ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
বদলে গেছে দিনাজপুর খানসামা উপজেলার স্বাস্থ্য সেবা
  • দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ
  • ২০২১-০৮-২১ ০৫:৪৪:০১

চিকিৎসক, জনবল ও বরাদ্দ সংকটের মধ্যেও মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে উদ্ভাবনী কর্ম পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার কারনে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় বদলে গেছে স্বাস্থ্য সেবার মান। এতে সন্তুষ্ট হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা। 

জানা যায়, কয়েক বছর আগে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা সেবার মান ভালো না হওয়ায় হাসপাতাল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল সেই অবস্থা থেকে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার "জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা" পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিয়মিত তদারকি এবং স্থানীয় সাংসদ আবুল হাসান মাহমুদ আলী , উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সহযোগিতার কারনে সম্প্রতি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উন্নত হয়েছে সেবার মান। 

দক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য কর্মীদের স্বদিচ্ছার ফলে এই সরকারি হাসপাতাল দেশের অন্য উপজেলা হাসপাতাল থেকে বেশ কিছুটা আলাদা। হাসপাতালটি ঝকঝকে পরিষ্কার আর রয়েছে সুসজ্জিত ফুলের বাগান এবং কর্মঠ ও উদ্যমী চিকিৎসক, নার্স- মিডওয়াইফ, স্বাস্থ্য কর্মী ও স্টাফগণ। 

যার ফলে স্বাস্থ্য সেবার মানের দিক বিবেচনায় গত বছর রংপুর বিভাগের এবং বেশ কয়েকবার দিনাজপুর জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ হয় তৃণমূলের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিস থেকে জানা যায়, উপজেলার প্রায় দুই লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার জন্য ভরসা মাত্র ৫জন চিকিৎসক। জরুরী সেবা প্রতিদিন গড়ে আউটডোরে ৪-৫শ রোগী দেখা, ভর্তি রোগীদের সার্বক্ষণিক তদারকি, প্যাথলজি সেবা আর কফ ও যক্ষা পরীক্ষা, আল্ট্রা, ইসজি অভিযোগ বক্স স্থাপন এবং সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন প্রকার ঔষুধ প্রদানে স্বচ্ছতা, আইএমসিআই কর্ণার, বীর মুক্তিযোদ্ধা, অটিজম ও মাদকাসক্ত কর্ণারে বিশেষ সেবা প্রদান, টেলিমেডিসিন সেবা, স্বাস্থ্য শিক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে নিয়মিত পরিদর্শন ও নির্দেশনার মাধ্যমে তৃণমূলের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণ ও ইপিআই বিভাগের কার্যক্রমে রয়েছে প্রশংসনীয় সফলতা। 

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যতিক্রমী উদ্যোগগুলো হল প্রেগন্যান্সি ম্যাপের মাধ্যমে গর্ভবতী মায়েদের ডাটাবেজ তৈরী করে গর্ভবতী মায়েদেরকে প্রসব পূর্ববর্তী মানসম্মত এএনসি সেবা, প্রসব পরবর্তী কেএমসি ও পিএনসি সেবা দেওয়া হয় এবং বিনামূল্যে আল্ট্রা, প্রসাব ও রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, ফ্রী আয়রন আর ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট প্রদান এবং প্রতি ইউনিয়নে বৈঠকের মাধ্যমে নরমাল ডেলিভারি কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি করতে উদ্ধুদ্ধকরণ কর্মসূচী পালিত হয়। এছাড়াও প্রশংসনীয় ও কার্যকরী উদ্যোগগুলো হল গর্ভবতী মায়েদের যেকোনো প্রয়োজনে ২৪ঘন্টা হটলাইন সার্ভিস চালু, প্রসবকালীন জটিলতা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও নিরাপদ প্রসবের জন্য সারাক্ষণ নার্স-মিডওয়াইফ প্রস্তুত থাকা এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে নবজাতক শিশুদের উপহার সামগ্রী প্রদান ও শিশুদের জন্ম সনদ প্রদান করা হয়।

এতে উপজেলায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে রোগীদের আস্থা ও সেবাগ্রহীতার সংখ্যা বেড়েছে যার ফলে খানসামা উপজেলায় প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির হার শতভাগ। যার ফলে এই উপজেলায় প্রায় প্রতি মাসে প্রায় ১১০-২০ টি প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি হয়। 

সবচেয়ে ইতিবাচক দিক উপজেলা পর্যায়ের এই হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবার জন্য ২০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ও করোনা ফোকাল পারসন ডা.নারায়ণ চন্দ্র রায় জয়। তিনি আরো বলেন, এতে করোনা উপসর্গ ও করোনা রোগীরা সেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে ফিরছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা.শামসুদ্দোহা মুকুল জানান, সকলের সদিচ্ছার কারনে সেবার মানে পরিবর্তন এসেছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে সকলের সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রয়োজন। 

এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য প.প.কর্মকর্তা ডা. মো.মিজানুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে নিরলসভাবে আমরা চেষ্টা করছি তবে জনবল ও বরাদ্দ সংকট কমলে সেবার মান কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে।

বন্যা পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যা করা উচিত
টাঙ্গাইলে বুরো হাসপাতালের শুভ সূচনা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিনামূল্যে ৩০০ জন দুস্থ রোগীর চক্ষু ছানি অপারেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন