প্রশাসন নীরব, পুলিশও পরিবেশ অধিদপ্তরের ভূমিকা বিতর্কিত গহীন অরণ্য ধ্বংস করে সমতল করছে পাহাড়খেকোরা

কক্সবাজার প্রতিনিধি || ২০২৩-০৬-২৬ ১২:৩২:১২

image

কক্সবাজার শহর সংলগ্ন গহীন অরণ্যে কালো থাবা পড়েছে একদল পাহাড় খেকোর। ইতোমধ্যে শহরের কলাতলীস্থ পুলিশ লাইন সংলগ্ন বিশাল পাহাড়ি অঞ্চল ধ্বংস করে ফেলেছে তারা। জমির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া এর কারণ।

শুধু পাহাড় ধ্বংস করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না। পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠা মূল্যবান গাছগুলোও কেটে রাতের আঁধারে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। ফলে শহরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে।

গত ২৫ জুন এলাকাটিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পুলিশ লাইনের পেছনের বিশাল অংশ ত্রিপল দিয়ে ঢেকে ফেলা হচ্ছে। যাতে ভেতরে কি ঘটছে তা বাইরের কেউ জানতে না পারে। দূর থেকে দেখা যায় ৩ টি মাটি কাটার যান্ত্রিক গাড়ি  (স্কেভেটর) দিয়ে প্রায় ধ্বংস করা হয়েছে বিশাল বনাঞ্চল। কাটা হয়েছে বেশ কয়েকটি বড় পাহাড়।  বিপুল সংখ্যক শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে করা দিন-রাত চালানো হচ্ছে এই অপকর্ম।

পাহাড় কাটার পর মাটি গুলোকে রাখা হচ্ছে উন্মুক্ত স্থানে। যাতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে সেগুলো পানির ¯্রােতে বাইরে চলে আসে। এটি হলে আসন্ন বর্ষায় কলাতলী ও এর আশপাশের এলাকাগুলো পাহাড়ি মাটিতে ভরাট হয়ে যাবে।  দেখা দেবে জলাবদ্ধতা।

স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এলাকাটিতে বেশ কিছু দরিদ্র মানুষ ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে বসবাস করে আসছিলো। প্রায় ১ মাস আগে একদল লোক গিয়ে তাদের ঘর ভেঙ্গে দেয়াসহ সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। ৩-৪ দিন আগে রাতের অন্ধকারে একদল লোক সেখানে ৩টি স্কেভেটর নিয়ে যায়। ওই রাত থেকে চলছে গহীন বনাঞ্চল ধ্বংসের মহোৎসব। ২৫ জুন বিকেলে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও অজ্ঞাত কারণে আবার ফিরে আসে।

এদিকে, প্রকাশ্যে এভাবে পাহাড় কাটার বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে স্থানীয়রা জানালেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে না কার্যকর পদক্ষেপ। অন্যদিকে, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া পাহাড় কাটা হলেও কার্যালয়টি ২৫ জুন পর্যন্ত এলাকাটিতে কোন ধরনের অভিযান পরিচালনা করেনি। ফলে দ্বিগুণ উৎসাহে চলছে পাহাড় কাটার কাজ।
বনাঞ্চল ধ্বংস করে পাহাড় কাটার প্রতিবাদে গতকাল বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলার নেতারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়েছে। এই কর্মকাÐে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতেই স্মারকলিপিটি দিয়েছেন তাঁরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, দুই দশক আগেও বিশাল এই পাহাড়ি অঞ্চলের দায়িত্বে ছিলো কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগ। পরবর্তীকালে এলাকাটির ৫ একর জমি সরকারের ১নং খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত হলে মালিকানা চলে যায় জেলা প্রশাসনের অনুকূলে। এরপর শ্রেণি পরিবর্তনের মামলা (যার নং ৩/২০০৬) এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৮ অক্টোবর দেয়া তৎকালীন জেলা প্রশাসকের আদেশের প্রেক্ষিতে সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) ৫ একর জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে খিলা হিসেবে খতিয়ানে লিপিবদ্ধ করেন। এরপর আবাসন প্রকল্পের নাম দিয়ে একটি চক্র জমিটি সরকারের কাছ থেকে দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত নিতে আবেদন করে।

সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে  ২০১০ খ্রিস্টাব্দের ৩ জুন ভ‚মি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব একেএম শামসুল আরেফিন সাক্ষরিত এক স্মারকপত্রের (যার নং ২-১৬৬/২০০৭-১০৫৭) মাধ্যমে ৫ একর খাস জমি পাহাড় শ্রেণিভ‚ক্ত হওয়ায় বন্দোবস্তের প্রস্তাবটি নথিভ‚ক্ত করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, পুলিশ লাইনের পেছনে পাহাড় কাটার বিষয়টি গতকাল (২৫ জুন) জেনেছি। এটি পরিবেশ অধিদপ্তরের এখতিয়ারভুক্ত। কার্যালয়টির পক্ষ থেকে একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বলেও জেনেছি।

Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357

News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com