৩ দিনব্যাপি চর নিকেতন বৈশাখি সাহিত্য উৎসব অনুষ্ঠিত
আলমগীর কবীর হৃদয়, পাবনা ||
২০২৪-০৪-১৮ ১২:৪০:৩৬
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা পাবনার ঈশ্বরদীর সাহিত্য সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাপল্লী চরনিকেতনে ওসাকার আয়োজনে ৩দিন ব্যাপী (১৪-১৬ এপ্রিল ২০২৪) ‘চরনিকেতন বৈশাখী সাহিত্য উৎসব ১৪৩১’ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ এবং বিদেশের প্রায় শতাধিক কবি, ঔপন্যাসিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, প্রকাশক এবং সমাজকর্মী বর্তমান বিশ্বের সংস্কৃতি ও রাজনীতির প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলি নিয়ে পরস্পরে মধ্যে ভাব বিনিময় ও আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিলে মঙ্গল শোভাযাত্রা, বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, কবিতা আবৃত্তি, বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ নানা দিক নিয়ে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসবের শেষ দিনে কবি মজিদ মজিদ মাহমুদ-এর ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিশেষ আয়োজন করা হয় যেখানে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফজলুল কাদের মহোদয়ের পাশাপাশি ভারত-বাংলাশের কবি-সাহিত্যিকবৃন্দ, কবি মজিদ মাহমুদ-এর পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও বন্ধুমহল এবং স্থানীয় বিশিষ্টজনের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন কবি মজিদ মাহমুদ।
চরনিকেতনের প্রবর্তক কবি, প্রাবন্ধিক ও গবেষক মজিদ মাহমুদ-এর সভাপতিত্বে তিন দিনব্যাপী এই উৎসবে ভারত থেকে প্রায় ২০ বিশ জন কবি সাহিত্যিক অংশগ্রহণ করেন যাদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কবি শ্যামল জানা, অধ্যাপক ড. বরেন্দু মণ্ডল, অধ্যাপক ড. সুরঞ্জন মিদ্দে, কবি-সম্পাদক সুশীল সাহা, কবি-সম্পাদক আবু রাইহান, বাচিক শিল্পী স্বপ্না দে, বাচিকশিল্পী রত্না বিশ্বাস, দেবারতী ঘোষ, এমিলা কুমার, অদ্রিজা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। এছাড়া ফ্রান্স থেকে কবি আমীরুল আরহাম অংশগ্রণ করেন।
বাংলাদেশ থেকে প্রায় শতাধিক কবি, সাহিত্যক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অংশগ্রহণ করেন যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কবি আসলাম সানী, কবি জাহিদ হায়দার, কথাসাহিত্যিক পারভেজ হোসেন, কবি অনিকেত শামীম, ড. জিএম মনিরুজ্জামান, কবি সমীর আহমেদ, কবি আযাদ কালাম, খোন্দকার খসরু পারভেজ, কবি ও গবেষক তারেক রেজা, কবি শাহীন চৌধুরী, কবি ফারহান ইশরাক, কবি আবির বাঙালী, কবি ইউসুফ রেজা, কবি লিয়াকত বখতিয়ার, কবি মামুন রশীদ, কবি শেলী সেনগুপ্তা, কবি শামসুদ্দীন হীরা, কবি তাহমিনা শিল্পী, কবি নুসরাত সুলতানা, কবি জাকির মোল্লা, কবি অচিন্ত্য চয়ন, বাচিকশিল্পী মাসুম আজিজুল বাশার, কবি আহমেদ শিবলু, বাচিকশিল্পী রুবিনা আজাদ, কবি ইমরান মাহফুজ, কবি বোরহান মাসুদ, কবি আনিসুল হক হীরা, কবি নূরিতা নুসরাত খোন্দকার, কবি ফরিদ ছিফাতুল্লাহ, কবি লেলিন, কবি সৌহার্দ্য সিরাজ, কবি স. ম তুহিন, কবি বায়েজিদ চাষা, বাচিকশিল্পী মধুসূদন মিহির চক্রবর্তী, কবি ইমাম মেহেদী, কবি রিয়াজ উদ্দিন মোল্লা, কবি হোসেন দেলোয়ার, কবি অনিরুদ্ধ দেলোয়ার, কবি মামুন খান, কবি বাদল ধারা, কবি আনিফ রুবেদ, কবি ওয়াহিদুর রহমান শিপু, কবি দীপঙ্কর মারডুক, কবি আবু ইকবাল প্রমুখ।
