ডোমার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

নুর আলম, নীলফামারী: || ২০২৪-১০-০১ ০৯:০০:৩৫

image

 নীলফামারী ডোমার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে কলেজের বিভিন্ন তহবিল হতে লাখ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। 

শিক্ষার্থীদের সাথে অসদাচারণ এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে পাঠানোর জন্য অর্থ গ্রহণ এবং ভ্যাটের টাকাও আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

২০২৩ সালের পহেলা আগষ্ট ডোমার সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন একেএম সিদ্দিকুর রহমান। যোগদানের ১৩মাসের মাথায় লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। 

সুত্র জানায়, কলেজের ব্যয় নিবার্হের জন্য ২৩ টি ফান্ড রয়েছে। বিভিন্ন তহবিল হতে নিয়ম নীতি ছাড়াই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজেই(অধ্যক্ষ) রিকুইজিশন দিয়ে অর্থ উত্তোলন করে লোপাট করে করেছেন। 

কলেজের অত্যাবশ্যকীয় কর্মচারী ফান্ড থেকে দুটি চেকের মাধ্যমে ২লাখ ৬০হাজার টাকা, শিক্ষা সফর না করেও দুটি চেকের মাধ্যমে ৪৯হাজার টাকা, উন্নয়ন তহবিল হতে ৩লাখ ২২হাজার, বিবিধ ফান্ড হতে ২লাখ ২৫হাজার টাকা, নাম মাত্র ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করে অভ্যন্তরীণ ও বহিঃ ক্রীড়া তহবিল হতে ১লাখ ৭৪হাজার ৫০০ টাকা, লাইব্রেরী তহবিল হতে লাইব্রেরী কার্ড না করে ৪১হাজার ৫০০ টাকা, মসজিদ ফান্ড হতে ৯৪হাজার ৫০০ টাকা, রোভার হতে ৬০হাজার টাকা, বিজ্ঞান ক্লাব হতে ৪৯হাজার টাকা, সেমিনার তহবিল হতে ৪৯হাজার টাকা, ম্যাগাজিন তহবিল হতে ম্যাগাজিন না করেই ৩৩হাজার ৫০০ টাকা, ধর্মীয় তহবিল হতে ১০হাজার টাকা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি তহবিল হতে ১৫হাজার টাকা এবং বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ না করেও ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে লোপাট করেন অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান।  
এছাড়াও রি-টেক পরীক্ষার নামে ২০২৩-২০৪২৪ শিক্ষা বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৪৫হাজার টাকা উত্তোলন করে পকেটস্থ করেন তিনি। 

সুত্র জানায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হলে ১৭জুলাই হতে কলেজের শ্রেণি কার্যক্রম অনির্দষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। তিনি জুলাই-আগস্ট মাসে ঘন ঘন মিটিং দিয়ে শিক্ষক ও কর্মচারীদের হয়রানী করেন এবং ১৮ জুলাই হতে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত ৪২ দিনে কলেজের বিভিন্ন ফান্ড হতে ছয় লাখ টাকার বেশি উত্তোলন করে লোপাট করেন।   

অধ্যক্ষের দায়িত্বকালীন পাবলিক পরীক্ষা ও অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় অতিরিক্ত খরচ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ এবং শিক্ষক ও কর্মচারীদের সম্মানী ও পারিতোষিক কম দেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

এছাড়াও পারিতোষিকের শতকরা ১০ টাকা উৎসে আয়কর হিসেবে কেটে নিলেও তা সরকারি কোষাগারে জমা না করার অভিযোগ রয়েছে। 
২০২৩-২৪ সালের বই ক্রয়ের ২৫হাজার টাকা উত্তোলন করে বই ক্রয় না করে অত্মসাত করেন তিনি। 
এছাড়াও কলেজ গেট স্থাপনের জন্য ২০লাখ টাকা বরাদ্দ এলেও গেট স্থাপন করতে পারেননি তার একঘুয়েমির কারণে। জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ উঠায় প্রধান ফটক স্থাপন করতে পারেন নি তিনি। এনিয়ে আদালতে মামলাও চলছে। 

অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের জন্য শিক্ষকদের নাম আসলে প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহনের অনুমতি না দিয়ে হয়রানি করে থাকেন এক্ষেত্রে অর্থের বিনিময়ে প্রশিক্ষণে অংশ নেয়ার জন্য নাম প্রেরণ করে থাকেন। 

এদিকে কলেজের ফটক সংক্রান্ত মামলায় আদালতে হাজিরা দেয়ার নাম করে গত ১৭ সেপ্টেম্বর কলেজ তহবিল থেকে ১৮ হাজার এবং পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন ঘিরে নাম মাত্র কর্মসুচি দিয়ে ১০ হাজার উত্তোলন করেন ধর্মীয় তহবিল থেকে। 

অধক্ষ্যের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতে প্রত্যক্ষ সহযোগীতা করছেন শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জয়দেব বর্মণ। 

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে ডোমার সরকারী কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক ও রি-টেক পরীক্ষার উদ্ভাবক মশিউর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে উর্ত্তীণের জন্য ফেল করা শিক্ষার্থীদের একটি পরীক্ষা নেয়া হয়। এটি রে-টেক পরীক্ষা নামে পরিচিত। বিভিন্ন কলেজে বিভিন্ন নামে পরিচিত এটি। এটা দোষের কিছু নয়। কলেজে অনেক কাজ হয়েছে। পরিবর্তনও ঘটেছে। 
স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, কলেজের পরিবেশ দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পড়াশোনার মান ভালো নয়। এই অধ্যক্ষ আসার পর প্রতিষ্ঠানটি কুক্ষিগত করে রেখেছেন। 

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ করে বলেন, কলেজ গেট যেখানে স্থাপন করার চেষ্টা করেছেন অধ্যক্ষ মহোদয় ওই জায়গাটি ব্যক্তি মালিকানা। কলেজের নয়। জমির মালিকের সাথে এনিয়ে আদালতে মামলা চলছে। যার কারণে গেট নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে এখন। 
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ এ কে এম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এসব ভিত্তিহীন কথা। কোন সত্যতা নেই। যথাযথ নিয়ম অনুসারে অর্থ উত্তোলন এবং কমিটির মাধ্যমে হয়ে থাকে। আমার একার কোন ব্যাপার নয়। 

কলেজের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। একটি মহল বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য এসব করছে। তবে এসব করে কোন লাভ হবে না। 

ডোমার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম সিদ্দিকুর রহমানের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর পড়ুন পর্ব-দুইয়ে। 

Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357

News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com