দিনাজপুরের ব্য়াতুল ফালাহ মসজিদসহ আরোও ৩ টি মসজিদে অভিযান চালিয়ে জঙ্গী সন্দেহে আটক ১১ জনের মধ্যে ৬ জনকে ১ দিনের রিমান্ড ও ৫ জনের জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছে আদালত।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ২ টার দিকে দিনাজপুর আমলী আদালত-১ এর বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ইসমাইল হোসেন, আমালী আদালত-৪ এর বিচারক শিশির কুমার বসু ও আমলী আদালত -৩ বিচারক শারমিন আক্তার এই আদেশ প্রদান করেন।
আটক ১১ জনের বিরুদ্ধে গত ১৭ই সেপ্টেম্বর দিনাজপুর আমলী আদালত-৫ এর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট লিমেন্ট রায়ের আদালতে প্রত্যেকের ৫ দিনের রিমান্ড চাইলে কোন শুনানি না হয়ে আগামী ২১ ই সেপ্টেম্বর তারিখে রিমান্ড আবেদন শুনানি করার দিন ধার্য্য করা হয় ।
দিনাজপুর আদালত পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দিনাজপুর সদর থানায় যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাদেরকে জেল গেটে জিজ্ঞাবাদ করার জন্য আর বিরল ও বোচাগঞ্জ থানায় যাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে তাদের জন্য এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে ।
এর আগে শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর ) দিনগত রাতে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে কোতয়ালি থানায় ৫ জন, বিরল থানায় ৩ জন এবং বোচাগঞ্জ থানায় ৩ন জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারায় এই মামলাগুলো দায়ের হয়েছে। প্রতিটি মামলায় গ্রেফতার ব্যক্তিরা ছাড়াও আরও অজ্ঞাত কয়েক জনকে আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে তিনটি উপজেলায় মোট ৪৭ জনকে আটক করেছিল কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। পরে তাদের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে ১৯ জনের বির“দ্ধে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত করে তারা। বাকিদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। যে ১৯ জনের বিরুদ্ধে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠে তাদের মধ্যে ১১ জনকে আসামি করে তিনটি থানায় মামলা দায়ের করা হয়। বাকি ৮ জনকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা ঢাকায় নিয়ে গেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আগেই বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুর সদর উপজেলার মহারাজার মোড়ের পাশে মেদ্যাপাড়ায় বায়তুল ফালাহ্ জামে মসজিদ থেকে ১২ জনকে আটক করা হলেও মামলা হয়েছে পাঁচ জনের নামে। তারা হলেন ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার হরিকুন্ডু গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে রেদোয়ানুল হক কাভি (২১), ঢাকা মিরপুর ১২-এর মৃত কামাল উদ্দীন মজুমদারের ছেলে সাখাওয়াত আহমেদ বিন কামাল (২৭), চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই থানার ওয়াহেদপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে মহসিন ভুঁইয়া (২৪), কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর থানার চরহটর আলগি গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে আব্দুর রহমান ওরফে আব্দুল্লাহ (২৪) এবং ঢাকার মোহাম্মদপুরের আজিজ মহল্লার পাইনিওয়ার হাউজিং কলোনির ওবায়দুল বারীর ছেলে নাফিস হাবিব (৩০)।
বিরল উপজেলার বিরল বাজার জামে মসজিদ থেকে ১৭ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে মামলা হয়েছে তিন জনের নামে। তারা হলেন– রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর দৌলাপাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে ওয়াহেদুজ্জামান (২৩), একই জেলার কাউনিয়া থানার নিজপাড়া গ্রামের জামাল উদ্দীনের ছেলে মনিরুল ইসলাম (২২) এবং নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার হাতিখানা নতুন বাবুপাড়ার আব্দুস সামাদ সাহেদের ছেলে সজল ওরফে সাব্বির আহমেদ (৩০)।
বোচাগঞ্জ উপজেলায় ৪নং আটগাঁও ইউনিয়নের বড়ুয়া গ্রামের একটি পরিত্যক্ত মসজিদ থেকে সন্দেহ ভাজন ১৩ ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে তিন জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তারা হলেন– রংপুর কোতয়ালি থানার মুন্সিপাড়ার নকিম উদ্দীনের ছেলে আবু সায়েদ হাসান ওরফে রূপম (২৮), ঢাকার শ্যামপুর থানার রামুরহাট রক্তিম জুরায়েন গ্রামের মোস্তফা খানের ছেলে মো. জুনায়েদ খান (২৫) এবং দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার বরুয়াদৌলা গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার ছেলে হুমায়ুন কবির (২৬)।
উল্লেখ্য যে গত বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে দিনাজপুর শহরের বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদ থেকে ও বিরল এবং বোচগঞ্জ ৩টি মসজিদে অভিযান চালিয়ে নাশকতা পরিকল্পনাকারী সন্দেহে বিভিন্ন বয়সি তাবলিগ জামায়াতের ৪৭ জন সাথীকে আটক করেছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা।