প্রতিনিয়ত যাঁরা বাজার করেন, বিশেষ করে কোনো উপলক্ষে যখন বাজার করা হয়, তখন তাঁরা সাধারণত ফর্দ বা তালিকা তৈরি করেই বাজারে যান। ফর্দ বা তালিকা ছাড়া বাজারে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই কিছু না কিছু না কিনে ফিরতে হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অনেক ক্ষেত্রেই আমরা গোছাতে পারি না। একেবারে শেষ সময়ে রিটার্ন তৈরি করা হলে তাতে রিটার্ন ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে।
আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার পরও সেই রিটার্ন বা ফাইল আবার উন্মোচন হতে পারে। আয়কর আইন অনুযায়ী, একবার রিটার্ন দাখিলের পর ছয় বছর পর্যন্ত সেই আয়কর ফাইল বা রিটার্ন পুনরায় উন্মোচন করা যায়; অর্থাৎ আয়কর রিটার্নে ত্রুটি থাকলে তাঁর জন্য বিপদের শঙ্কা থাকে ছয় বছর পর্যন্ত।
তাই আগে থেকে একটি তালিকা তৈরি করে সে অনুযায়ী কাগজপত্র গুছিয়ে নিয়ে আয়কর রিটার্ন তৈরি করাই বুদ্ধিমানের কাজ। আয়কর বিষয়ে গত ২৫ বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে একটি ফর্দ বা তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো। এ তালিকা করদাতাদের উপকারে আসতে পারে।
চলতি ২০২৩-২৪ কর বছরের জন্য ১ জুলাই ২০২২ থেকে ৩০ জুন ২০২৩ তারিখের মধ্যে সংঘটিত কার্যক্রমের কাগজপত্র জমা দিতে হবে। তাই আপনার দলিলাদি এ সময়ের কি না, তা বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। রিটার্ন তৈরির ফর্দ বা তালিকাটি হবে এ রকম—
ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য যা যা দরকার
আয়ের বিবরণী
১. বেতন খাতে আয় (ফটোকপি সংযুক্ত করবেন)
২. গৃহসম্পত্তি খাতে আয়
ক. গৃহের তলাভিত্তিক ফ্লোর স্পেস ও ভাড়া (ভাড়ার চুক্তিপত্র)
খ. পৌর করের পরিমাণ (পৌর কর প্রদানের রসিদ)
গ. বন্ধকি ঋণের ওপর সুদ (ব্যাংকের ইস্যুকৃত বিবরণী বা সার্টিফিকেট)
ঘ. বাসস্থান খালি থাকলে তার সময় (উপ-কর কমিশনারকে জানানো হলে পত্রের কপি)
৩. কৃষি আয়
ক. কৃষিজমির পরিমাণ
খ. ফলনকৃত শস্যের পরিমাণ
গ. বাজারমূল্য
৪. ব্যবসা বা পেশা খাতে আয়: (স্থিতিপত্র ও আয়-ব্যয়ের বিবরণী, যদি থাকে)
৫. মূলধনি লাভ
ক. মূলধনি সম্পদের বিক্রয়মূল্য (বিক্রীত চুক্তিপত্র ও বিক্রয়ের রসিদ বা দলিল)
খ. বিক্রীত সম্পদের ক্রয়মূল্য (ক্রয়ের দলিল অথবা প্রমাণপত্র)
গ. আনুষঙ্গিক মূলধনি ব্যয় (ক্রয় ও আনুষঙ্গিক মূলধনি ব্যয়ের প্রমাণপত্র)
৬. আর্থিক পরিসম্পদ থেকে আয়
লভ্যাংশ
খ. ব্যাংকের সুদ বা মুনাফা
গ. সঞ্চয়পত্রের সুদ
ঘ. এফডিআর বা মেয়াদি স্থায়ী আমানত
৭. অন্যান্য উৎস খাতে আয় :
*অন্যান্য উৎসের আয়ের সপক্ষে প্রমাণপত্র
* কর রেয়াতের জন্য বিনিয়োগ
ক. জীবনবিমার প্রদত্ত কিস্তি (প্রিমিয়ার রসিদ)
খ. ভবিষ্যতে প্রাপ্য বার্ষিক ভাতা প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে চাঁদা (উপযুক্ত কর্মকর্তার ইস্যু করা সনদ)
গ. ভবিষ্য তহবিল আইন, ১৯২৫ অনুযায়ী প্রযোজ্য ভবিষ্য তহবিলে প্রদত্ত চাঁদা (সনদের ফটোকপি)
ঘ. স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিলে স্বীয় ও নিয়োগকর্তার প্রদত্ত চাঁদা (সনদের ফটোকপি)
ঙ. অনুমোদিত বয়সজনিত তহবিলে প্রদত্ত চাঁদা (নিয়োগকর্তার সনদ)
চ. অনুমোদিত ঋণপত্র বা ডিবেঞ্চার স্টক, স্টক বা শেয়ারে বিনিয়োগ (বিনিয়োগের প্রমাণপত্র)
ছ. ডিপোজিট পেনশন স্কিমে প্রদত্ত চাঁদা (ব্যাংকের সনদ সর্বোচ্চ, ১,২০,০০০ টাকা বিনিয়োগ অনুমোদনযোগ্য)
জ. কল্যাণ তহবিলে প্রদত্ত চাঁদা এবং গোষ্ঠী বিমা কর্মসূচির অধীন প্রদত্ত কিস্তি (নিয়োগকর্তার সনদ)
ঝ. জাকাত তহবিলে প্রদত্ত চাঁদা (প্রমাণপত্র)
অন্যান্য, যদি থাকে (বিবরণ দিন ও প্রমাণপত্র)
রিটার্ন তৈরি করে স্বাক্ষর করার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আয়কর রিটার্নের সঙ্গে সংযুক্ত করে রিটার্নসহ কাগজপত্রের ফটোকপি ফাইলে বা রিটার্নে সংরক্ষণ করুন। তাহলে পরবর্তী রিটার্ন তৈরি করা এবং যদি কোনো কারণে আয়কর ফাইল অডিটে নির্বাচিত হয় বা কোনো তদন্ত করা হয়, সে ক্ষেত্রে পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করতে সুবিধা হবে।
লেখক: আয়কর আইনজীবী ও নির্বাহী পরিচালক গোল্ডেন বাংলাদেশ
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357
News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com