ষ টাকা আয় হয়। এটি থেকে হাঁসের খাবার ও পরিচর্যা বাবদ ব্যয় হয় মাত্র ১০-১২ হাজার টাকা। এতে সহজেই তাদের যেমন ভাগ্য বদল হয়েছে তেমনি প্রশংসাও কুড়াচ্ছেন।
এই সফল দম্পতির সফলতা দেখে অনেকেই তাদের কাছে পরামর্শ নিতে খামার দেখতে আসেন।
আঃ হামিদ ও লতিফা দম্পতির সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের দুজনের সময় ও শ্রমের ফলে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা সঞ্চয় হয়েছে। যা দিয়ে পুরোনো ঋণ পরিশোধ, ইটের পাকা বাড়ি ও জমি ক্রয় করে এখন সুখের জীবন কাটাচ্ছেন।
লতিফা বেগম বলেন, আমার পুরোনো অভিজ্ঞতা ও প্রাণী সম্পদ বিভাগের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে খামার গড়েছি। যার ফলে অল্প পুঁজি ব্যয়ে লাভবান হয়েছি।
হাঁস খামারের প্রধান আঃ হামিদ বলেন, স্ত্রীর সাহস ও শ্রমের মাধ্যমে। খামারটি আজ বড় আকার ধারণ করেছে। সেই খামার থেকেই সংসার যেমন আলোকিত তেমনি হাঁসের খামার করে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরেছে। এভাবেই প্রাণী সম্পদ সেক্টরে নতুন দিগন্তের সূচনা হচ্ছে ও বেকারত্ব কমছে।
প্রতিবেশি হায়দার আলী বলেন , হামিদ আর লতিফা দম্পতির অনুপ্রেরনায় আমি হাঁসের খামার তৈরী করার চেষ্ঠা করছি । আমি ৫০টি হাসঁ দিয়ে শুরু করেছি । আশা করি স্বল্প সময়ের মধ্যেই আমি আরোও বড় আকারের হাঁেসের খামার তৈরী করা সম্ভব হবে ।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন হামিদা-লতিফা দম্পতির হাঁসের খামার নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। সফল এই খামার দেখেই অনেকেই খামার গড়তে আগ্রহী হবে সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, সকল খামারীদের যেকোনো সমস্যা ও প্রয়োজনে চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।