পটুয়াখালী বাস টার্মিনালে ভোগান্তি চরমে, সড়কে যানজট বাড়ছে দুর্ঘটনা
এইচ এম মোজাহিদুল ইসলাম নান্নু : ||
২০২৪-১১-২৭ ০৪:০৯:০৪
পটুয়াখালী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের বরিশাল -কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশেই পটুয়াখালী বাস টার্মিনালটি অবস্থিত। বাস টার্মিনালের বেহাল দশায় মহাসড়কে থামিয়ে নেওয়া হচ্ছে যাত্রী দিনদিন সড়কে বাড়ছে দুর্ঘটনা। বাস কাউন্টারের সামনের অংশ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। এতে এই বাসস্ট্যান্ড দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন হাজারো যাত্রীরা। বাসস্ট্যান্ডে পানি জমে থাকায় বাসমালিক, চালক, পরিবহনশ্রমিকেরাও দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কের পাশে দুএকর জমির ওপর এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০০৩ সালে বাস টার্মিনালটি নির্মাণ করে। পরে এটি পটুয়াখালী পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং পৌর কর্তৃপক্ষ এটি প্রতিবছর ইজারা দেয়। পটুয়াখালী বাস টার্মিনাল থেকে পটুয়াখালীর অভ্যন্তরীণ রুটসহ বরিশাল, বরগুনা ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাত্রীরা যাতায়াত করেন। ঝড়-বৃষ্টি হলেই তাঁদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বাস টার্মিনালটিতে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষাকালে এখানকার পানি অপসারণ হতে পারে না। এতে সৃষ্টি হয় অসংখ্য খানাখন্দের। পুরো বাস টার্মিনালটি ছোট-বড় অসংখ্য ডোবায় পরিপূর্ণ। এতে যাত্রীদের বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের ভোগান্তি বেশি হচ্ছে।
এছাড়াও বাস টার্মিনালের টয়লেটগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাস টার্মিনালটির এমন দুর্দশা যেটা কেউ দেখলে মনেই করবে না যে এটি একটি জেলা শহরের বাস টার্মিনাল। প্রবেশদ্বারে রয়েছে কাদামাটি আর জলাবদ্ধতা শুধু তাই নয় এটিকে দেখতে কিছুটা ভূতের বাড়ির মতো মনে হয়। একটু সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে যায় পুরো টার্মিনাল এলাকার ফাকা জায়গাটুকু এ কারনে মহাসড়কে পাশে বাস গুলো টিকিট কাউন্টার করে সেইখানে বাস রাখছেন চালকরা। এতে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট বাড়ছে দুর্ঘটনা।
যাত্রী মো:তামিম বলেন,আমি প্রতি সপ্তাহে ৪ দিন ক্রিকেট এর অনুশীলন করতে গলাচিপা থেকে পটুয়াখালী আসি। এই বাস টার্মিনালটির এমন দুর্দশা যে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে কাদার মধ্যে এমনকি পানিতে। আমি মনে করি দ্রুত এই বাস টার্মিনালটি পূননির্মাণ করা হোক।
পটুয়াখালী–বরিশাল-কুয়াকাটা রুটে চলাচলকারী বাসচালক আমিন মুন্সি বলেন , আমাদের এই বাস টার্মিনাল এর কারনে প্রতিমাসে গাড়িতে হাজার হাজার টাকার কাম করাইতে হয় গাড়ির । টার্মিনালে পানি জমে থাকায় শুধু যাত্রীরাই না , বাসচালক ও পরিবহনশ্রমিকেরা আছে ব্যাপক দুর্ভোগে।
এ সময় ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা কাওসার চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি বলেন, ভাই কি আর বলবো যাইতেছি তো কুয়াকাটা শুনেছি পটুয়াখালী অনেক উন্নত শহর কতোটা উন্নত শহর বাস টার্মিনাল এর অবস্থা দেখেই বোঝা যায়। এটা বাস টার্মিনাল নাকি আরেকটি সমুদ্র সৈকত বুঝতে পারছি না।
এ বিষয়ে জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক খন্দকার ইমাম হোসেন নাসির বলেন , শ্রমিক এবং মালিক ওখানে গাড়ি পরিচালনার মতো কোনো পরিবেশ নেই।যেহেতু টার্মিনালটি পৌরসভার। দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা পৌরসভার সাথে বার বার যোগাযোগ করা সত্বেও অদ্যাবধি তাদের কোনো কার্যক্রম আমরা দেখছি না বাস টার্মিনালটি মনে হচ্ছে বিলের মতো হয়ে গেছে সেখানে হাটু সমান পানি কোনোরকম পরিবহন বাস আমাদের বাস ওখানে যেতে পারে না। যাত্রীরা প্রচন্ড বিরম্বনার ভিতরে আছে। ওখান থেকে বাস পরিচালনা করা সম্ভব নহে অনতিবিলম্বে পটুয়াখালী বাস টার্মিনালটি সংস্কার করে পরিবহন ব্যবহারউপযোগী করে যাতে মহাসড়কে যানজট না হয়।
আজকে বাস টার্মিনালটি খারাপ থাকার কারনে সমস্ত পরিবহনগুলো আমাদের ইন্ট্রারনাল রোডের যে গাড়িগুলো রাস্তায় অবস্থান করে এতে দুর্ঘটনা কবলিত হচ্ছে প্রতিদিন অটোরিক্সার সাথে দুর্ঘটনা ঘটছে ,সাধারন গাড়িতে দুর্ঘটনা কবলিত হচ্ছে এখান থেকে আমরা মুক্তি চাই । আমি পৌরসভার প্রশাসক মহোদয়কে বিনয়ের সাথে বলবো আপনি বাস টার্মিনালটির পরিদর্শন করে বাস টার্মিনালটির সংস্কার এর ব্যাবস্থা নিবেন।
পটুয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন আরজু বলেন, এডিবির অর্থায়নে পটুয়াখালী তে একটি আধুনিক বাস টার্মিনাল নির্মানের যে পরিকল্পনা সেটি একেবারে বাস্তবায়নের কাছাকাছি চলে এসেছে। ইতিমধ্যে একটি স্থাপত্যনন্দন নকশা প্রনয়ন করা হয়েছে। আমরা হয়তো কয়েকদিনের মধ্যে প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ে এটি নির্মাণের জন্যে যে প্রক্রিয়া সেটির জন্য আমরা প্রেরন করব। এটি অনুমোদন হলে আমরা দরপত্র অহবান করব। তবে বর্তমানে যে বাস টার্মিনালটি খানাখন্দে পরিনত হয়েছে আমরা এটিকে নিরষনের জন্যে সাময়িক সময়ে যাতে এই দূর্ভোগটা লাঘব করা যায় এর জন্য কিছু মেরামত কাজ আমরা শুরু করব আমাদের প্রশাসক মহাদয়ের সাথে কথা হয়েছে এবং বাস মালিক সমিতির সাথেও আমাদের কথা হয়েছে আমরা কয়েকদিনের মধ্যেই এই বাসটার্মিনালে আপাতত যাতে চলাচল উপযোগী থাকে এর স্বল্পমেয়াদী কার্যক্রম আমরা গ্রহণ করব।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357