’দ্রব্যমূল্যে কমাতে সিন্ডিকেট ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে হবে’

মজিবুর রহমান খান: || ২০২৪-১০-১৫ ০৭:৫৫:৫৩

image

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ ছিল মজলুম এবং রাস্তায় যিনি ভিক্ষা করতেন তিনিও মজলুম। কারণ ওই সব ভিক্ষুককে চাঁদা দিতে হতো গুন্ডাদের কাছে। সারাদিনের ভিক্ষার টাকা দিয়ে সংসার চলতো না। কারণ ৩০ টাকার পেঁয়াজ ৩০০ টাকায় কিনতে হতো। এ দুষ্ট সিন্ডিকেট করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রী থেকে শুরু করে তার চেলা চামুন্ডারা। ৫ আগস্ট আমাদের ছেলেরা নতুন করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। কিন্ত দূর্ভাগ্যবশত এখনো সে সিন্ডিকেট ভাঙ্গা সম্ভব হয়নি। দ্রব্য মূল্যের লাগাম টানতে হলে সিন্ডিকেট ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে হবে।

 

 মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্ত মঞ্চে  জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ. টি. এম. মাসুম।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতের আমীর গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মলনে বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা ও কুমিল্লা-নোয়াখালী অ লের টিম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা ও কুমিল্লা-নোয়াখালী অ লের টিম সদস্য সাবেক জেলা আমীর অধ্যক্ষ কাজী নজরুল ইসলাম খাদেম, জেলা নায়েবে আমীর কাজী ইয়াকুব আলী, জেলা সেক্রেটারি মুহা. মোবারক হোসাইন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন ডাঃ নোমান মিয়া, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম ভূইয়া প্রমুখ। 

 

কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আরো বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছর একটি দলের ওপর যে রকম জুলুম করা হয়েছে বাংলাদেশের অন্য কোনো দলের ওপর সে জুলুম করা হয়নি। কিন্তু আমরা আগেই বলেছি আমরা কারো ওপর প্রতিশোধ নেব না। কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে যে অপরাধ করেছেন তাকে তার অপরাধের শাস্তি পেতে হবে। আমরা কেউ আইন হাতে তুলে নেব না।

 

তিনি বলেন, আমরা বৈষম্যহীন ও শোষনমুক্ত একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা একটি পরিপূর্ণ বিপ্লবের স্বপ্ন দেখি। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই, যে বাংলাদেশে নারী, পুরুষ, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে কোন মানুষ তার ন্যায্য নাগরিক অধিকার থেকে বি ত হবেনা। বিভিন্ন জাতি ধর্মের মানুষ মিলেমিশে সামাজিক সম্প্রীতি  বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে একটি অহিংসমূখ সমাজ গড়ে তুলবে- আমরা সে সমাজের স্বপ্ন দেখি। বিচার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা এমন একটি সমাজ চাই, যে সমাজে একজন বিচার প্রার্থীকে আদালত প্রাঙ্গনে বিভিন্ন হয়রানী হতে হবে না। কোন বিচারক তার আসনে বসে আল্লাহকে ছাড়া আর কোন রাষ্ট্রশক্তিকে পরোয়া করবে না। রাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী বিচার কার্য পরিচালনা করবে। কোন বিচারক ঘুষ খায়-এ লজ্জাজনক কথা আমরা আর শুনতে চাই না। আমরা এমন একটি বিচার ব্যবস্থা চাই, যে বিচার ব্যবস্থায় উচু নিচু কাউকে মাপা হবে না। আমীরে জামায়াত বলেন, আমরা এমন একটি দেশ চাই, যে দেশ অন্য কোন শক্তি বা দেশের অধীনতা মেনে নেবে না। পৃথিবীর অন্য দশটি দেশ যেমন মর্যাদার সাথে বিশ্বের সামনে মাথা উচু করে দাড়ায়,  বাংলাদেশও তার শির উঁচু করে দাড়াবে ইনশাআল্লাহ। বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে, কিন্তু কোন প্রভূ আমরা মেনে নেব না। কেউ আমাদের প্রভুত্ব করতে আসলে জাতি তার সঠিক জবাব বুঝিয়ে দেবে।

 

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে কিছুদিন আগে সরকারি উদ্যোগে আশ্রয়ন প্রকল্প নেয়া হয়েছিল। কোন এক জায়গায় তৈরি করার আগেই ঘর ভেঙ্গে পড়েছিল। জনগণের চোখে ধুলা দিয়ে সস্তা জনপ্রিয়তা নেয়ার জন্যই তা করা হয়েছিল।

 

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ.টি.এম. মাসুম বলেন, স্বৈরাচারি হাসিনা সরকার বাংলাদেশকে বৃহত্তর কারাগার বানিয়ে মানুষের সব অধিকার হরন করে নিয়েছিল। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছি।

 

তিনি বলেন, ইসলাম হচ্ছে আমাদের জীবনের একমাত্র  আদর্শ। আমাদের ব্যাক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক,  রাজনীতি ও অর্থনীতিসহ জীবনের অংশেই ইসলাম ছাড়া অন্য কোন আদর্শ মানা যাবে না। আর পূর্নাঙ্গ ইসলাম মানার একমাত্র ক্ষেত্রে হচ্ছে ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা। সেকুলার বা অন্য কোন মানব রচিত আদর্শে গড়া রাষ্ট্র ব্যবস্থায় থেকে পরিপূর্ণভাবে ইসলাম মানা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, সেকুলারপন্থিরা অপপ্রচারের মাধ্যমে  মানুষের মনে ইসলাম ফোবিয়া ঢুকিয়ে দিয়েছে। জামায়াতের কর্মীদেরকে উন্নত চরিত্র ও সুন্দর ব্যবহার দিয়ে সেই ফোবিয়া দূর করতে হবে।

 

উল্লেখ্য যে, কর্মী সম্মেলন শেষে আমীরে জামায়াত ডা: শফিকুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী জামেয়া ইউনুছিয়া মাদরাসায় হেফাজত ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান ও জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মোবারক উল্লাহ সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। বড় হুজুর খ্যাত আল্লামা সিরজুল ইসলামের (রাহ.) ও ফখরে বাঙ্গাল হুজুরের কবর জিয়ারত করেন। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর কমিউনিটি সেন্টারে জেলা জামায়াতের রোকন সম্মেলনে যোগ দেন।

Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357

News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com