শিবপুর উপজেলা গুলিবিদ্ধ চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খানের মৃত্যুতে পুরো এলাকা উত্তপ্ত

হাজী জাহিদ, নরসিংদী || ২০২৩-০৫-৩১ ১৪:১৪:৪৫

image
বিক্ষোভকারীরা আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ তোলেন,গুলিতে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খানের মৃত্যুতে পুরো এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বুধবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শিবপুর সদরে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ভূঁইয়া রাখিল মিছিলের নেতৃত্ব দেন,মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ গেইট বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়, বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় টায়ারে আগুন দেয়। এ সময় তারা হারুন খানের উপর গুলির মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে উপজেলা সদরের বাজার সড়কে নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হন শিবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হারুন অর রশিদ খান (৭০)। মোটরসাইকেলে আসা মুখোশপরা তিন বন্দুকধারী তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়।নিহতের ভাতিজা ফজলে রাব্বি খান বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তার চাচা গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাকে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে এক মাস চিকিৎসার পর গত ১৩ এপ্রিল ভারতের দিল্লির একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার একটি অস্ত্রোপচার শেষে গত ১ মে দেশে আনা হয়েছিল। এরপর গত ৭ মে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাব্বি খান আরও জানান, গত ১৯ মে রাতে অবস্থার অবনতি হলে হারুন অর রশিদ খানকে আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকাল তিনি মারা যান। রাব্বি খান বলেন, “আমার বাবা সাবেক সাংসদ রবিউল আউয়াল খান কিরণকেও দুর্বৃত্তরা ১৯৮৬ সালের ২৮ এপ্রিল আওয়ামী লীগের দলীয় সমাবেশ করে ফেরার পথে গুলি করে হত্যা করেছিল। আমার চাচাকে যারা হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেছে তাদের গ্রেপ্তারে কোনো অগ্রগতি আমার জানা নেই। এমনকি যারা মদদ দিয়ে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে তারাও প্রকাশ্যে এমপির সঙ্গে মিটিংসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে বেড়াচ্ছেন। এগুলো দেখে ও শুনে কাকু (হারুনুর রশীক খান) খুব কষ্ট পেয়েছেন। আর সেই কষ্ট নিয়েই আজকে তিনি মারা গেলেন।” ২৫ ফেব্রুয়ারি ঘটনার রাতে নরসিংদী জেলা পুলিশ সন্দেহভাজন চারজনকে আটক করে। আটকরা হলেন: শিবপুরের পুটিয়া কামারগাঁওয়ের প্রয়াত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে মো. ফরিদ সরকার (৬৩), সৈয়দনগরের রোকন উদ্দিনের ছেলে মো. সাব্বির (৩২), পূর্ব সৈয়দনগরের আয়েছ আলীর ছেলে মনসুর আহমেদ রানা (৪৩) ও কামারগাঁওয়ের প্রয়াত সিরাজ মোল্লার ছেলে মোমেন মোল্লা (৫৯)। ঘটনার দুদিন পর উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে মো. আমিনুর রশীদ খান তাপস বাদী হয়ে শিবপুর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় ৬ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন, পুটিয়া ইউনিয়নের কামারগাঁও এলাকার আরিফ সরকার (৪০), পূর্ব সৈয়দনগর এলাকার মো. মহসীন মিয়া (৪২), কামারগাও এলাকার ইরান মোল্লা (৩০), মুনসেফেরচর এলাকার শাকিল (৩৫), কামারগার এলাকার হুমায়ুন (৩২) ও নরসিংদী শহরের ভেলানগর এলাকার গাড়ি চালক নূর মোহাম্মদ (৪৮),পুলিশ এজাহারনামীয় নূর মোহাম্মদ ও শিবপুরের পুটিয়া ইউনিয়নের মুনসেফেরচর এলাকার শাকিলকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক লিখিত জবানবন্দি দেন নূর মোহাম্মদ। পুলিশের দাবি, ঘটনার পর থেকে মামলার প্রধান আসামি আরিফ সরকার, মহসীন, ইরান মোল্লা ও হুমায়ুন পলাতক।এদিকে এ ঘটনায় গত ৭ মার্চ মো. ফরহাদ হোসেন ওরফে মোফাজ্জল হোসেন সরকার (৩৪) ও আরিফুল ইসলাম আরিফকে (২৮) মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত দুটি পিস্তল ছয়টি গুলি জব্দ করা হয়। ডিএমপি জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। পাশাপাশি তারা এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান আসাদের সম্পৃক্ততার তথ্য দেন। শিবপুর মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানকে গুলির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এর মধ্যে এজাহারনামীয় দুজন। একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। আরেকজন কারাগারে আছেন। এজাহারনামীয় প্রধান আসামিসহ চারজন দুবাইয়ে অবস্থান করছে। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।

Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357

News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com