কুরবানীর ঈদকে সামনে রেখে দিনাজপুরে মহারাজা স্কুলের সামনের সড়কের কামার পাড়ার কামার সম্প্রদায়ের লোকেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। লোহা পিটিনোর ঢং ঢং শব্দে এখন কামার পাড়া মুখোরিত। কামার পাড়ায় সকাল রাত পর্যস্ত যেন দম ফেলার সময় নেই। কয়লায় আগুন লাগানোর পর আগুনের তীব্রতা বৃদ্ধির জন্য বাফার দিয়ে বাতাস দিতে কেউ ব্যস্ত। আবার কেউ হাতুড়ি দিয়ে টকটকে লাল লোহা পিটাতে ব্যস্ত। কথা বলার সময় নেই।
ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে কুরবানী পশুর জবাইয়ের হাতিয়ার ততই বিক্রি বাড়বে। তাই ভারি হাতুড়ি দিয়ে পর্যায় ক্রমে ৩ থেকে ৪ জন পেটাচ্ছেন দগদগে লাল লোহার খন্ড। কেউ শান দিচ্ছেন, কেউবা আবার কয়লার আগুনে বাতাস দিচ্ছেন। এক রকম প্রতিযোগীতা মুখর কাজ করছে কামাররা। পাল্লা দিয়ে কাজে করছেন তার। কুরবানীর ঈদে গরু, মহিষ ,ছাগল ও ভেড়া কুরবানীর পশু হিসেবে জবাই করা হবে। আর এসব পশুর গোস্ত কাটতে দা, বটি, চুরি, ও চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার অপরিহার্য। এজন্য গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় দা, বটি, চুরি, ও চাপাতি শান দিতে। এদিকে ধাতব সরঞ্জামাদী শান দিতে কামার পাড়াগুলোতে ভিড় বাড়ছে সাধারণ মানুষের।
আগামী ১৭ জুন সোমবার কুরবানীর ঈদের তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় দা-ছুরি সংস্কারের জন্য জেলা-উপজেলা বাসী ইতোমধ্যে ভিড় করছেন কামারের কাছে। কেউ দাম-দর করছেন বাজার বোঝার জন্য কেউবা কিনে নিচ্ছেন পছন্দের দা-ছুরি। সদরের মহারাজা স্কুল মাঠের রাস্তার পাশ্বের কামারশালা ঘুরে দেখা যায় এক ধরনের ফুরফুরে মেজাজেই ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা।
কেউ তৈরি করছেন দা, কেউ বা তৈরি করছেন চাপাতি আবার কেউ কেউ তৈরি করছেন ছুরি। আর এসব জিনিস সারিবদ্ধভাবে দোকানের সামনে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে চাপাতি ৪০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, দা ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা, কুড়াল ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, চাকু ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা, বড় দা ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় কামারশালায় বিক্রি হচ্ছে।
দম ফেলার সময় পাচ্ছি না। এ বছর লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় কুরবানীর পশু কাটার দা, বটি, কুড়ার, ছড়ি, চাপাতি , চাকুর দাম একটু বেশি। ঈদেও আগের দিন বেশি বিক্রি হয়।
মহারাজা স্কুল মোড়ের কামার আব্দুস সালাম বলেন, আরোও কয়েকদিন আমনে রয়েছে তাই বেচা বিক্রি কিছুটা কম । তবে কুরবানীর পশু জবাই করার জন্যে ছুরি, বটি , চাপাতি , দা তৈরী করে রেখেছি। বিক্রি হবে। তেমন বিক্রি শুরু হয়নি । দুই চার দিনের মধ্যেই প্রচুর বিক্রি বেড়ে যাবে।
একাই এলাকার ডাবলু ইসলাম বলেন, দা চাপাতি দা বটি তৈরী করে রেখে দিয়েছে। কেউ কেউ দরদাম করে যাচ্ছে। আবার কেই পুরাতন দা বটি শান দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ঈদের আগের দিন দা ছড়ি সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। সেই অপেক্ষায় আছি। পাকা লোহার তৈরী দা বটির দাম একটু বেশি।
দিনাজপুরের মাসিমপুর থেকে আসা ক্রেতা আনিছুর রহমান বলেন, নতুন ভাবে পশু কাটার হাতিয়ার ক্রয় করার জন্য এসেছি। তবে এ বছর লোহার দাম বেশি হওয়ার দা ছুড়ি, বটির দাম একটু বেশি। তারপরও ক্রয় করতে হবে। কিছু করার নেই।
ক্রেতা আবুল কালাম বলেন, বড় ছুরি ক্রয় করলাম। দাম একটু বেশি ১ হাজার ১ শত টাকায় ক্রয় করলাম। আরোও একটি দা ক্রয় করতে হবে । পাকা লোহার হওয়ায় দাম বেশি পড়েছে
দিনাজপুর পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল বলেন, কামার পাড়ায় লোহা পিটানোর ঢন ঢন শব্দে বুঝা যাচ্ছে কুরবানীর ঈদ খুব নিকটে চলে এসেছে । তারা কুরবানীর পশু জবাই করার ক্ষেত্রে যা যা প্রয়োজন তা তারা সরবরাহ করে থাকেন। কামার সম্প্রদায়ের মানুষের সবচেয়ে কুরবানীর ঈদের আগে তাদের বেচা বিক্রি বেড়ে যায় । যা সারা বছর বিক্রির চেয়ে অনেক বেশি হয়।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357
News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com