ঢাকা শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
  • ফরিদপুর প্রতিনিধি:
  • ২০২১-০৯-১৬ ০৫:২৫:৫৩

ফরিদপুর পরিবার পরিকল্পনা অফিসের উপ-পরিচালক মাহবুবুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির নানা অভিযোগ উঠেছে। মাহবুবুল ইসলামের নানাবিধ দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ নিয়ে ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের উদ্বর্তন কতৃপক্ষসহ দুদক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। মাহবুবুল ইসলামের বিরুদ্ধে আর্থিক নানা অনিময় ও দুর্নীতির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আবেদন জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। ফরিদপুর সদরসহ ৯টি উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপ-পরিচালক মাহবুবুল ইসলামের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির কারনে দিশাহারা অবস্থায় রয়েছেন। 

প্রাপ্ত অভিযোগ ও বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মাহবুবুল ইসলাম পরিবার পরিকল্পনা অফিস ফরিদপুরের উপ-পরিচালক হিসাবে যোগদান করেন ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। তিনি ফরিদপুরে যোগদানের পর থেকেই দুর্নীতির পাগলা ঘোড়ায় রুপান্তরিত হয়েছেন। টাকা ছাড়া তিনি কোন ফাইলে সাক্ষর করেন না এমন অভিযোগ রয়েছে বিস্তর। পরিবার পরিকল্পনা অফিসের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার এহেন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের ভয়ভীতি দেখান। প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, সদ্য অবসরে যাওয়া বেশ কয়েকজনের ভবিষ্যত তহবিলের সমাকৃত টাকা উত্তোলনের আবেদন করলে তিনি তাদের সেই ফাইল দিনের পর দিন আটকে রাখেন। যারা তাকে টাকা দিয়েছেন তাদের ফাইলে তিনি স্বাক্ষর করেছেন। যারা টাকা দিতে পারেননি তাদের ফাইল তিনি আটকে রেখেছেন। এভাবে ৫/৬ মাস ফাইল গুলো আটকে রেখেছেন। ভুক্তভোগী পরিবার কল্যান সহকারী সবিতা রানী সরকার, মীরা রানী ঘোষ, গীতা রানী গুহ, পরিবার কল্যান পরিদর্শিকা চঞ্চলা রানী পোদ্দার, আইরিন আক্তারী, অফিস সহায়ক/নিরাপত্তা প্রহরী বিধান মন্ডল, আয়া বাসনা খাতুন, মজিরন নেছাসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, শুধুমাত্র টাকা না দেবার কারনে মাহবুবুল ইসলাম তাদের পেনশনসহ আনুসাঙ্গিক ফাইল আটকে রেখেছেন। পরবর্তীতে এসব ফাইল ভুতাপেক্ষভাবে মঞ্জুর হয়। শুধুমাত্র পরিবার পরিকল্পনা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই নয়, উপ পরিচালকের এহেন অবৈধ কর্মকান্ডের শিকার হয়েছেন বিভিন্ন এনজিও প্রধানেরাও। ফরিদপুরের বেশ কয়েকজন এনজিও প্রধান অভিযোগ করে বলেন, এনজিও এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়ে থকে। অসহায় মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এনজিওরা কাজ করে থাকেন। এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে কিছু অনুদান পাওয়া যায়। এই অনুদান পাওয়ার জন্য বিভিন্ন কাগজপত্রসহ আবেদন করতে হয়। এই আবেদ নিয়ে উপ-পরিচালকের কাছে গেলে তিনি টাকা ছাড়া ফরোয়ার্ডিং দেন না। অনেকেই উপ পরিচালকের কাছে দিনের পর দিন ধর্না দিয়েও ফরোয়ার্ডিং পাননি। টাকা দিলে সই করা হবে বলে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়। কয়েকজন এনজিও প্রধান জানান, আমরা আবেদন করেছি। আমাদের আবেদন গৃহিত হবে কিনা তার ঠিক নেই। অথচ উপ পরিচালককে টাকা না দিলে তিনি ফরোয়ার্ডিং কাগজে সই করেন না। এছাড়া কেউ যদি অনুদান পান সেক্ষেতে উপ পরিচালককে ১০% দিয়ে টাকা ছাড় করাতে হয়। এসব বিষয় নিয়ে এনজিও প্রধানদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 

উপ পরিচালক মাহবুবুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারী গাড়ীটির যথেচ্ছ ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সময় গাড়ী মেরামত দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা বিল উত্তোলন করেছেন। করোনাকালীন লকডাউনের সময়ে তিনি অফিসে না থেকেও বেতন ভাতা উত্তোলন করেন। অথচ স্বাস্থ্য বিভাগের সকলের প্রতি আদেশ ছিল কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার। অভিযোগ রয়েছে, মাহবুবুল ইসলাম বিভিন্ন জাতীয় দিবস গুলো পালনে তেমন একটা আগ্রহ দেখান না। ১৫ই আগষ্ট জাতিয় শোক দিবসে তিনি জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাননি। এ নিয়েও অফিসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 

উপ-পরিচালক মাহবুবুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিময় ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন, সরকারী সম্পদ নষ্ট ও ক্ষতিসাধন করা, কাজ না করে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাত, বিভাগীয় কর্মসূচি পালনে বাঁধাগ্রস্থ করার দায়ে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পরিবার পরিকল্পনা অফিসের বিভিন্ন পর্যায়ের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি ও বেশকিছু এনজিও প্রধান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়, দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন। 
দুর্নীতির নানা বিষয় ও অভিযোগ নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা হলে উপ-পরিচালক মাহবুবুল ইসলাম বলেন, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি বলেন, আমি কোন অন্যাই কাজের সাথে যুক্ত নই। আমার অফিসের কোন কর্মচারী অর্থ নিয়ে থাকতে পারে।

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় বাবরসহ ৬ আসামি খালাস
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমানসহ সব আসামি খালাস
ইসকন নিষিদ্ধ হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: হাইকোর্ট
সর্বশেষ সংবাদ