কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী সরকারি খাদ্যগুদামে কৃষকের পরিবর্তে ধান সংগ্রহ করছে সিন্ডিকেট চক্রের কাছ থেকে। কৃষকদের অভিযোগ, খাদ্যগুদামের ওসিলিডি সাজেদুর রহমান ধান সিন্ডিকেট চক্র ব্যবসায়ীদের সাথে চুক্তিভিত্তিক প্রতি ৩মেক্ট্রিক টন ধান ২হাজার হাতিয়ে গুদামে দিন-রাত ধান ১৩-১৪মিটারের পরিবর্তে বিধি বহিভূতভাবে ১৫-১৬মিটার ধান ক্রয় করে আসছে বলে লিখিত অভিযোগ করে কৃষক সেকেন্দার আলী ও সৈফুর রহমান। এই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের জেরে সংবাদকর্মীদের নাগেশ্বরী খাদ্যগুদামের ওসিলিডি সাজেদুর রহমান বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। খাদ্যগুদামের অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিতও হয়ে আসছে। সংশ্লিষ্ট উধ্বতর্ন কর্তৃপক্ষ বিষয়টির দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়ায় হতাশ কৃষক ও সুধিমহল।
একই চিত্র ভুরুঙ্গামারীর জয়মনিরহাট খাদ্যগুদামে। চলতি বছর নাগেশ্বরী উপজেলা খাদ্যগুদামে ৬৮৯জন কৃষক ও ভুরুঙ্গামারীর জয়মনিরহাট খাদ্যগুদামে ৪৮৮জন কৃষকের জনপ্রতি ৩টন ধান সংগ্রহ অভিযান চলছে। কুড়িগ্রাম জেলার ৯টি উপজেলায় ১০হাজার ২১৭মেক্ট্রিক টান ধান ক্রয় চলমান রয়েছে।
এদিকে নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী উপজেলা খাদ্যগুদামগুলো অনিয়ম আর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। লাইসেন্স নবায়ন হতে মিলের বরাদ্দ প্রাপ্তি এবং চুক্তির চাল সরবরাহ করতেও পদে পদে গুনতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। এছাড়াও মিলের ন্যূনতম অবকাঠামো না থাকার পরেও বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে যাচ্ছে তাই ভাবে। এতে প্রকৃত মিল মালিকরা বঞ্চিত হচ্ছে পর্যাপ্ত বরাদ্দ হতে। আর দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে এক মৌসুমে ৩টি উপজেলা খাদ্যগুদামে অনেক অর্থ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কর্মকর্তারা। কুড়িগ্রাম জেলা খাদ্য বিভাগ চলতি বছরের বোরো মৌসুমের নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী উপজেলার চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, নাগেশ্বরী সরকারি খাদ্যগুদামে কৃষকের পরিবর্তে সিন্ডিকেট চক্র ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতি ৩মেক্ট্রিক টন ধানে ২হাজার টাকা হাতিয়ে খাদ্যগুদামের ওসিলিডি সাজেদুর রহমান ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল আহাদ নিজেই গুদাম প্রাঙ্গনে ১৩-১৪মিটারের স্থানে অবাধে ১৫-১৬মিটার ধান এ পর্যন্ত ৩৫০মেক্ট্রিক টন ক্রয় করে গুদামে মওজুত করেছেন। খাদ্যগুদামে জমাকৃত ধান মিটারে পরীক্ষা করলেই বেড়িয়ে আসবে আসল দুর্নীতির চিত্র। ধান সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী চক্র বেরুবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান ও নাগেশ্বরী পৌরসভা ভাসানী বাজারের সাবু হাজি, বাবলু মিয়ার প্রতি ৩মেক্ট্রিক টনে ২হাজার চুক্তিভিত্তিক খাদ্যগুদামে ১৫-১৬মিটারের ধান ক্রয় করার অভিযোগ করেন নাগেশ্বরী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আওরঙ্গজেব।
নির্বাচিত লটারির কৃষক নাগেশ্বরী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের সেকেন্দার আলী ও সৈফুর রহমান বলেন, গুদামে ধান নিয়ে গত (১৩জুলাই) গুদামে গেলে সারাদিন দীর্ঘ অপেক্ষার পর ১হাজার টাকার বিনিময়ে সন্ধ্যায় গুদামে ধান জমা করি। গত (১৭জুলাই) গুদামে ধানের চেক নিতে গেলে গুদামের কর্মচারী মাহাবুর রহমান ও জোবায়ের রহমান ৫দিন হয়রানি শেষে গত (১৯জুলাই) সকালে গুদামে চেক নিতে গেলে ওসিলিডি সাজেদুর রহমানের নির্দেশে উক্ত কর্মচারীরা প্রতি ৩মেক্ট্রিক টন ধানের চেক নিতে ২হাজার টাকা দাবি করে। পরে গত (১৯জুলাই) দুপুর ১২টায় সংবাদকর্মীদের ডেকে নিয়ে খাদ্যগুদামে যাই ওখনি গুদামের কর্মচারী মাহাবুর রহমান ও জোবায়ের রহমান এর সাথে ঘুষের টাকা নিয়ে তর্ক হয় এবং ঐ ২জন কর্মচারী দাপট খাটান। বিষয়টি জানাজানি হলে গত (২০জুলাই) দুপুর ১২টায় খাদ্যগুদামের ওসিলিডি সাজেদুর রহমানের নির্দেশে কয়েকজন লোক ঐ দুইজন কৃষক কে ডেকে ওসিলিডি সাজেদুর রহমান তার গোপন কক্ষে নিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে ধানের চেক দিয়ে জোরপুর্বক বিভিন্ন কাগজে স্বাক্ষর নেয়াসহ মোবাইলে মিথ্যাচার ভিডিও নেয়। সেদিনই ঐ দুই কৃষক কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করে। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তারা তাদের বিচারের দাবি জানান।
নাগেশ্বরী খাদ্যগুদামের ওসিলিডি সাজেদুর রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের সাহস পেলেন কোথায় আপনি। তার হোয়াটসঅ্যাপ- ০১৭৭৪১০২৫১৮) থেকে সংবাদকর্মীকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পাশাপাশি কর্মচারী মাহাবুর রহমান প্রকাশ্য বলেন, আমার বাড়ি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা। আপনাকে যেখানে পাবো মারধর সহ হত্যার হুমকি দেয়।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহমুদুল হাছান বলেন, কৃষকের তালিকা কৃষি বিভাগ তৈরি করে। অনিয়ম পেলে আপনারা সংবাদ প্রচার করেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, সংবাদকর্মীরা সর্বদা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করবে। যে কেউ হুমকিসহ বাধাঁ প্রদান করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, উল্লেখিত বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ধান সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সংগ্রহ সরবরাহ অনুবিভাগ) মোঃ মমতাজ উদ্দিন এর সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, মাননীয় সফল প্রধানমন্ত্রী মফস্বল অঞ্চলের অসহায় ও প্রান্তিক কৃষকদের জীবনমান ও আর্থিক উন্নয়নে খাদ্য বিভাগের আওতায় কৃষক অ্যাপসের মাধ্যমে ধান সংগ্রহ করছেন। অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত পুর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357
News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com