একাকীত্বের কারণে মানসিক অবসাদে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, সময় কাটাচ্ছেন নামাজ পড়ে আর টিভি দেখে।
অসুস্থতার চেয়ে একাকীত্বের কারণে মানসিক অবসাদই এখন সবচেয়ে বেশি ঘিরে ধরেছে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে। সাজা স্থগিত করে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়ে প্রায় ১০ মাস ধরে গুলশানের ভাড়া বাড়িতে থাকলেও করোনা মহামারি তাকে করেছে নির্জনাবাসী। সব মিলে কেমন আছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী? কীভাবেই বা কাটছে তার সময়?
গুলশানের ভাড়া বাড়ি ফিরোজার দেয়ালের ওপারেই আছেন দুটি মামলায় দণ্ডিত, বিএনপি চেয়ারপার্সন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সরকারের নির্বাহী আদেশে নানা শর্ত মেনে নিয়ে ২৫ মার্চ থেকে আছেন গুলশানের ভাড়া বাড়ি এই ফিরোজাতে। করোনা সংক্রমণের শঙ্কায় দু-চারজন স্বজন আর দুএকজন নেতা ছাড়া ১০ মাসে কারো দেখা পাননি তিনি। আজ অব্দি ফিরোজা থেকে বেরও হননি একবারের জন্য। শর্তের বেড়াজালে আবদ্ধ তিনি। নয়তো থাকতে হতো কারাগারের চার দেয়ালের ভেতরে। দলীয় প্রধানের অনুপস্থিতি দলের নেতারা দেখছেন অন্যভাবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ম্যাডামের অভিমান থাকতে পারে আবার চেতনার যন্ত্রণাও থাকতে পারে। উনি অসুস্থ একথাটা মিথ্যা না। এখন এটা মানুষের সঙ্গে সঙ্গে আমরাও অনুভব করি, উপলব্ধি করি। কিন্তু আমরা উনাকে সরাসরি দেখি নাই,উনার কন্ঠও শুনি নাই।
কেমন আছেন খালেদা জিয়া জানালেন সম্প্রতি দেখা করে আসা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, উনাকে আজ একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তার কার্যক্রমও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তার চিকিৎসার সীমাবদ্ধতাও সৃষ্টি করা হয়েছে। এভাবে কেউ ভালো থাকতে পারে না। এমন অবস্থায় থাকলে যেকোন মানুষই বিষন্নতায় ভুগবেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খালেদা জিয়ার পরিবারের এক সদস্য জানান, ফিরোজাতেও অনেকটা বনবাসের মতো আছেন খালেদা জিয়া। আর তাই ধীরে ধীরে মানসিক অবসাদ ঘিরে ধরছে তাকে। এজন্য তারা উদ্বিগ্ন।
আর ফিরোজায় আসা-যাওয়া করা বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন জানান, নামাজ পড়ে, টিভি দেখে ও খবরের কাগজ পড়ে সময় কাটাচ্ছেন তাদের নেত্রী।
ইতোমধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় বেগম জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেয়াও সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তার পরিবার ও দল।