সালমান শাহ’র মৃত্যুবার্ষিকী আজ, কী হয়েছিল সেই ৬ সেপ্টেম্বর?

বিনোদন ডেস্ক || ২০২৪-০৯-০৬ ১০:১৪:৩২

image

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর, এদিন ছিল বাংলা চলচ্চিত্র অঙ্গনের একটি কাল দিন। এদিন নিভে যায় চলচ্চিত্রের রাজপুত্র চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ'র জীবন প্রদীপ। আজ শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) তার ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী।

 ১৯৯৬ সালেও এই দিনটি ছিল শুক্রবার। সেদিন সকালেই বাংলাদেশকে হারাতে হয় একজন বিশ্বমানের নায়ককে, সঙ্গে এক অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হয় ঢাকাই চলচ্চিত্র।

তবে সালমানের মৃত্যু নিয়ে ভক্তমনে ছিল শুরু থেকেই ধোঁয়াশা। কেউ মনে করতেন আত্মহত্যা করেছেন নায়ক- আবার কারও মতে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। যদিও এখনও খোলেনি সেই রহস্যজট।

 সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গণমাধ্যমে বহুবার কথা বলেছে সালমানের পরিবার। সালমান শাহ'র মা নীলা চৌধুরী ও তার অনুরাগীরা যদিও মনে করেন, সালমানকে হত্যা-ই করা হয়েছে। ২৮ বছর আগে আজকের এই দিনের ঘটনার বর্ণনায় নীলা চৌধুরী জানালেন, সালমানের মৃত্যুর দিন সকাল ৭ টার দিকে ছেলের ইস্কাটনের বাসায় যেতে বাবাকে বাধা দিয়েছিলেন বাড়ির দারোয়ান। সেই দারোয়ান সালমানের বাবাকে বলেছিলেন, ওপরে যেতে হলে সালমানের স্ত্রী সামিরার অনুমতি নিতে হবে। এক পর্যায়ে জোর করে ওপরে চলে যান সালমানের বাবা, যেয়ে দেখেন বাসায় সালমানের স্ত্রী সামিরা।

 নীলা চৌধুরী বললেন, ‘উনি (সালমানের বাবা) সামিরাকে বললেন, “ইমনের (সালমান শাহর ডাকনাম) সঙ্গে কাজ আছে, ইনকাম ট্যাক্সের সই করাতে হবে। ওকে ডাক।” তখন সামিরা বলল, “ও তো ঘুমে।” তখন উনি বললেন, “ঠিক আছে আমি বেডরুমে গিয়ে সই করিয়ে আনি।” কিন্তু যেতে দেয়নি। আমার হাজব্যান্ড ঘণ্টা দেড়েক বসে ছিল ওখানে।’


 এরপর এদিন সকাল ১১টার দিকে মা নীলা চৌধুরীর কাছে একটি টেলিফোন কল আসে। তাকে বলা হয়, সালমান শাহকে দেখতে হলে এখনই যেতে হবে। ফোন পেয়ে দ্রুত ছেলের বাসার দিকে রওনা দেন তিনি। ইস্কাটনের বাসায় গিয়ে ছেলেকে তিনি বিছানার পড়ে থাকতে দেখেন।

নীলা চৌধুরী বলেন, ‘খাটের মধ্যে যেদিকে মাথা দেবার কথা সেদিকে পা। আর যেদিকে পা দেবার কথা সেদিকে মাথা। পাশেই সামিরার এক আত্মীয়ের একটি পার্লার ছিল। সে পার্লারের কিছু মেয়ে ইমনের হাতে-পায়ে সর্ষের তেল দিচ্ছে। আমি তো ভাবছি অজ্ঞান হয়ে গেছে।’

এ সময় সালমানকে কেমন দেখেছিলেন সেই বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি দেখলাম আমার ছেলের হাত-পায়ের নখগুলো নীল। তখন আমি আমার হাজব্যান্ডকে বলেছি, আমার ছেলে তো মরে যাচ্ছে।’


 এরপর দ্রুত ইস্কাটনের বাসা থেকে সালমান শাহকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তাররা সালমানকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে জানানো হয়, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন।

কিন্তু এই রিপোর্ট মানতে নারাজ হয় সালমানের পরিবার। বরাবরই পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। নীলা চৌধুরীর অভিযোগ ছিল, তারা হত্যা মামলা করতে গেলে পুলিশ সেটিকে অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে। পুলিশ বলেছিল, অপমৃত্যুর মামলা তদন্তের সময় যদি বেরিয়ে আসে যে এটি হত্যাকাণ্ড, তাহলে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে হত্যা মামলায় মোড় নেবে।

সালমানের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে না পারায় তার ভক্তদের মাঝে তৈরি হয় নানা প্রশ্নের। দেশজুড়ে তার অসংখ্য ভক্ত এ মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি। এমনকি এতে বেশ কয়েকজন তরুণীও আত্মহত্যা করেছে বলেও তখনকার পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়।

এদিকে খুবই সম্প্রতি টেলিভিশনের এক সাক্ষাৎকারে নীলা চৌধুরী মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করে ফের ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন। এ সময় এক চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে তিনি বলেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেনি, ভারত থেকে এজেন্ট এনে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।


 উল্লেখ্য, বেশ কয়েকটি কালজয়ী সিনেমা উপহার দিয়ে দর্শকমনে জায়গা করে নেন সালমান। এছাড়াও নব্বই দশকের সে সময়ে তার স্টাইল, ফ্যাশন সেন্স চমকে দিয়েছে দর্শকদের। কিন্তু মাত্র ২৪শেই জীবন প্রদীপ নিভে যায় সালমানের।

সালমানের মৃত্যুর ২৮ বছর হয়েছে। কিন্তু তাতেও এক বিন্দু জনপ্রিয়তা কমেনি এই নায়কের। ইন্টারনেটের এই যুগে দর্শকদের হৃদয়ে এখনও সালমান বেঁচে আছেন সেই স্বপ্নের নায়ক হয়েই।

Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357

News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com