বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার (বাফার) গুদাম থেকে সরাসরি সার কিনতে চান প্রান্তিক পর্যায়ের কার্ডধারী খুচরা সার বিক্রেতারা।
সম্প্রতি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কৃষি উপদেষ্টা বরাবরে লিখিত দাবি তোলেন জেলার কার্ডধারী খুচরা সার বিক্রেতারা।
জানা গেছে, কৃষকদের হাতের নাগালে ন্যায্যমূল্যে সার বিক্রির লক্ষ্যে ২০০৯ সালে প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে কার্ডধারী খুচরা সার বিক্রেতা নিয়োগ করে সরকার। প্রতিটি খুচরা বিক্রেতা ৩০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে কৃষি অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধিত কার্ড সংগ্রহ করেন। সেখানে এসব কার্ডধারীরা ইউনিয়ন পর্যায়ের ডিলারের কাছ থেকে বরাদ্দ নিয়ে সরাসরি কৃষকদের মাঝে বিক্রি করবেন।
এ ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পর্যায়ের ডিলার বাফার গুদাম থেকে সার কিনে তার বরাদ্দের অর্ধেক কার্ডধারী খুচরা বিক্রেতাদের কাছে কেজিপ্রতি এক টাকা কমিশনে বিক্রি করবেন। খুচরা বিক্রেতারা ডিলারের কাছে ক্রয় করে সরাসরি কৃষকদের মাঝে বিক্রি করতে পারবেন। এতে সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্যে সার ক্রয়ের সুযোগ পান কৃষকরা। একইসঙ্গে সার ক্রয়ের কৃষকদের ভোগান্তি লাঘব হয়। সার মজুদ সিন্ডিকেট ভাঙতে ও সার পাচার রোধে এ সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
এমন সিদ্ধান্তে প্রথম দিকে ইউনিয়ন পরিষদের বিসিআইসি ডিলাররা বাফার গুদাম থেকে সার কিনে বিধিমতো কার্ডধারীদের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিত। কিন্তু কিছু দিন না যেতেই কার্ডধারীদের কাছে সার বিক্রি না করে সিন্ডিকেটে করে কালোবাজারে বিক্রি শুরু করেন অসাধু কতিপয় ডিলার। এসব ডিলার কার্ডধারীদের বরাদ্দের সার তাদের না দিয়ে নন কার্ডধারী খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। এতে কেজিপ্রতি এক টাকা কমিশন আত্মসাৎ করার অভিযোগ ওঠে ডিলারদের বিরুদ্ধে। এ কারণে নিবন্ধন করেও কমিশনে সার ক্রয়ে ব্যর্থ হচ্ছেন কার্ডধারী খুচরা সার বিক্রেতারা।
বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও সদ্য বিদায়ী সরকার আওয়ামী লীগ নেতাদের কারণে সফলতা আসেনি বলে দাবি নিবন্ধিত এসব খুচরা বিক্রেতাদের। এ কারণে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বঞ্চিত রয়েছেন নিবন্ধিত এসব খুচরা বিক্রেতারা।
নিবন্ধিত খুচরা বিক্রেতা মশিউর রহমান বলেন, আমরা ৩০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে খুচরা বিক্রেতা হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছি গত ২০০৯ সালে। বিধিমতো আমরা ইউনিয়নের ডিলারের বরাদ্দের অর্ধেক সার কেজি প্রতি এক টাকা কমিশনে পাওয়ার কথা। কিন্তু আমাদের না দিয়ে অনিবন্ধিত খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন ডিলাররা। ফলে আমরা কমিশনে সার না পেয়ে কৃষকদের সরকারি মূল্যে সার দিতে পারছি না। অনেক সময় সংকট দেখিয়ে বেশি দামে সার কিনতে হয় আমাদের।
এমনকি ইউনিয়নের ডিলারের বরাদ্দ কত থাকে সেই তথ্যও দেওয়া হয় না। সার কিনলে কোনো রশিদও দেওয়া হয় না। অনেকবার বিষয়গুলো নিয়ে অভিযোগ করেছি। কিন্তু সরকারি দলের নেতাদের চাপে তা আলোর মুখ দেখেনি। এ চিত্র গোটা দেশে। তাই আমরা চাই সরাসরি বাফার গুদাম থেকে আমাদের সার ক্রয়ের সুযোগ দেওয়া হোক। তবেই আমরা প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকদের ন্যায্যমূল্যে সার বিক্রি করতে পারব।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. সাইফুল আরেফিন বলেন, জেলায় মোট ৮৬ জন নিবন্ধিত খুচরা সার বিক্রেতা রয়েছেন। তারা ইউনিয়নের ডিলারের কাছ থেকে ক্রয় করে কৃষকদের কাছে বিক্রি করবেন। ইউনিয়ন পর্যায়ের ডিলারদের নিয়মিত মনিটরিং করা হয়। নিবন্ধিত খুচরা বিক্রেতারা বাফার গুদাম থেকে কিনতে চাইলে তাদের মনিটরিং করার মতো জনবল নেই। তবে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিলে তা করা যেতে পারে। তবে সেটা জাতীয় পর্যায়ের সিদ্ধান্ত।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রাকিব হায়দার বলেন, নিবন্ধিত খুচরা সার বিক্রেতারা যে দাবি তুলেছেন তা জাতীয় পর্যায়ের সিদ্ধান্তের বিষয়। সেটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সার বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় খুচরা বিক্রেতারা কেন বিধিমতো কমিশনে সার পাচ্ছেন না- তা খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357
News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com