বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে জয়েন্ট পেইন নিয়ে সেন্ট্রাল সেমিনার অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক || ২০২৩-১০-০৮ ০৯:১০:০২

image

সঠিক সময়ে জয়েন্ট পেইনের চিকিৎসা না নিলে মানুষ কর্মক্ষমতা হারাতে পারে: বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) 'জয়েন্ট পেইন’ নিয়ে মাসিক সেন্ট্রাল সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকালে (০৮ অক্টোবর ২০২৩ খ্রী.) বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লক মিলনায়তনে এ সেমিনারের আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটি।

সেমিনারে জয়েন্ট পেইন বিষয়ক তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহাবিলিটেশন বিভাগের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ ‘ফিজিয়াট্রিক ম্যানেজমেন্ট অফ জয়েন্ট পেইন’, শিশু বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিশু রিমাউটোলজি ডিভিশনের হেড ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক ডা. মানিক কুমার তালুকদার ‘এপ্রোচ টু দ্যা পেডিয়াট্রিক পেশেন্টস প্রেজেন্টিং উইথ জয়েন্ট পেইন’, রিউমাটোলোজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) সৈয়দ জামিল আব্দাল ‘ এপ্রোচ টু দ্যা এডাল্ট পেশেন্টস প্রেজেন্টিং উইথ জয়েন্ট পেইন’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

সেমিনারে বলা হয়, প্রতি তিন জনে এক জন যেকোন বাত জনিত রোগ বা আথ্রাইটিস রোগে ভোগেন। অস্থিসন্ধি বা হাড়ের গিড়ায় ব্যাথা, গায়ে ব্যাথা, মাংসে ব্যাথা ইত্যাদি আথ্রাইটিসের প্রধান লক্ষণ হলেও এই রোগ শরীরের প্রায় সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে । শতকরা ৫.৫ জন বাত জনিত রোগের কারণে কর্মক্ষমতা হারান। পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশী বাত জনিত রোগে ভোগেন। শহরের চেয়ে গ্রামের লোকজন বেশী বাতজনিত রোগে ভোগে। তাই দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা নিলে কার্যক্ষমতা হারানো থেকে মুক্ত হওয়া যায়। দেশের প্রতিটি সরকারি হাসাপাতালে রিউমাটোলোজি বিভাগ খোলা উচিত। বাংলাদেশে বাতজনিত রোগের চিকিৎসক বা রিউমাটোলোজিস্টদের সংখ্যা খুবই কম। দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয় ছাড়া অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে রিউমাটোলোজিতে এমডি কোর্স করার সুযোগ নেই। তাই সরকারি বড় বড় হাসপাতালে এ কোর্স চালু করা প্রয়োজন। তবে আশার কথা হলো, বর্তমানে কিছু কিছু সরকারি হাসপাতালে বর্হিবিভাগে রিউমাটোলোজি বিভাগের সেবা দেয়া হচ্ছে। প্রযোজনীয় রিউমাটোলোজিস্ট তৈরির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করছে।

সেমিনারে জানানো হয়, শতকরা ১০-২০ ভাগ শিশু বিভিন্ন ধরণের মাংসপেশী, হাড় ও অস্থিসন্ধির রোগে আক্রান্ত। শিশুদের এই সমস্যাগুলো বর্তমানে ক্রমবর্ধমান। অস্থিসন্ধির প্রদাহ বলতে বুঝায় ফুলে যাওয়া, তরল পদার্থ নিঃসরণজনিত অবস্থা । এর লক্ষ¥ণগুলোর মধ্য রয়েছে অস্থিসন্ধি নাড়াতে না পারা, নাড়ানোর সময় ব্যথা অনুভূত হওয়া, অস্থিসন্ধি গরম হয়ে যাওয়া । এ রোগ হলে রোগীদের ব্যবস্থাপনায় বয়স, লিঙ্গ, রোগভোগ কাল, ব্যথার ধরণ, গিড়া জমে যাওয়া, অন্যান্য প্রয়োজনীয় ইতিহাস গ্রহণ করার প্রয়োজন। পাশাপাশি এ রোগটি প্রদাহজনিত কিনা তা সুষ্পষ্টরূপে নির্ধারণ করা, সম / অসম প্রদাহ কিনা, অস্থিসন্ধির বিকৃতি, অস্থিসন্ধি ব্যাতীত অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ও আক্রান্ত অস্থিসন্ধির সংখ্যা অনুযায়ী রোগ নির্ণয় করা হয়ে থাকে। এ রোগ হলে অস্থিসন্ধি প্রদাহের ৮০ শতাংশ রোগ নির্ণয় হয়ে থাকে রোগের ইতিহাস থেকে, ১৫ শতাংশ শারীরিক লক্ষণ ও মাত্র ৫ শতাংশ বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে। একক কোন পরীক্ষা এধরণের রোগ নিশ্চিত করতে পারে না। শিশুদের এ ধরণের রোগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু রিউমাটোলজি ডিভিশন অন্তঃ ও বহিঃর্বিভাগে সেবা প্রদান, তথ্যাদির যথাযথ সংরক্ষণ, গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা ও আন্তর্জাতিক সোসাইটিতে অন্তর্ভূক্তি জরুরি। অস্থিসন্ধি প্রদাহজনিত রোগ সম্পর্কে সচেতনতা, দ্রুততার সাথে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা শুরু করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, জয়েন্ট পেইন একটি কমন রোগ। এই রোগ কোন মানুষের নেই তা খুঁজে বের করা কষ্টকর। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ায় এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। রোগটির যথাযথ সময়ে চিকিৎসা না হলে মানুষ কর্মক্ষমতা পর্যন্ত হারাতে পারে। তাই দ্রুত রোগ নির্ণয় করে যথাযথ চিকিৎসা নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মনিরুজ্জামান খান। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সেন্ট্রাল সাব কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফাতিমা জোহরা। সেমিনারে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, কনসালটেন্ট, চিকিৎসক ও রেসিডেন্টগণ উপস্থিত ছিলেন।

Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357

News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com