ঢাকা রবিবার, মে ৫, ২০২৪
নিত্যপণ্যের দামে ভোক্তার নাভিশ্বাস
  • নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • ২০২০-১১-১২ ২২:২৭:১০

পেঁয়াজের বাজার দুই মাস ধরে লাগামহীন। খুচরা বাজারে পণ্যটির দাম প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৯৫ টাকা, যা তিন মাস আগেও ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এ সময়ে ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে বেড়েছে চালের দাম।

পেঁয়াজের বাজার দুই মাস ধরে লাগামহীন। খুচরা বাজারে পণ্যটির দাম প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৯৫ টাকা, যা তিন মাস আগেও ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এ সময়ে ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে বেড়েছে চালের দাম।

সম্প্রতি মিলারদের সঙ্গে খাদ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পরও চালের দাম কমেনি। বরং সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও বাড়তে শুরু করেছে। দরজায় শীত কড়া নাড়লেও বাজারে সবজির দামে আগুন।

পর্যাপ্ত সরবরাহের পরও রাজধানীর খুচরা বাজারে একাধিক সবজি কেজিতে ১০০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে এসব নিত্যপণ্য ক্রয়ে ভোক্তার নাভিশ্বাস বাড়ছে।

অন্যদিকে ময়দার বাজারেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ময়দার দাম কেজিতে ৩ টাকা বেড়েছে। ভোজ্যতেলের মধ্যে খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েল দুই মাসের ব্যবধানে প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ১০ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে।

তাছাড়া ডাল, দারুচিনি, ধনে ও তেজপাতা বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে এসব খাদ্যপণ্য কিনতে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ভোক্তা।

ভারত রফতানি বন্ধ করে দেয়ার পর ক’দিন আগে রাজধানীতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন জেলায় পণ্যটি সর্বোচ্চ ১৩০ টাকা দরেও বিক্রি হয়। তবে কয়েকদিন ধরে পেঁয়াজের দাম কমছে।

কিন্তু এখনও পেঁয়াজ ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নয়াবাজার, শান্তিনগর কাঁচাবাজার

ও রামপুরা বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দিন প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০-৯৫ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৭০ টাকা কেজি।

এদিকে মিলারদের কারসাজিতে চালের বাজারও অস্থির। বৃহস্পতিবার রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দিন প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৫৮ টাকা, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৫৫ টাকা।

প্রতি কেজি নাজিরশাল বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৬৭ টাকায়, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৬৪ টাকা কেজি। বিআর-২৮ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৫৬ টাকায়, যা আগে ছিল ৫৪ টাকা কেজি।

এছাড়া মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৪৫ টাকায়, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল কেজি ৪৩-৪৪ টাকা।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বিভিন্ন অজুহাতে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। তারা একবার দাম বাড়ালে কমানোর কোনো উদ্যোগ নেয় না।

বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের একাধিক সংস্থা থাকলেও সেগুলো তেমনভাবে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে না। যার কারণে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস বাড়ছে।

এদিকে বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম ঊর্ধ্বমুখী। কাঁচাবাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা। প্রতি কেজি শিম মানভেদে বিক্রি হয়েছে ৮০-১২০ টাকা।

গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি শসা বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকা। বরবটি বিক্রি হয়েছে ৮০-১০০ টাকা। এছাড়া বেগুন ৮০-১০০ টাকা, পটল ৬০-৮০ টাকা, ঝিঙা ৭০-৮০ টাকা, কাকরোল ৬০-৭০ টাকা, প্রতি কেজি কচুর লতি বিক্রি হয়েছে ৭০-৭৫ টাকা। এছাড়া প্রতি পিস লাউ ৭০-৮০ টাকা।

শীতের আগাম সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হয়েছে ৩৫-৫০ টাকায়। আর প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ২২০-২৫০ টাকা। এছাড়া খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকা।

রাজধানীর একাধিক খুচরা বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ৯৮-১০০ টাকা। পাম অয়েল সুপার প্রতি লিটার বিক্রি হয়েছে ৯০-৯৪ টাকা। পাশাপাশি প্রতি কেজি বড় দানার মসুর ডাল ৮০-৮৫ টাকা, মাঝারি দানা ১০০-১০৫ ও ছোট দানা মসুর ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১১৫-১২০ টাকা।

এছাড়া প্রতি কেজি দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা, যা সাত দিন আগে ছিল ৪৫০ টাকা। প্রতি কেজি ধনে বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা, যা সাত দিন আগে ছিল ১২০ টাকা। প্রতি কেজি তেজপাতা বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা, যা সাত দিন আগে ছিল ১২০ টাকা।

কারওয়ান বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রাকিব আহমেদ বলেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ে আমরা এমনিতেই কাবু হয়ে আছি। এর মধ্যে চালের দামও বেড়েছে। বাদ যায়নি সয়াবিন তেলও। বাড়তি দামের কারণে সবজিতে হাতই দেয়া যায় না।

সবগুলো সবজির দামও চড়া। আমরা চাই বাজার তদারকি করে দাম কমানো হোক।

নয়াবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা হায়দার বলেন, বাজারে প্রত্যেকটি নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে জীবনযাপন করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। একটি পণ্য কিনলে আরেকটি কেনার টাকা থাকছে না। মাস শেষে যে বেতন পাই তা দিয়ে সংসারের জরুরি খরচ বাদ দিয়ে খাবারের জন্য যে টাকা রাখা হয়, তা দিয়ে পুরো মাস চলতে পারছি না।

জানতে চাইলে বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল জব্বার মণ্ডল বলেন, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে অধিদফতরের মহাপরিচালকের নির্দেশে সারা দেশে বাজার তদারকি করা হচ্ছে। কোনো অনিয়ম পেলে সঙ্গে সঙ্গে ভোক্তা আইনে শাস্তি দেয়া হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু জন্মেছিল বলেই জন্মেছে এ দেশ -হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি
অপ্রতিরোধ্য বাজার সিন্ডিকেট: মজুতের শাস্তি আটকে আছে বিধিতে
ডাইফ সেবা সপ্তাহ শুরু আজ
সর্বশেষ সংবাদ