নরসিংদী জেলাজুড়ে করোনাভাইরাসের টিকার মজুত ফুরিয়ে যাওয়ায় নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রম আপাতত বন্ধ হয়ে গেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলার কোভিড ডেডিকেটেড ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে মাঝপথেই টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় টিকা না পেয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন অন্তত শতাধিক ব্যক্তি। একই পরিস্থিতি দেখা গেছে নরসিংদী সদর হাসপাতালের টিকাকেন্দ্রেও।
জেলা সিভিল সার্জন মো. নূরুল ইসলাম বলেন, জেলায় টিকার মজুত ফুরিয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, সার্বিক পরিস্থিতি জানিয়েছি। তাঁরা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করবেন। আগামী রোববারের আগে আবার স্বাভাবিক টিকাদান কার্যক্রম শুরু করতে পারব বলে মনে হচ্ছে না।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলার কোভিড ডেডিকেটেড ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতাল ও নরসিংদী সদর হাসপাতালের টিকার মজুত আর অবশিষ্ট নেই। তবে জেলার ছয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অল্প কিছু টিকার মজুত আছে। এসব হাসপাতালেও মজুত টিকার সংখ্যা ২০০-৩০০–এর বেশি নয়। এতে জেলাজুড়ে আপাতত টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
কোভিড ডেডিকেটেড ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নারী-পুরুষ মিলিয়ে অন্তত পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি টিকা নিতে এসেছেন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত তিন শতাধিক ব্যক্তিকে টিকা দেওয়া হয়। এরপরই টিকাপ্রত্যাশীদের টিকা না থাকার বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়। পরে তাঁরা টিকা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যান।
টিকা নিতে আসা সানজিদা ইসলাম বলেন, টিকা ফুরিয়ে যাওয়ায় সপ্তাহখানেক পরে এসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। তাঁর মতো অন্তত ১৫০ জন মানুষ টিকা না পেয়ে ফিরে গেছেন।
হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরওমও) এ এন এম মিজানুর রহমান বলেন, জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে আজ সিনোফার্মের মাত্র ৩০০ টিকা পেয়েছেন। এর মধ্যে ২০৫ জনকে প্রথম ডোজ ও ৯৫ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া ১০ জনকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এরপরই টিকা শেষ হয়ে যায়। আপাতত টিকার মজুত ফুরিয়ে গেছে, আবার হাতে পেলে টিকাদান শুরু হবে।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন জেলাজুড়ে টিকা নিতে আসা আগ্রহী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এ পর্যন্ত জেলায় ২ লাখ ২৮ হাজার ৭০০ ডোজ টিকা এসেছে। এর মধ্যে সিনোফার্মের ১ লাখ ১৩ হাজার ২০০ ডোজ এবং কোভিশিল্ডের ১ লাখ ১৫ হাজার ৫০০ ডোজ। এ ছাড়া ১ লাখ ৫৯ হাজার ৪৩ জনকে প্রথম ডোজ এবং ৪৮ হাজার ২৩৪ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় ২ লাখ ৭ হাজার ২৭৭ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহে ৭৭ হাজার ১৭৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। টিকার অতিরিক্ত চাহিদা বাড়ায় মজুত ফুরিয়ে গেছে। আবার টিকা এলে টিকাদান কার্যক্রম চালু হবে।