বাঙালির রসনার আস্বাদনে তরকারিসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত অন্যতম মসলা জিরা। মাংস বা মাছের ঝোল সুস্বাদু করার অন্যতম অনুষঙ্গ জিরা বাটা।
বাংলাদেশিদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ এ মশলাটি পার্শ্ববর্তী ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
এবার সেই জিরা চাষ শুরু করেছেন সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের কৃষক মাহবুবুল ইসলাম পলাশ।
সিরাজগঞ্জে প্রথমবারের মতো তিনি বারি-১ জাতের জিরার আবাদ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে বীজ বপনের জন্য জমি প্রস্তুত করা হয়েছে।
এদিকে মশলা চাষের একটি প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের জিরাসহ বিভিন্ন মশলা চাষে উদ্বুদ্ধ করার কথা জানিয়েছে কৃষি অফিস।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের ভদ্রঘাট গ্রামের জাতীয় কৃষি পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষি উদ্যোক্তা মাহবুবুল ইসলাম পলাশ বাড়ির পাশের ১০ শতক জমিতে জিরা চাষ শুরু করেছেন।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে তিনি জিরার বীজ বপন করেছেন। পলাশের জিরা চাষের খবর শুনে আশপাশের কৃষকরাও দেখতে আসছেন।
কৃষক মাহবুবুল ইসলাম পলাশ বলেন, আমি ভারতে গিয়ে জিরার চাষাবাদ দেখেছি। তবে সেখানে ভালো করে শিখতে পারি নাই। পরে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় সাইফুল ইসলাম নামে এক কৃষকের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি গত বছরও জিরা চাষ করে সফল হয়েছেন। তার কাছ থেকে জিরা চাষের যাবতীয় কৌশল শিখে এসেছি। এরপর বগুড়ার মসলা গবেষণা থেকে দুই হাজার টাকায় ৪০০ গ্রাম জিরার বীজ এনে নিজের বাড়ির পাশের ১০ শতক জমিতে বপন করেছি। এক সপ্তাহে আগে বীজ ফেলেছি। ইতোমধ্যে অঙ্কুর গজিয়েছে। আরও তিন-চারদিন পর গাছগুলো বড় হয়ে দৃশ্যমান হবে। প্রায় চার মাস পর ফসল ঘরে তোলা যাবে। ফলন যদি ভালো হয় ২০ কেজির মতো জিরা হবে যা দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব।
পলাশ আরও বলেন, সফলতা পেলে তিনি আরও অধিক জমিতে জিরা চাষ করবেন। পাশাপাশি আগ্রহী কৃষকদেরও সহযোগিতা করবেন। আগ্রহী কৃষকদের বীজ সরবরাহ করার পাশাপাশি কৌশল শেখানোর চেষ্টা করবেন বলে তিনি জানান।
কামারখন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন চন্দ্র বর্মণ জানান, নতুন ফসল হিসেবে মাহবুবুল ইসলাম পলাশ পরীক্ষামূলকভাবে জিরা চাষ করেছেন। তার জিরা চাষ কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক নজরে রেখেছে। আমরা শেষ পর্যন্ত এটার ফলন কেমন হয় সেটা দেখব। তারপর অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করব।
সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ আহসান শহীদ সরকার জানান, আমাদের মশলা ফসল চাষের একটি প্রকল্প আছে। সেই প্রকল্পের আওতায় জিরা, দারুচিনি, বস্তায় আদা, হলুদ চাষ সম্প্রসারণে কাজ করা হচ্ছে। সিরাজগঞ্জে এখন পর্যন্ত জিরা চাষ হয় নাই। বগুড়ায় সফল হয়েছেন এক চাষি। সিরাজগঞ্জ থেকে আমরা গত বৃহস্পতিবার সেখানে ৩০ জন চাষিকে নিয়ে গিয়েছিলাম। সরেজমিনে তাদের জিরা চাষের পদ্ধতি দেখানো হয়েছে। সেখান থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে পলাশ জিরা চাষ শুরু করেছেন। জিরা খরা এলাকার ফসল। বৃষ্টি হলেই নষ্ট হয়ে যায়। শুকনো জায়গায় বেলে দোআঁশ মাটিতে জিরা ভালো হয়।
প্রসঙ্গত, মাহবুবুল ইসলাম পলাশ একজন কৃষি উদ্যোক্তা। তিনি বাংলাদেশের হারিয়ে যাওয়া বিরল সব বৃক্ষ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করেন। তার বাগানে ৩৪০টিরও বেশি বিরল প্রজাতির বৃক্ষ রয়েছে। তিনি জাতীয় কৃষি পুরস্কারসহ একাধিক পুরস্কার অর্জন করেছেন।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357
News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com