বাজারে ওএমএস এবং ভারত থেকে এলজি’র চাল বাজার থাকার পরও দিনাজপুরে আবারও চালের বাজার বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ম আয়ের মানুষের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
বর্তমানে প্রতি কেজিতে চালের বাজার বেড়েছে দুই থেকে চার টাকা। সাধারণত বোরো ধান বাজারে ওঠার পর চালের দাম কিছুটা সহনীয় থাকে। এবার তার ব্যতিক্রম। দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে লকডাউন, বিধিনিষেধের ফলে আয় কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে খেটে-খাওয়া মানুষ।
জেলা শহরের বাহাদুর বাজারে গিয়ে জানা যায়, বাজারে বোরো মৌসুমের নতুন চাল উঠেছে দুই মাস আগে। এরই মধ্যে দুইবার দাম বাড়ল। মানভেদে আটাশ জাতের চাল কেজিতে দুই টাকা বেড়ে ৫০-৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে ঊনত্রিশ জাতের তিন টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৭-৪৯ টাকায়। মিনিকেট চার টাকা বেড়ে ৫৮-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা, নাজিরশাইল ও অন্য জাতের চাল আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। গুটি স্বর্ণা ৪৩-৪৪ টাকার স্থলে ৪৬-৪৮ টাকা, সুমন স্বর্ণা ৪৫-৪৬ টাকার স্থলে ৫০-৫২ টাকা, রণজিৎ ৪৬-৪৮ টাকার স্থলে ৫২-৫৪ টাকা, সিদ্ধ কাটারি ৭০-৭২ টাকার স্থলে ৮০-৮৫ টাকা, জিরাশাইল ৫০-৫২ টাকার স্থলে ৫৫-৫৬ টাকা, বাসমতি ৬০-৬২ টাকার স্থলে ৭৫-৭৮ টাকায় বিক্রির কথা জানিয়েছেন দোকানদাররা। আর পাইকারি বাজারে আটাশ জাতের চাল আগে দাম ছিল প্রতি বস্তা দুই হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ২৫০ টাকা। এখন সে চাল দুই হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে চাল কিনতে আসা রোজিনা বেগম নামে এক নারী বলেন, চালের বাজার কোন ভাবেই থামেনা। কোন কারন ছাড়াই চাল ব্যবসায়ীরা চালের বাজার অস্থিতা করে রাখে । আমাদের মত নিম্ম আয়ের মানুষেরা কোথায় যাবে । তেলের দাম বৃদ্ধি মাছের দাম চালের দাম ।
চারল ক্রেতা হায়দার আলী বলেন, প্রতি বছর শোনা যায় দেশে বাম্পার ফলন হয়েছে। এ ফলন যায় কোথায়! আমি চাই, সরকার এ বিষয়টা ভেবে দেখুক। বিশেষ করে চালের দিকে। কারণ চাল থাকলে লবণ দিয়ে খেয়েও মানুষ বেঁচে থাকবে।
চাল ক্রেতা মহেশ চন্দ্র বলেন , আমাদের পুজা চলছে , এখন কোন দিকে যাব পুজার খরচ করব না চাল কিনে খাব । এক দিকে গেলে অন্য দিকে অন্ধক্রা হয়ে যায় ।
চালের খুচরা ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান বলেন, চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা আমাদের দোষারোপ করেন। কিন্তু আমরা ছোট ব্যবসায়ী; আমাদের কিছু করার নেই। পাইকারি যে দামে আমরা চাল ক্রয় করি, তা থেকে দু-এক টাকা লাভ করি।
'রহমানিয়া চালঘর'-এর স্বত্বাধিকারী আজগার আলী বলেন, মিল মালিকদের কাছ থেকে আমাদের চাল কিনতে হয়। অটো মিল মালিকদের কাছে এখন পর্যাপ্ত চাল আছে। সরকার মিল মালিকদের দিকে নজর দিলে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে।
মেসার্স খাদ্য ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী আলাউদ্দিন ব্যাপারী বলেন, চালের বাজার স্বাভাবিক আছে । সরকার ওএমএস চাল রেখেছে । এখন তো চাল কেনার মানুষ নেই । চাল ক্রেতারা দৌড়াচ্ছে ওএমএস ও এলজি;র চালের দিকে । আমার বেচাবিক্রি একে বারেই নেই । সকাল থেকে মাত্র ৩ বস্তা চাল পাইকারী বিক্রি করেছি ।