সেদিন কী ঘটেছিল নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্ট চার্চে?

ডেস্ক রিপোর্ট || ২০২০-০৮-২৭ ০৩:১৯:২১

image

২০১৯-এর ১৫ মার্চ শুক্রবার। অন্যান্য সপ্তাহের মতো জুমার নামাজ আদায়ে ব্যস্ত নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্ট চার্চের মুসলমানরা। ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে বাংলাদেশিদের আনাগোনা কম নয়। সবাই যখন জুমার নামাজ আদায়ে প্রস্তুত তখনই স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে গুলি চালাতে চালাতে ‘আল নুর মসজিদে’ ঢুকে পড়েন ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট। সেদিনের নৃশংস হামলায় বাংলাদেশিসহ ৫১ জনের মৃত্যু হয়। রক্তে ভেসে যায় শান্তির তকমা লাগানো নিউজল্যান্ড।

এতেই থেমে থাকেনি ব্রেন্টন, স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালানোর দৃশ্য ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচারও করেন তিনি।

সেদিনের ক্রাইস্টচার্চে অবস্থান করা বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান।

আদালতের রায়:
দেড় বছর পর সেই হত্যাযজ্ঞের রায় দিলেন দেশটির আদালত। ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে বাংলাদেশিসহ ৫১ মুসল্লিকে গুলি করে হত্যার দায়ে ব্রেন্টন ট্যারান্টকে আজীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের আদালত। এক্ষেত্রে তার প্যারোলেরও সুযোগ নেই। আরও ৪০ জনকে হত্যা চেষ্টাসহ তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে।

বিচারক ব্রেন্টন ট্যারান্ট-এর সাজা ঘোষণার সময় হামলায় বেঁচে যাওয়া এবং ভুক্তভোগীদের স্বজনরা আদালতে তার সামনেই উপস্থিত ছিলেন।

কেন এই হামলা?
ব্রেন্টনের ভেতরে আগে থেকেই ছিল বর্ণবাদ, অন্ধত্ব ৷ নিজের ভেতরে বাড়তে থাকা বিদ্বেষের সাথে এমন হামলার কারণ ইশতেহারে জানিয়ে দেন তিনি।

তবে হামলাকারী কোনো চরমপন্থি সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকার খবর মেলেনি ৷ কিন্তু তার ইশতেহার থেকে পুলিশ ধারণা করে যে একাধিক বর্ণবাদী, ইহুদিবিদ্বেষী ও ইসলামবিদ্বেষী ব্যক্তিদের দ্বারা তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন৷

অভিবাসীদের বহিরাগত ভাবা এই যুবকের বন্দুকের গায়ে হিটলারের স্লোগান লেখা ছিল।

২৮ বছর বয়সী এ অস্ট্রেলিয়ান যুবকের অভিবাসী ও মুসলিমদের প্রতি বিরূপ মনোভাব ছিল। তার ফেলে যাওয়া ৭৪ পৃষ্ঠার দীর্ঘ ইশতেহারে বারবার সে শ্বেতবর্ণ মানুষদের শ্রেষ্ঠত্বের কথা বলেছে, অর্থাৎ ‘শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ’। মূলত এই ধারণা বা মতাদর্শ থেকেই হামলা করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়।

হামলায় নিহতদের পরিচয়:
শান্তিতে জীবনযাপন করতে নিউজিল্যান্ডকেই বেছে নিয়েছিলেন হতাহতরা। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, আফগানিস্তান, সিরিয়া, মিসর, জর্ডান, ফিজি, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও সোমালিয়ার নাগরিক রয়েছেন তাদের মধ্যে।

নিহতের তালিকায় ২ শিশু ও ২ কিশোর রয়েছে। তারা হলো- মুকাদ ইব্রাহীম (৩), আবদুল্লাহ দিরিয়া (৪), সায়দ মিলনে (১৪) ও হামজা (১৬)।

হামলায় আরো যারা প্রাণ হারান - ওসামা আদনান আবু কাইক (৩৭), মহসিন আল হারবি (৬৩), জিহান রাজা (৩৮), লিন্ডা আর্মস্ট্রং (৬৫), কামাল দারিশ (৩৯), মাহবুব খন্দকার (৬৫), খালেদ মুস্তফা (৪৫), ড. হারুন মাহমুদ (৪০), মোহাম্মদ আবদুস সামাদ (৬৬), নাঈম রশিদ ও তার ছেলে তালহা (২১), হুসনে আরা পারভিন (৪২), আলি ইলমাদানী (৬৬), তরিক রহমান (২৪), সৈয়দ জাহানদাদ আলি (৪৩), মনির সোলায়মান (৬৮) ওজায়ের কাদের (২৪), মোহাম্মদ ইমরান খান (৪৭), আমাদ জামালুদ্দিন আবদুল গনি (৬৮), সৈয়দ আরীব আহমেদ (২৬). মাতুল্লাহ সাফি (৬৫), হুসাইন মোস্তফা (৭০), রমিজ ভোরা (২৮), লিলিক আবদুল হামিদ (৫৮), হাজি দাউদ নবী (৭১), ফরহাজ আহসান (৩০), মোহাম্মদ আলি ভোরা (৫৮), মোজাম্মেল হক (৩০), গোলাম হুসেইন ( ৬০), আত্তা ইলায়ান (৩৩), করম বিবি (৬০), হুসেইন আল উমারি (৩৬), মুসা ওয়ালি সুলেমান প্যাটেল (৬০), মোহাম্মদ ওমর ফারুক (৩৬), আবদেল ফাত্তাহ কাসেম (৬০), জুনায়েদ ইসমাইল (৩৬) এবং আশরাফ আলী (৬১)।

এদের মধ্যে পাঁচ বাংলাদেশিও তার বর্বরতা থেকে রক্ষা পাননি।

Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357

News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com