ছেলে ও ছেলের বউয়ের নির্যাতনের শিকার বৃদ্ধার শাকিলা বেওয়া নতুন ঠিকানা হলো রংপুরের বৃদ্ধাশ্রম

সুলতান মাহমুদ, দিনাজপুর || ২০২৩-০৭-২৪ ১০:৫০:৩২

image

ছেলে ও ছেলের বউয়ের নির্যাতনের শিকার ঢাকা আসা আশি ঊদ্ধ বৃদ্ধা মায়ের নতুন ঠিকানা হল রংপুরের বৃদ্ধা আশ্রম হাকিমপুর উপজেলা প্রশাসনের নিবির পর্যাবে¶ন ও তত্ত¡ধায়নে রংপুর পুলিশ কমিশনারের  দিকনির্দেশনায় পরিচালিত সাফল্যের গল্প শুনাবো নামের একটি বৃদ্ধা আশ্রমে নতুন ঠিকানায় পৌছে গেছেন বৃাদ্ধা শাকিলা (৮০)। 

আজ  সোমবার হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত রায় নিশ্চিত করেছেন। 

গত ২৩ জুলাই ( রবিবার) বিকালে হাকিমপুর উপজেলা স্থাস্থ্য কমপে­ক্স হাসপাতালে চিকিতসা শেষে বৃদ্ধা  মা শাকিলা বেওয়াকে  সেখানেই রাখা হয়।

গত ১৪ জুলাই ২০২৩ শুক্রবার ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা একটি যাত্রীবাহী  কোচ যোগে দিনাজপুরের হিলিতে আসেন ৮০ বছর বয়স্ক এক বৃদ্ধা। নিজের নাম শাকিলা  এবং তার একমাত্র ছেলের নাম জামিল ছাড়া আর কিছুই বলতে পারেনা।  বয়সের ভারে দুই গালের চামড়া ন্যুয়ে পড়েছে। 

তিনি ঢাকায় থাকতেন , ছেলে জামিল একটি বেসরকারী কোম্পানীতে চাকুরী করেন এট্ওা বলতে পারেন । মাথার এখনো মেহেদি লাগানো চুল পরিপাটি পোশাক-আশাক দেখে মনে হয় সে একটি সভ্রান্ত পরিবারের মা হতে পারে। মাঝে মধ্যে ঊর্দূ ভাষার টান চলে আসে। এতে করে মনে হয় বেহারী ঘরের মা হতে পারেন।  

এক সপ্তাহ দরে ২১ জুলাই শুক্রবার এক বৃদ্ধা দিনাজপুরের হিলি সাংবাদিক রবিউল ইসলাম সুইটসের সিপি মোড়স্থ  বাসার বারেন্দায় আশ্রয় নেয়। স্থানীয় আরও কয়েকজন সাংবাদিকের সহযোগিতায় বৃদ্ধার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন বৃদ্ধা শাকিলা।

তার ছেলে এবং ছেলের বউ তাকে  তার পরনের কিছু কাপড় সহ বাড়ী  থেকে বের করে দিয়েছে দিনাজপুরের হিলি অভিমুখী একটি কোচে উঠিয়ে দিয়ে, বলেছে  আর কখনোই বাড়ীতে ফিরে আসবে না।  চোখ যেদিকে যায় সেদিকেই চলে যাও। আর ফিরে আসার চেষ্ঠা করিও না এমন কথাও বলেছে ছেলে আর ছেলে বউ।

৭ দিন একই জায়গায় ছলছল চোখে বসে থাকার পর বাড়ীর মালিক সংবাদকর্মী রবিউল ইসলাম সুইটসহ স্থানীয়রা জিজ্ঞেসা করে কোথায় যাবেন কার কাছে এসেছেন। সে কিছুই বলতে পারেনা। ছলছল চোখে শুধু তার নাম শাকিলা ঢাকায় থেকে এসেছে ছেলের বাড়ীতে আর ফিরে যেতে নিষেধ করেছে।  এমন কথা বলেই আবেগে আপ­ুত  হয়ে এদিক সেদিক তাকিয়ে থাকত ।  চোখের পানিও শুকিয়ে গেছে। বুকে কান্না জমা থাকলেও চোখের আর পানি আসে না।

গত ২২ জুলাই শনিবার সংবাদ কর্মী রবিউল ইসলাম সুইটস বিষয়টি তার ফেসবুক পেইজে পোস্ট করলে বিভিন্ন সংবাদ কর্মীদের শেয়ারিং মাধ্যমে ব্যাপক ভাবে নেট দুনিয়ায়  বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে।

সংবাদ কমী রবিউল ইসলাম  সুইটস বলেন, আমার বাড়ীর বারেন্দায় ৭ দিন থাকার পর বৃদ্ধা আস্তে আস্তে র্দূবল হয়ে পড়ায় বিষয়টি আমি আমার সহকর্মীদের সাথে শেযার করি। এরপরই বৃদ্ধার ছবি তুলে আমার ফেইস বুক পেইজে শেয়ার করি। মুহুতের মধ্যে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়।  উপজেলা নিবাহী অফিসার , উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান , থানার অফিসার ইনর্চাজ , সমাজ সেবা অফিসার সকলেই  আমার বাসা থেকে বৃদ্ধা’কে উদ্ধার করে চিকিতসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্স হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সংবাদ কমী সোহেল রানা বলেন, হিলির সকল সংবাদ কমীরা বিষয়টি পজেটিব ভাবে গ্রহন করেছে। জাতীয় ও ইলেট্রনিক  মিডিয়াতে সংবাদ প্রচার হওয়াতে  বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় এসেছে।  মায়ের সাথে এমন দূব্যবহারকারী সন্তানের  দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। তিনি আরোও বলেন মানবিক বিষয় বিবেচনা করেই হিলি স্থানীয় সংবাদকর্মীরাও বৃদ্ধা শাকিলাকে  নিয়ে  সংবাদ প্রচার করেছেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে তার ছেলের কাছে শাকিলা ফিরে যাক এমন প্রত্যাশাও করেছেন।

হাকিমপুর,পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাক্তার শ্যামল কুমার দাস, বৃদ্ধা এখন সুস্থ আছে। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে বৃদ্ধাকে সুস্থ করে তুলছি। এখন সে অনেক ভাল আছে। হাসপাতাল থেকেই তাকে রংপুরের একটি বৃদ্ধা আশ্রমে রাখা হয়েছে।

হাকিমপুর  থানার  অফিসার ইনচার্জ আবু সায়েম মিয়া বলেন  চিকিৎসা শেষে তিনি  শারীরিক ভাবে সে অনেকটা সুস্থ হওয়ার পর ২৩ জুলাই ২০২৩ রবিবার বিকালে রংপুরের একটি বৃদ্ধাশ্রম সাফল্যের গল্প শোনাবো বৃদ্ধা আশ্রমে পাঠিয়ে  দেওয়া হয়েছে। এখন সেখানেই শাকিলা থাকবেন। পাশাপাশি বৃদ্ধার ছেলের সন্ধান করা হচ্ছে।

হাকিমপুর  উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত রায় বলেন,  সামাজিক মাধ্যমে জানার পর বিষয়টি জেলা প্রশাসক, দিনাজপুরকে জানানো হয়। তার নিদেশক্রমে সংবাদকর্মী রবিউল ইসলাম সুইটসের বাসা থেকে তাকে উদ্ধার  করে  হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে সকলের সাথে আলোচনা করার পর  বৃদ্ধাকে রংপুরের একটি সরকারী বৃদ্ধা আশ্রম পাঠানো হয়েছে।

Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357

News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com