দুর্গাপুরের লিবিয়া প্রবাসীর ভুল অপারেশনে মৃত্যু

দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি || ২০২৪-০৬-৩০ ১০:০৪:৩৪

image

রাজশাহীর দুর্গাপুরের  লিবিয়া প্রবাসী লাল্টু নামের এক যুবকের ভূল অপারেশনে মৃত্যু হয়েছে। সে উপজেলার পালী দক্ষিনপাড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের কনিষ্ট পুত্র। মৃতদেহ দেশে ফেরাতে ও দাফনে পিতামাতার  অনিহার অভিযোগ তুলেছেন প্রবাসীর স্ত্রী। মৃত্যুর ঘটনায় পরিবার ও এলাকাবাসী শোকাহত কিন্ত মৃতদেহ দেশে ফেরাতে ও দাফনে নিজ পিতামাতার অনিহার ঘটনায় বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে নানান গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। 

লিবিয়া প্রবাসী মৃত লাল্টু’র স্ত্রী শারমিন বেগম বলেন, তার স্বর্নের গহনা বিক্রি ও ঋন করে গত ৫ মাস পূর্র্বে তার স্বামী পালী দক্ষিন পাড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের কনিষ্ঠ পুত্র লাল্টু (২৫)কে তার ফুফাতো ভাই লিবিয়া প্রবাসী সাব্বির সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে লিবিয়া নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে আমার স্বামীর ফুফাতো ভাই সাব্বির বিস্কুট, রুটি তৈরীর কারখানাতে স্বল্প বেতনের পরিশ্রমের কাজ দেয়। 

বেতনে থাকা খাওয়ায় হয়না। বিস্কুট কারখানায় একমাস হারভাঙ্গা পরিশ্রমের কাজকরে আমার স্বামী লাল্টু অসুস্থ হয়ে পড়ে। ১৫দিন শয্যাসায়ী থেকে একটু সুস্থ হলে শশুরবাড়ী থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে অন্য দালালের মাধ্যমে রেস্টুরেন্টে কাজ নেয়। সাব্বির আমার শশুরের বোনের ছেলে হওয়ায় তাকে না জানিয়ে অন্য আমার বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিয়ে অন্য দালালের মাধ্যমে রেষ্টেুরেন্টে কাজ ঠিক করতে পরামর্শ ও সহযোগীতা করার কারনে আমাকে শশুর শাশুড়ীরা তাদের বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয়। আমি দুই সন্তান নিয়ে আমার বাবার বাড়ী চৌবাড়ীয়া গ্রামে থাকি।  গত ২৪জুন জানতে পারি আমার স্বামী লাল্টু অসুস্থ হয়ে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে এপেন্ডি সাইডের অপারেশন করতে হবে। আমার স্বামীর কর্মরত কোম্পানীর লোকজন ও শ্রমিকরা সহযোগীতা করে চিকিৎসা করাচ্ছে।

 ২৬ জুন সন্ধার দিকে ভূল অপারেশনে আমার স্বামী মারা গেছে এমন খবর পেয়ে আমি ও আমার বাবা শশুরবাড়ী গেলে আমার শশুর ও শাশুড়ি আমাকে দেখে বলে স্বামীর সম্পত্তির ভাগ নিতে এসেছিস, তোরা আমার বাড়ীতে ঢুকবিনা বলে নানা প্রকার অকথ্যভাষায় গালিগালাজ ও অভিশাপ দিয়ে একপর্যায়ে আমাকে ও আমার বাবাকে ওখান থেকে চলে যেতে বলে না হলে আমাদের মারপিট করে তাড়াবে বলে হুমকি দেয়। 

মৃত লাল্টুর স্ত্রী শারমিন বেগম আরো বলেন, লিবিয়া থেকে আমার স্বামীর কোম্পানীর লোকজন আমার শশুরের সাথে যোগাযোগ করেছে, আমার স্বামীর মৃতদেহ দেশে আনার জন্য লিবিয়ায় অভিভাবকদের কাগজপত্র চেয়েছে। কিন্তু আমার শশুরশাশুড়ি কোম্পানীর লোকজনদের বলেছে আমরা দেশে লাশ আনতে কোন কাগজপত্র দিবোনা। দেশেও লাশ আনতে আমার শশুরশাশুড়ি কাগজপত্র দিচ্ছেনা অপরদিকে অভিভাবকের অনুমতি না পাওয়ায় ওই দেশেও দাফন হয়নি। আমার স্বামীর মৃতদেহ আজ মৃত্যুর ৪দিন এভাবেই আছে। আমি এক অসহায় দূখী নারী দুই সন্তানকে নিয়ে আমি এখন কি করবো। 

শারমিন আরো বলেন, বাবার মরা মূখটা কি আমার দুই সন্তান দেখতে পাবেনা আবার শশুরশাশুড়ি তাদের বাড়ীতে ঢুকতে দিচ্ছেনা, আমি এখন কি করবো? এবিষয়ে পরামর্শ ও অভিযোগ জানাতে আজ ৩০জুন রবিবার সকালে দুর্গাপুর থানায় ডিউটি অফিসার গেলে আমাদের কোন অভিযোগ গ্রহন করেননি। পরে মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম সম্রাট এর নিকট অভিযোগ করেন শারমিন বেগমরে পিতা আব্দুল আজিজ। 

 মৃত লাল্টুর পিতামাতার সাথে যোগাযোগের জন্য পালী দক্ষিনপাড়ার বাড়ীতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে লাল্টুর চাচা সাবেক ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, আমার ভাতিজা বিদেশের মাটিতে মরে পড়ে আছে, আমাদের পরিবার থেকে লাশ দেশে আনার জন্য সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে মাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম সম্রাট এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, লিবিয়ায় মৃত্যু হওয়া লাল্টুর লাশ দেশে আনতে পিতামাতার অনিহার কথা বলে প্রবাসী মৃত লাল্টুর স্ত্রী শারমিন বেগম। মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে না ওই দেশেই দাফন করা হবে এই বিষয়ে এবং শশুরশাশুড়ির সাথে পুত্রবধূ’র সমস্যার বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। 

Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357

News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com