ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানার কর্মচারি বোরহান উদ্দিন বাহার হত্যা মামলায় তার ‘বন্ধু’ দেলোয়ার হোসেন (৪৪) কে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে অভিযুক্তকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়। বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দায়রা জজ শারমিন নিগার এ রায় দেন।
নিহত বোরহান উদ্দিন বাহারের বাড়ি ছিল চাঁদপুর জেলার কচুয়ায়। তিনি সার কারখানায় পিয়ন পদে চাকরির পাশাপাশি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার কাদলা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের দুইবারের ইউপি সদস্য ছিলেন। সাজা হওয়াভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা (হকার) দেলোয়ার হোসেন ঢাকার হাজারীবাগের বাসিন্দা। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রায়ের সময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতের নির্দেশে তাকে ইতিমধ্যেই জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার নথিপত্র ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এন্ড কেমিক্যাল কোম্পানী লিমিটেড (এএফসিসিএল) এর কোয়ার্টার থেকে বোরহান উদ্দিন বাহারের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় নিহতের ছেলে আব্দুল্লাহ ফারুক অজ্ঞাত আসামী করে আশুগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশি তদন্তে দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৪ জানুয়ারি তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় দেলোয়ার।
দেলোয়ার তার জবানবন্দিতে জানায়, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর বোরহান উদ্দিন বাহারের কাছে বেড়াতে আসেন তিনি। ২৯ ডিসেম্বর রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে বোরহান উদ্দিন বাহার ব্যাংকের চেকের কাজ করছিলেন। ভোরে কাজ বন্ধ করার জন্য বলে দেলোয়ার।এ সময় বোরহান খারাপ আচরণ করলে দেলোয়ার তাকে ধাক্কা দেয়। এতে বোরহান খাটের সঙ্গে ধাক্কা খায়। পরে বোরহান এগিয়ে এলে তাকে আবার ধাক্কা দেওয়া হয়। এতে ঘরের দেওয়ালে সঙ্গে আঘাতে বোরহান মারা যান। বোরহানের মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে কম্বল ও কাঁথা দিয়ে মুড়িয়ে দরজায় তালা দিয়ে পালিয়ে যায় দেলোয়ার।