স্থানীয়দের মধ্যে সাংবাদিক আখতারুজ্জামান আখতার, ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সভাপতি মোস্তাক আহমেদ কিরণ, মাহবুবুল হক দুদু, কবি আখতার জামান, গবেষক মোহাম্মদ আব্দুর রউফ, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল ইসলাম মামুন, উত্তরণ পাবনার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবি ও বাচিকশিল্পী আলমগীর কবীর হৃদয়, কবি লতিফ জোয়ার্দ্দার, কবি কথা হাসনাত, কবি এনামুল হক টগর, কবি দেওয়ান মাজহারুল ইসলাম, কবি সালেক শিবলু, কবি সৈয়দা জহুরা ইরা, আব্দুন দায়েন, কথাসাহিত্যিক সাইদ হাসান দারা, কবি মানিক মজুমদার, কবি রেহানা সুলতানা শিল্পী, বঙ্গ রাখাল, কবি যাযাবর জিয়া, কবি মঞ্জুরুল ইসলাম, কবি নজরুল ইসলাম মুকুল, কবি মতিউর রহমান, কবি রেজাউল করিম শেখ, কবি নাজমুল হাসান নয়ন, বাচিকশিল্পী আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
ওসাকার সিনিয়র পরিচালক মাজহারুল, পরিচালক সাইফুল ইসলাম, পরিচালক আব্দুল ওয়ারেস-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও সিনিয়র কর্মকর্তা ইয়ারুল ইসলাম, আমির হামজা ও আব্দুল জব্বার-এর সহযোগিতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সঞ্চালনায় ছিলেন শামসুজ্জামান প্রিন্স।
অনুষ্ঠানের সভাপতি কবি মজিদ মাহমুদ বলেন- ‘দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে আমি চেষ্টা করেছি আমার গ্রাম বাংলাকে তুলে ধরার জন্য। বাংলা সাহ্যিত্যের প্রতি ভালোবাসা আর দেশের মানুষের জন্য কিছু করার প্রত্যয় নিয়ে আমি পথ চলছি।’
এছাড়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় কবি-সাহিত্যিকরা বলেন- ‘এই বাংলাকে কখনই আমাদের আলাদা মনে হয়নি। আমাদের দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের যে সাংস্কৃতিক বন্ধন এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আরো মজবুত হবে।’
আগত অতিথিরা আরও বলেন-গ্রাম-বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সাহিত্য উৎসব আয়োজন একটা বিশেষ ব্যাপার, যা কবি মজিদ মাহমুদ করে দেখিয়েছেন। এ ধরনের আয়োজনের মধ্য দিয়ে এখান থেকে কবিগণ উৎসাহ পাবেন। কবিদের মধ্যে সাহিত্য নিয়ে নতুন ভাবনা শুরু হবে। উৎসবে কবি ও সাহিত্যিকদের বই প্রদর্শনীর স্টল ছিল। অন্য স্টলে ছিল বাহারি সব গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার। এ আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পুরো গ্রামজুড়ে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। দিনভর চলছে এপার-ওপার বাংলার কবিদের স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর, ফাঁকে ফাঁকে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ওসাকা পরিচালিত বৌটুবানীর শিক্ষক সুমাইয়া আঁখি’র পরিচালনায় বৌটুবানী পাঠশালার শিক্ষার্থীবৃন্দ, ভারতীয় ও স্থানীয় শিল্পীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থিতিদের মুগ্ধ করে।