দিনাজপুর ফুলবাড়ীতে এ বছর প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হওয়ায় এবং ফলন ভালো হওয়ায় পটল চাষ করে আশানুরূপ লাভের মুখ দেখছেন বর্ষাকালীন পটল চাষিরা।
সরেজমিনে উপজেলার ৬নং দৌলতপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা তাদের পটল ক্ষেতের পরিচর্যাসহ পটল তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাজারে পটলের দাম ভালো পাওয়ায় পরিপক্ক পটল তুলে বাজারে পাঠাচ্ছেন কৃষকরা। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর পটল চাষে আশানুরূপ লাভের মুখ দেখছেন বলে এমনটি বলছেন এলাকার কৃষকরা।
পটল চাষি মিজানুর রহমান বলেন, কার্তিক মাসে ৫ শতাংশ জমিতে পটল চাষ করেন। চাষাবাদে এ পর্যন্ত সর্বসাকুল্যে খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ কিংবা রোগ-বালাই না লাগায় এবার পটলের ফলন ভালো হয়েছে এবং চাহিদানুযায়ী দামও পাওয়া যাচ্ছে। এ পর্যন্ত ৪ হাজার টাকার পটল বিক্রি করা হয়েছে। এখনও ক্ষেতে যে পরিমাণ পটল রয়েছে তা অন্তত ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে। মাসে দুইবার পটল তুলে বিক্রি করা হচ্ছে।
পটল চাষি মিজানুর রহমান আরো বলেন, কিশোর বয়স থেকে পিতার সঙ্গে নিজের জমিতে শাক-সবজি চাষাবাদ করছেন। এখন বয়স ৩৫ কি ৩৬ হবে। এখন পর্যন্ত কৃষি অফিসের কোনো লোককে তার জমিতে দেখতে পাননি। কিংবা কোনো সহযোগিতাও পাননি। বিভিন্ন প্রকার আবাদের সঙ্গে বছরজুড়ে থাকলেও কৃষি অফিস থেকে কোনো প্রকার প্রণোদনা পাননি, আবার এলাকার কিছু লোক আছে যারা কোনোদিন কোনো কিছু আবাদের সঙ্গে জড়িত না তারাই পাচ্ছেন প্রণোদনা। যেগুলো পাওয়া মাত্রই বাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
একই ইউনিয়নের পটল চাষি আব্দুর রহিম বলেন, এ বছর ১৬ শতাংশ জমিতে পটল চাষ করেছিলেন। কিন্তু পচানি রোগে আক্রান্ত হয়ে ৮ শতাংশ জমির পটল ক্ষেত পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। অবশিষ্ট ৮ শতাংশ জমির পটল ক্ষেত ভালো রয়েছে। মাঘ মাস থেকে ক্ষেতের পটল বিক্রি শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে এই জমি থেকে প্রায় ৭ হাজার টাকার পটল বিক্রি করা হয়েছে। আরও অন্তত ২৫ হাজার টাকার পটল বিক্রি করা যাবে বলে তিনি দাবি করেন। তবে শুরু থেকে এ পর্যন্ত পটল চাষাবাদে খরচ হয়েছে সর্বসাকুল্যে ১০ হাজার টাকা। দুই-একজন পটল চাষির পটল ক্ষেতে রোগ বালাই ধরলেও বেশির ভাগই পটল ক্ষেত ভালো রয়েছে এবং সেগুলোতে ফলনও ভালো হওয়ায় কৃষকরা আশানুরূপ লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন। এতে করে আগামীতে এলাকায় আরো বেশি পরিমাণ জমিতে পটল আবাদ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.শাহানুর রহমান বলেন, উপজেলার কৃষি ও কৃষককে আর্থিকভাবে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে উপজেলা কৃষি দপ্তর নিরলসভাবে কৃষকদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। একইভাবে এলাকার কৃষকদেরকে পটল চাষে সার্বিক সহযোগিতকা ও কারিগরি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।