দেশে গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণনীতি থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ফলে গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশু আজ সুরক্ষিত নয়। বেড়ে যাচ্ছে গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশু নির্যাতন। গৃহকর্মী কল্যাণ ও সুরক্ষা নীতিমালা সঠিকভাবে পালন করার আহ্বান জানান সমাজকর্মীরা।
গতকাল সোমবার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি) আয়োজিত ‘গৃহকর্মে শিশু: কতটা সুরক্ষিত’ শীর্ষক সংলাপে বক্তরা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক বেল্লাল হোসেন শেখ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সৈয়দা মুনীরা সুলতানা। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এএসডি’র কার্যনির্বাহী সদস্য ইমতিয়াজ রসুল।
সংলাপে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক নাসের ইকবাল যাদু, জেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের কর্মসূচি কর্মকর্তা নাজনীন আক্তার, সমাজসেবা কর্মকর্তা কে এম শহীদুজ্জামান, এসওএস শিশু পল্লীর পরিচালক এ. কে. এম আজিজুর রহমান, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের প্রকল্প কর্মকর্তা মো. আল-আমিন, এএসডি’র কো-অর্ডিনেটর (সিডিআর) এম এ করিম, ম্যানেজার (এম এন্ড ই) লুৎফুন নাহার কান্তা ও কো-অর্ডিনেটর (অ্যাডভোকেসি এন্ড ক্যাম্পেইন) মো. ইসহাক ফারুকী প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এএসডির ডিসিএইচআর প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা গুল-ই-জান্নাত।
আলোচকরা বলেন, গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের শ্রমিক হিসেবে কাজ করানো শুধুমাত্র দারিদ্রতা বা অশিক্ষার অজুহাত নয়, আসলে মানসিকতা। তাই আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করা প্রয়োজন। তা ছাড়া গৃহকর্মীর সাথে গৃহকর্তা এবং তাদের সন্তানদের সম্পর্কের প্রসার বাড়াতে হবে। গ্রামগঞ্জে অনেক দরিদ্র মানুষ সরকারি ভাতা সঠিকভাবে পাচ্ছে না। গ্রামের জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের এক্ষেত্রে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোররা সরকারের বিভিন্ন ক্লাবে নিজেদের যুক্ত করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে পারে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক বেল্লাল হোসেন শেখ বলেন, গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের শ্রম বন্ধে সকলের মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। সকল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আন্ত-মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করলে সকল কার্যক্রম সহজভাবে করা যাবে। গৃহকর্মী কল্যাণ ও সুরক্ষা নীতিমালা হালনাগাদের বিষয়ে শ্রম মন্ত্রণালয় কাজ করছে। আর আমাদের সম্মিলিতভাবে ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম বন্ধে কাজ করতে হবে। শক্ত আইন প্রণয়ন ও সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া জরুরী। শিশুশ্রম বন্ধে কমিউনিটি সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সকল ধর্মীয় উপসনালয়ের নেতৃবৃন্দকে এগিয়ে আসতে হবে এবং তাদেরকে শিশুশ্রম বন্ধের বিষয়গুলো প্রচার করতে হবে।