গাছ কাটায় বেপড়োয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের নির্বাহী প্রকৌশলী, কাটা হয়েছে শতবর্ষী গাছ
মজিবুর রহমান খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ||
২০২৩-০৫-২৩ ০৮:১২:৪০
নির্বিচারে গাছ কাটা হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক বিভাগের পরিদর্শন বাংলোর। এরমধ্যে প্রায় শতবর্ষের তিনটি বিশালাকৃতির গাছও রয়েছে। এজন্যে নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্কা করা হয়নি। গত ১৩ মে সরকারি ছুটির সুযোগে প্রায় ৮ লাখ টাকা মূল্যের গাছ গুলো শহরের দক্ষিণ মৌড়াইল এলাকাস্থ ওই কার্যালয় থেকে কেটে নিয়ে যাওয়া হয়।
সরকারি নিয়মের বাইরে নির্বাহী প্রকৌশলীর একক সিদ্ধান্তে এই গাছ গুলো কেটে নেন রেজাউল নামের এক ঠিকাদার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শহরের দক্ষিণ মৌড়াইল এলাকার সড়ক বিভাগের পরিদর্শন বাংলোর ভেতরের একটি পুকুরের চারপাশে অনেক পুরাতন কিছু কড়ুই গাছ ছিল। এরমধ্যে ছোট গাছগুলো বিভিন্ন সময় কেটে নেয়া হয়। সবচেয়ে পুরাতন শতাধিক বছর আগের তিনটি কড়ুই কাঠ গাছ রয়ে গিয়েছিল। সর্বশেষ এই তিনটি কাঠ গাছ কাটা শুরু করে আরমান নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে কাঠুরেরা। শুধু মাত্র সড়ক বিভাগে নির্বাহী কর্মকর্তার লিখিত অনুমতিতে গাছ গুলো কেটে ফেলা হয়। এই ক্ষেত্রে জেলা পরিবেশ ও বন নিয়ন্ত্রণ কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়নি। কোন প্রকার বিজ্ঞপ্তি বা টেন্ডার আহবান করা হয়নি। মূল্য নির্ধারণ করতে জেলা বন বিভাগকে কোন প্রকার চিঠি দেওয়া হয়নি।
আরমানের কাছে এই প্রতিবেদন জানতে চাইলে তিনি জানান, রেজাউল নামের এক ঠিকাদার গাছ গুলো তাদের কাটতে বলেছে।
ঠিকাদার রেজাউল জানান, গাছ গুলো অনুমতি নিয়ে কাটছি। ঢাকা বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়েছি। সব সড়ক অফিস জানে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের অফিসের গাছ আমরা লাগিয়েছি, আমরা কাটতে পারি। এই বিষয়ে অন্য কারও অনুমতি দিতে হয় না, আমরা দিলেই চলে। এই কাঠ গুলো কাটতে টেন্ডার দেয়নি, কাটতে অনুমোদন দিয়েছি। আসলে আমি এই বিষয়ে আইন সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে জানি না।
বন বিভাগ অফিসের সূত্রে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী সরকারি যে কোন স্থাপনা বা অফিসের গাছ কাটতে হলে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে তাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে অনুমোদন নিতে হবে। এরপর বন বিভাগে আবেদন করতে হয়। সেই আবেদন সরেজমিন যাচাই-বাছাই করে গাছের মূল্য নির্ধারণ করে জেলা পরিবেশ ও বন নিয়ন্ত্রণ কমিটির কাছে পাঠাবে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে পরিবেশ ও বন নিয়ন্ত্রণ কমিটি গাছ কাটার অনুমতি প্রদান করতে হবে। তারপর গাছ গুলো বিক্রয়ের নিলামের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে।
কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসএফএনটিসির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান-২ জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগের নিজস্ব অফিসে গাছ লাগালেও স্থাপনাটি সরকারি। যে কোন সরকারি স্থাপনা থেকে গাছ কাটতে নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। সকল সরকারি অফিসে একই নিয়ম। কিন্তু তাদের অফিস থেকে আমাদের কাছে কোন প্রকার আবেদন করেনি। এটা জেলা পরিবেশ ও বন নিয়ন্ত্রণ কমিটির বিষয়, ঢাকা থেকে গাছ কাটার অনুমতি আনার সুযোগ নেই।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357